সাইফুল ইসলাম সুমন, জুড়ী (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের জুড়ীতে বৈষম্য বিরোধী শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে তোপের মুখে পদত্যাগ করলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কিশোর রায় চৌধুরী মনি।
বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) রাতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে তিনি পদত্যাগ করেন। এসময় সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা, ইউএনও, এসিল্যান্ড, ওসি, গণমাধ্যমকর্মী ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
জানা যায়, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের উপর হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে গত দুই দিন ধরে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কিশোর রায় চৌধুরী মনি ও ভাইস চেয়ারম্যান জুয়েল রানার পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিলসহ অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। বুধবার ও বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী উপজেলা কমপ্লেক্সে শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিয়ে এ কর্মসূচি পালন করেন। পরে বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলা চেয়ারম্যান ব্যক্তিগত কাজে ভবানীগঞ্জ বাজারে আসলে সেখান থেকে ছাত্র জনতা তাকে নিরাপত্তা বলয় সৃষ্টি করে উপজেলা পরিষদে নিয়ে আসে। পরে ইউএনও'র কার্যালয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে তিনি পদত্যাগ করেন।
লিখিত পদত্যাগ পত্রে কিশোর রায় চৌধুরী মনি বলেন, আমি কিশোর রায় চৌধুরী মনি। চেয়ারম্যান জুড়ী উপজেলা পরিষদ। আজ ১৫/০৮/২০২৪ ইং পদত্যাগ করলাম। ১৮/০৮/২০২৪ ইং অফিসিয়ালভাবে (আনুষ্ঠানিকভাবে) পদত্যাগ সম্পন্ন করব।
এ সময় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থী আফজাল হোসেন, আব্দুল্লাহ আল মাহি ও মাহতাব ভূঁইয়া স্পন্দন ও তারেক রহমান বলেন, ছাত্র আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। জুড়ীতে আমাদের আন্দোলনের সময় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কিশোর রায় চৌধুরী মনি ও ভাইস চেয়ারম্যান জুয়েল রানা ছাত্র বিরোধী মিছিল ও কার্যক্রমে অংশ নেয়ায় আমরা এ দুই জন জনপ্রতিনিধির পদত্যাগ চেয়েছিলাম। আমাদের দাবির মুখে উপজেলা চেয়ারম্যান পদত্যাগ করেছেন। উপজেলা ভাইস-চেয়ারম্যান সহ যেসকল জনপ্রতিনিধি ছাত্র বিরোধী মিছিলে ছিলেন তাদের সকলের পদত্যাগ দাবি করছি। তাঁরা পদত্যাগ না করলে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে জুড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বাবলু সূত্রধর বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানকে নিয়ে আমার কার্যালয়ে আসেন। এসময় সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও জুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উপস্থিত ছিলেন। শিক্ষার্থীদের বক্তব্য ছিল উপজেলা চেয়ারম্যান পদত্যাগপত্র দেবেন। শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে উপজেলা চেয়ারম্যান লিখিতভাবে পদত্যাগ পত্র জমা দিয়েছেন। লিখিত বক্তব্য অনুযায়ী তিনি বৃহস্পতিবার পদত্যাগ করেছেন।
এসময় কিশোর রায় চৌধুরী মনি গণমাধ্যমকে পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আমি আমার বক্তব্য লিখিতভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও ছাত্র সমন্বয়কদের কাছে উপস্থাপন করে দিয়েছি।