উত্তম গোলদার, মির্জাগঞ্জ (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি: বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী হৃদয় চন্দ্র তরুয়ার স্মরণে পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে শোকসভা অনুষ্ঠিত ও তার পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।
শুক্রবার সকাল দশটায় "মির্জাগঞ্জ উপজেলার সর্বস্তরের জনসাধারণ" এর ব্যানারে নান্নু শপিং কমপ্লেক্সের তৃতীয় তলায় এ শোক সভার আয়োজন করা হয়। তাঁর নিজ গ্রামের বাড়ি মির্জাগঞ্জ উপজেলার আন্দুয়া গ্রামে। পটুয়াখালীর মুনসেফ পাড়া এলাকায় ভাড়া বাড়িতে থাকত নিহত হৃদয়ের পিতা-মাতা। তার পিতা একজন পেশায় কাঠ মিস্ত্রী।
উপজেলা বিএনপির সহ-সম্পাদক মোঃ হারুন মুন্সীর সঞ্চালনায় উপজেলা বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব মোঃ শাহাবুদ্দিন নান্নু মুন্সীর সভাপতিত্বে শোকসভায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মোঃ আহসান উল্লাহ পিন্টু সিকদার, মোঃ ফারুক হোসেন মুন্সী, মোঃ আইয়ুব আলী খান, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মির্জাগঞ্জ উপজেলা শাখার সহ-সমন্বয়ক সাইফুল ইসলাম সিয়াম, শোকসভার আয়োজক মোঃ অপু হোসাইন, নিহত হৃদয় চন্দ্র তারুয়ার দিনমজুর (কাঠমিস্ত্রী) পিতা রতন চন্দ্র তাড়ুয়া ও মাতা অর্চনা রানী প্রমূখ।
নিহত ছাত্রের পিতা রতন চন্দ্র তরুয়া বলেন, আমার ছেলে আর ফিরে আসবে না, আর বাবা বলে ডাকবে না। আমার ছেলে একজন মেধাবী ছাত্র ছিলো। পটুয়াখালীতে অনেক কষ্ট করে ভালো সরকারি স্কুলে পড়িয়েছি। ভালো রেজাল্ট করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পায়। পরে খরচ চালাতে না পেরে হৃদয় টিউশনি করে নিজের খরচ চালিয়েছে। আমাদের গ্রামের বাড়ি কোন জমিজমাও নেই। পুত্রই ছিলো একমাত্র আশাভরসা তাও চলে গেছে। আপনারা আমার ছেলের জন্য আর্শিবাদ করবেন যেন সে ভালো থাকতে পারে।
সভায় বক্তারা আন্দোলনে নিহত হৃদয় চন্দ্র তরুয়ার পরিবারের পাশে থেকে সার্বিক সহোযোগিতার আশ্বাস দেন। নিহত হৃদয় চন্দ্র তারুয়ার নামে প্রশাসনের কাছে যে কোন একটি প্রতিষ্ঠান বা সড়কের নামকরনের দাবী এবং বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নিকট তার পরিবারের যোগ্য ব্যক্তিকে সরকারী চাকুরী প্রদানের দাবী জানান। সভা শেষে নিহত হৃদয় চন্দ্র তরুয়ার পিতা-মাতার হাতে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়।
উল্লেখ্য, নিহত হৃদয় চন্দ্র তরুয়া ১৮ জুলাই বিকেল ৩টার দিকে টিউশনি শেষে বাসায় ফেরার পথে চট্টগ্রামে বহাদ্দার হাট এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন। পাঁচদিন পর ২৩ জুলাই মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৫ টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।