মির্জাগঞ্জ (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি: দেশের বিভিন্ন জায়গায় সনাতন ধর্মালম্বীদের মন্দিরে হামলার খবর ছড়িয়ে পড়লে পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মী, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্ররা ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ উপজেলা শাখার নেতাকর্মীরা বিভিন্ন মন্দিরে অবস্থান নিয়ে পাহারা দিচ্ছেন। উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্রদের সমন্বয়ে প্রতিটি ইউনিয়নে কমিটি করে দ্বায়িত্ব দিয়েছেন এবং উপজেলার বিভিন্ন মন্দিরের সামনে বসে পাহারার ব্যবস্থা করেন ও হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের সাথে কথা বলেন।
এদিকে বৃহস্পতিবার থেকে উপজেলার মির্জাগঞ্জ ইউনিয়নে বাংলাদেশ সেবাশ্রমে ৭দিন ব্যাপী শুরু হচ্ছে শ্রী শ্রী কৃষ্ণের ঝুলন যাত্রা উৎসব। এ মন্দিরে গতকাল সকাল থেকে পাহারায় রয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ উপজেলা শাখার নেতাকর্মীরা। এসময় এখানে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ উপজেলা শাখার সেক্রেটারি আলহাজ্ব আঃ ওয়াদুদ গোলদার, ছাত্র আন্দোলনের উপজেলা শাখার সভাপতি মোঃ আমিনুল ইসলাম ও ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সভাপতি মোঃ ইমন মাঝী।
সেক্রেটারি আলহাজ্ব আঃ ওয়াদুদ গোলদার বলেন, বাংলাদেশ সেবাশ্রম মন্দিরে বহু বছর ধরে এখানে ৭দিন ব্যাপী অনুষ্ঠান চলে আসছে। চলমান পরিস্থতির কারনে ইসলামী আন্দোলনের নেতার্কীরা পাহারায় রয়েছেন। যাতে হিন্দু সম্প্রদায়ের এ অনুষ্ঠানে কেউ বিঘ্ন ঘটনাতে না পারে। আমাদের নেতাকর্মীরা উপজেলার বিভিন্ন মন্দির পাহারায় থাকবে।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উপজেলা সমন্বয়কারী গোলাম রাব্বানী বলেন, দেশের বিভিন্ন মন্দিরে হামলার খবরের পরে উপজেলার হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির কমিটির সাথে আলোচনা করা হয়েছে। বুধবার রাত থেকে উপজেলার বিভিন্ন মন্দিরগুলো পাহারার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এই উপজেলা শহরের সকল ধর্মের মানুষ মিলেমিশে থাকি। হিন্দুরাও আমাদের ভাই-বোন। তাই তাদের নিরাপত্তা ও তাদেরকে অভয় দিতে মন্দিরের সামনে আমরা অবস্থান নিয়েছি।
উপজেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব মোঃ শাহাবুদ্দিন নান্নু বলেন, উপজেলা বিএনপি নেতাকর্মীদের কমিটি করে মন্দিরগুলো পাহারার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ইসলাম কখনও অন্য ধর্মের উপাসনালয়ে ক্ষতি করার কথা বলেনি। ইসলাম হলো শান্তির ধর্ম। উপশনালয়ে ক্ষতির সমর্থনও করে না। প্রত্যক ধর্মের ধর্মীয় স্বাধীনতা আছে। এটি হরণ করার অধিকার কারও নেই।
উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারন সম্পাদক বাবু নূপুর সাহা বলেন, গত ৫ জুলাই মির্জাগঞ্জের আমড়াগাছিয়া ইউনিয়নে বটতলা শ্রী শ্রী দুর্গা মন্দিরের দুবৃত্তের আগুনে ভস্মিভূত হয়েছে। তবে এটা ছাড়া আর কোনো মন্দিরে বা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ওপর এখন পর্যন্ত হামলার খবর পাওয়া যায়নি। বিভিন্ন মন্দিরের সামনে মুসলিম সম্প্রদায়ের ভাইয়েরা পাহারায় আছেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ তরিকুল ইসলাম বলেন, এখন পর্যন্ত মির্জাগঞ্জের কোথাও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। তবে কেউ গুজব রটাবেন না। রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছাত্ররা হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির ও গুরুত্বপূর্ন স্থাপনা পাহারার ব্যবস্থা করেছেন এবং এর পাশাপাশি আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যরাও রয়েছেন।