ঢাকা
১৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সকাল ৮:১২
logo
প্রকাশিত : আগস্ট ১৯, ২০২৪
আপডেট: আগস্ট ১৯, ২০২৪
প্রকাশিত : আগস্ট ১৯, ২০২৪

বরগুনার আমতলীতে নয় বছরে একজন মুক্তিযোদ্ধা!

আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি: আট বছর ১১ মাস ২৫ দিনে মোঃ তোফাজ্জেল হোসেনের বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার গেজেট নং ৪৭০। অভিযোগ রয়েছে তিনি জালিয়াতির মাধ্যমে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সেজে গত ১৫ বছর ধরে সরকারী কোষাগার থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এমন অভিযোগ করেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা এটিএম রফিকুল ইসলাম। তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানিয়েছেন তিনি।

জানা গেছে, আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের কালিবাড়ি গ্রামের মোঃ আয়নুদ্দিন কাজীর ছেলে মোঃ তোফাজ্জেল হোসেন। তিনি ১৯৭৮ সালে চুনাখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। এসএসসি পাশের সনদ অনুসারে তার জন্ম ১৯৬২ সালের দুই এপ্রিল। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তার বয়স আট বছর ১১ মাস ২৫ দিন। তখন তিনি প্রাইমারী স্কুলের ছাত্র। অভিযোগ রয়েছে তোফাজ্জেল হোসেন তার শ্যালক (স্ত্রীর ভাই) সাবেক আমতলী মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার একেএম সামসুদ্দিন শানুর মাধ্যমে অষ্টম শ্রেনী পাশ দেখিয়ে জালিয়াতি করে তাকে মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় গেজেটভুক্ত করেন। তার গেজেট নং-৪৭০। ওই গেজেট অনুসারে তিনি ২০০৯ সালে মুক্তিযোদ্ধা ভাতাপ্রাপ্ত হন। গত ১৫ বছর তিনি অবৈধভাবে সরকারী কোষাগার থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

আরো অভিযোগ রয়েছে তোফাজ্জেল হোসেন তার এসএসসি পরীক্ষার সনদ দেখিয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। ওই চাকুরী থেকে তিনি ২০০৫ সালে অবসর যান। অবসরের পরে তিনি মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা এটিএম রফিকুল ইসলাম আরো অভিযোগ করেন এসএসসি পরীক্ষা পাশ থাকা সত্ত্বেও তিনি কিভাবে অষ্টম শ্রেনী পাশ দেখিয়ে মুক্তিযোদ্ধা হয়েছেন? তোফাজ্জেল হোসেনের শ্যালক একেএম সামসুদ্দিন শানু ২০০৫ সালে আমতলী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হন। ওই সময় তিনি প্রভাব খাটিয়ে তার শ্যালককে জালিয়াতির মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছেন। আরো অভিযোগ রয়েছে ক্যাপ্টন মেহেদী হাসানের স্বাক্ষর জাল করে তোফাজ্জেল ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ তৈরি করেছেন।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, মোঃ তোফাজ্জেল হোসেন ১৯৭৮ সালে আমতলী উপজেলার চুনাখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় তৃতীয় বিভাগে কৃতকার্য হন। তার এসএসসি পরীক্ষা পাশের রোল নং-১১৩, নিবন্ধন নং-২৩৪৩৫ ও শিক্ষাবর্ষ ১৯৭৬-৭৭। তার জন্ম তারিখ-১৯৬২-০৪-০২।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, ১৯৭১ সালে মোঃ আয়নুদ্দিন কাজীর ছেলে মোঃ তোফাজ্জেল হোসেন প্রাইমারী স্কুলে লেখাপড়া করতেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ছিলেন শিশু। সেনাবাহিনীর চাকুরী থেকে অবসরে আসার কিছুদিন পর শুনতে পাই তিনি মুক্তিযোদ্ধা হয়েছেন। কিভাবে মুক্তিযোদ্ধা হয়েছেন তা আমাদের বুঝে আসে না। এ বিষয়টি তদন্ত করলেই আসল রহস্য বেড়িয়ে আসবে।

মোঃ তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, আমি চুনাখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করিনি এবং সেনাবাহিনীতে চাকুরী করি নাই। আমি অষ্টম শ্রেনী পাশের সনদ দিয়ে মুক্তিযোদ্ধা হয়েছি। তবে কিভাবে আপনি সেনাবাহিনীর অবসরভাতা তুলছেন এমন প্রশ্নের জবাব তিনি এড়িয়ে যান।

আমতলী উপজেলা সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার একেএম সামসুদ্দিন শানু বলেন, তোফাজ্জেল আমার ভগ্নিপতি। যারা যাচাই বাছাই করেছেন তারা বলতে পারবেন কিভাবে তোফাজ্জেল মুক্তিযোদ্ধা হয়েছেন? তবে আপনিও তো তার পক্ষে প্রত্যায়ন দিয়েছেন তা দিলেন কিভাবে এমন প্রশ্নের জবাব তিনি এড়িয়ে যান। তিনি আরো বলেন, আমার ভগ্নিপতি সেনাবাহিনীর চাকুরী শেষে অবসর নিয়েছেন।

চুনাখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মাহবুব উল আলম বলেন, মোঃ আয়নদ্দিন কাজীর ছেলে তোফাজ্জেল হোসেন ১৯৭৮ সালে এ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে তৃতীয় বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছেন। তার জন্ম তারিখ ১৯৬২ সালের ০২ এপ্রিল।

আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সর্বশেষ
logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2024 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram