মহিউদ্দিন সাগর, চট্টগ্রাম নগর প্রতিনিধি: চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে নিরীহ সাংবাদিকদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা ও নারী সাংবাদিককে শ্লীলতাহানির ঘটনায় ৩৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার নগরীর কোতোয়ালী থানায় মামলাটি দায়ের করেন বৈষম্য বিরোধী সাংবাদিক ঐক্যের সদস্য ও জাতীয় দৈনিক নতুন সময়ের সাংবাদিক ইসমাইল ইমন। মামলা নং ৬/২৪, মামলায় ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ২০ জনকে আসামি করা হয়।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে অবৈধ সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সদস্য ও নামধারী সাংবাদিক হয়, সাংবাদিকতার সাইনবোর্ড ব্যবহার করে চাঁদাবাজি সন্ত্রাসী কার্যক্রম করা আসামীদের নেশা ও পেশা এবং বিগত দিনে ছাত্র আন্দোলনে গণহত্যার উস্কানি দাতা চিহ্নিত ফ্যাসিবাদের দোসর। ২০১৩ সালে দৈনিক আমার দেশ, দিগন্ত টিভি, নয়া দিগন্ত, দৈনিক সংগ্রাম ও দৈনিক কর্ণফুলীতে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও ভাংচুরে নেতৃত্ব দানকারী।
কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এস এম ওবায়দুল হক জানান, বৈষম্য বিরোধী সাংবাদিক ঐক্য ও চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের নব গঠিত আহবায়ক কমিটির নেতৃবৃন্দের পক্ষ থেকে একটা মামলা দায়ের হয়েছে। বিষয়টা তদন্ত করে আসামিদের আইনের আওতায় আনা হবে।
আসামীরা হলেন- সালাউদ্দিন মোঃ রেজা (৫৬), দেব দুলাল ভৌমিক (৫০), চৌধূরী ফরিদ প্রকাশ সি আই ফরিদ (৫২), মোহাম্মদ আলী, রাশেদ মাহমুদ (৪৮), শহীদুল্লাহ শাহরিয়ার (৪২), নির্মল দাশ (৫৮), খোরশেদ আলম শামীম (৪৫), আজাহার মাহমুদ (৩৫), নাসির উদ্দিন হায়দার (৪০), শহীদুল সুমন (৩৫), মাসুদুল হক (৩৫), আল রহমান (৪১), তপন চক্রবর্তী (৫০), মোয়াজ্জেমুল হক, জসিম চৌধুরী সবুজ (৬৩), হেলাল সিকদার (৩৮), কুতুব উদ্দিন (৪৯), মু. শামসুল ইসলাম (৫২) এবং অজ্ঞাতনামা ১৫/২০জন সন্ত্রাসী প্রকৃতির আসামী।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়, বিগত ১৪ আগস্ট বুধবার বিকেল ৩টার সময় বৈষম্য বিরোধী সাংবাদিক ঐক্যের ডাকে প্রেসক্লাবের অবৈধ কমিটির সদস্যদের আজীবন বহিস্কারের দাবীতে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সামনে সাংবাদিকদের মানববন্ধন কর্মসূচী পালন বিকেল ৪টার দিকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন (সিএমইউজে) সভাপতি মোহাম্মদ শাহ নেওয়াজের সভাপতিত্বে শুরু হয়। উক্ত সভায় বিভিন্ন পেশার প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। মানববন্ধন চলাকালীন সময় বিএসপিপি'র চট্টগ্রামের আহবায়ক জাহিদুল করিম কচি'র বক্তব্যের এক পর্যায়ে আসামীগণ চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব থেকে এলোপাথাড়ি ইট পাটকেল ছুড়তে থাকে। ইটের আঘাতে বাদি ইসমাইল ইমন সহ অনেক সাংবাদিক গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হয়।পরবর্তীতে ১নং আসামীর নেতৃত্বে এজাহারনামীয় ২-১৫ নং আসামী সহ অজ্ঞাতনামা ১৫/২০ জন সন্ত্রাসী শান্তিপূর্ণ মানববন্ধনে সাংবাদিকসহ উপস্থিত জনতার উপর বৃষ্টির মত ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে।
১নং আসামীর নেতৃত্বে অপর এজাহারনামীয় ২-৯ নং আসামী লোহার রড দিয়ে বাদী সহ ভিক্টিম সাংবাদিক আরিয়ান লেনিন, মোঃ রায়হান ইসলাম, ইফতেখারুল করিম চৌধূরী, সাদ্দাম হোসেন, রাশেদুল ইসলাম, মোঃ নিজাম, এম এ হান্নান রহিম, মো; ইকবাল হাসান, মাহমুদুর রহমান, মোঃ ফারুক আহমেদ সহ সবাইকে বেধড়ক পিটিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলা ফুলা জখম করেন।
পরবর্তীতে ১,৯,১২,১৩,১৪ থেকে ১৯ নং আসামী বাদী ইসমাইল ইমন, মোঃ রায়হান ইসলাম নামীয় সাংবাদিকদের পিটিয়ে মাটিতে ফেলে দেয় এবং হত্যার উদ্দ্যেশ্যে লোহার রড দিয়ে মাথায় আঘাত করলে ইসমাইল ইমন এবং রায়হান ইসলামের মাথায় রক্তাক্ত নীলা ফুলা জখম হয়। একপর্যায়ে এজাহারনামীয় ১২ ও ১৩ নং আসামী বাদী ইসমাইল ইমনের পকেট থেকে আট হাজার টাকা চুরি করে নিয়ে যায়। এজাহারনামীয় ৭,১০,১১ ও ১২নং আসামীগণ ভিকটিম নারী সাংবাদিক রেবেকা সুলতানা রেখা চৌধূরী কাপড় টেনে ছিড়ে ফেলে এবং শরীরের স্পর্শকাতর বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে শ্লীলতাহানি করে। আসামীগণ বিভিন্ন ভাবে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দকে বিভিন্ন মাধ্যমে হুমকি প্রদান করিতেছে।পরবর্তীতে উপরিল্লিখিত সাক্ষীগণ উপস্থিত হয়ে আহত ভিক্টিমদের নিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে নিয়ে চিকিৎসা গ্রহণ করে৷