গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি: হাজার হাজার মানুষের শ্রদ্ধা আর ভালবাসায় গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী বার্ষিকী পালিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই গোপালগঞ্জসহ আশপাশের জেলা থেকে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনে নেতা-কর্মীরা শোক মিছিল নিয়ে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে আসতে থাকেন। পরে তারা জাতির জনকের সমাধি সৌধের বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে বঙ্গবন্ধুর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। গোপালগঞ্জের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে জেলার সর্বস্তরের মানুষ জাতির জনকের মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
সকাল ১১ টায় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের পক্ষে গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান। পরে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহাবুব আলী খান ও সাধারণ সম্পাদক জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়।
এরপর টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ, কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ, কাশিয়ানী উপজেলা আওয়ামী লীগ, মুকসুদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ, জেলা যুবলীগ, উপজেলা যুবলীগ, জেলা ছাত্রলীগ, উপজেলা ছাত্রলীগ, জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, শ্রমিকলীগসহ অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে জাতির পিতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। এছাড়া গোপালগঞ্জের পার্শ্ববর্তী জেলা বাগেরহাট, নড়াইল, পিরোজপুর ও মাদারীপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলার আওয়ামী লীগ সহ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী ও সাধারন মানুষ বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
দীর্ঘ ১৫ বছর পর এবারই রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ব্যতিত টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুবার্ষিকীর বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। এর আগে প্রতিটি মৃত্যুবার্ষিকীতে সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে পালিত হয়েছে নানা কর্মসূচি। কোন নিরাপত্তা বেষ্টনী না থাকায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে মানুষের ঢল নামে। বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাতে আসা নেতাকর্মী ও সাধারন মানুষ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার দাবী জানান এবং তাঁর প্রতি দায়ের করা মিথ্যা মামলার প্রতিবাদ জানান।
পরে বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধের মসজিদ কমপ্লেক্সে জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে শোকসভা অনুষ্ঠিত হয়। শোকসভায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহাবুব আলী খান, সাধারন সম্পাদক জিএম সাহাব উদ্দিন আজম, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মোঃ বাবুল শেখ, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক শেখ সাইফুল ইসলাম বক্তব্য রাখেন। আলোচনা সভা শেষে মিলাদ মাহফিলে অংশ নেন আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা।
শোকসভায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক জি.এম আজম বলেন, গত ৫ আগষ্ট আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিসহ যারা গণভবন ও ঢাকায় ছিলেন তাদেরকে সেনাক্যাম্পে নেয়া হয়। আপনারা দেখেছেন সালমান এফ রহমান ও সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে সদরঘাট থেকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। সেনাক্যাম্পের অফিসার্স ম্যাসে যাদেরকে নিরাপত্তা হেফাজতে রাখা হয়েছিলো তারা কোন পথে কিভাবে ওইখানে গেলেন।
তিনি আরো বলেন, সারা দেশে হত্যা আর নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমাদের অর্জিত স্বাধীনতা আজ ভূলুণ্ঠিত। তাই আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে। এরজন্য সবাইকে প্রস্তুত থাকতে হবে।
এরআগে, সকাল সাড়ে ৭ টায় জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে দলীয় ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।
অন্যদিকে, বঙ্গবন্ধুর শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষ্যে ব্যবসায়ীরা গোপালগঞ্জের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছেন। একই সাথে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কালো পতাকা উড়িয়েছেন।