মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি: মানিকগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসার সেলিনা ছাইয়েদা সুলতানা আক্তার সেলিনার পদত্যাগের দাবীতে বিক্ষোভ করেছে শিল্পকলার সাংস্কৃতিক কর্মীরা।
শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে শহরের বেউথা এলাকায় জেলা শিল্পকলা একাডেমির গেটের সামনে তারা বিক্ষোভ করে। এসময় তারা সেলিনার পদত্যাগ দাবী করেন।
বিক্ষোভকারীরা জানান, ২০১৭ সাল থেকে মানিকগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমির কোনো কমিটি নেই। তৎকালীন এক বছরের মধ্যে নতুন কমিটি গঠনের আগ পর্যন্ত জেলা প্রশাসককে আহবায়ক করে, জেলা কালচারাল অফিসার সদস্য সচিব ও অপর তিনজন সদস্যসহ ৫ সদস্যের আহবায়ক (এডহক) কমিটি গঠন করা হয়। এর মধ্যে আতিয়া খানম সুরমা নামে একজন সদস্য মারা যান।
তারা আরো জানান, নিয়ম অনুযায়ী নতুন কমিটি না হওয়া পর্যন্ত এডহক কমিটির সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে শিল্পকলা একাডেমি পরিচালিত হবে। কিন্তু কালচারাল অফিসার এডহক কমিটির সদস্যদের না জানিয়ে নিজেই একক সিদ্ধান্তে শিল্পকলা একাডেমি পরিচালনা করছেন। আর এই সুযোগে বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালার বাজেটের টাকা সঠিক নিয়মে খরচ না করে ভুয়া বিল-ভাউচার দেখিয়ে আত্মসাৎ করছেন। এছাড়া প্রতি বছর ধরে ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের শাহাদৎ বার্ষিকী পালনে ৬৪টি জেলার মত মানিকগঞ্জেও অনুদান আসে ১ লাখ টাকা। কিন্তু শোক দিবসের কোনো অনুষ্ঠান না করেই পুরো টাকা মেরে দিয়েছেন কালচারাল অফিসার।
একইভাবে জেলার ঘিওর উপজেলার তেরশ্রীতে গণহত্যার ওপর নাটকের বাজেট বরাদ্দ, শিল্পকলায় শিক্ষার্থী ভর্তির টাকা, স্বাধীনতার সুবর্নজয়ন্তী অনুষ্ঠানমালার খরচ, বঙ্গবন্ধুর ওপর লেখা গানের শিল্পী সম্মানি, প্রতি বছরে ৫জন গুনী শিল্পী সম্মাননার বরাদ্দসহ বিভিন্ন জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানমালার বাজেট বরাদ্দের টাকা ভুয়া বিল ভাউচার দেখিয়ে সরিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে তার বিরেুদ্ধে।
এসব নানান অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে অনতিবিলম্বে জেলা কালচারাল অফিসারের পদত্যাগ ও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান আন্দোলনকারী শিল্প কলা একাডেমির শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীরা আরও অভিযোগ করেন, তাদের বিক্ষোভ কর্মসূচী চলাকালে আন্দোলন বানচাল করতে কালচারাল অফিসারসহ শিল্পকলার একাধিক প্রশিক্ষকরা তাদের টেলিফোনে হুমকি দিয়ে চলে যেতে বলেছেন। তা নাহলে পরে তাদের পস্তাতে হবে বলেও হুমকি দেন বলে জানান শিক্ষার্থীরা।
এদিকে, প্রতি শুক্রবার শিল্পকলা একাডেমির নিয়মিত ক্লাস চললেও তার বিরুদ্ধে সংস্কৃতিকর্মীদের আন্দোলনের খবর আগাম জানতে পেরে হঠাৎই ক্লাব বন্ধ ঘোষনা করেছেন কালচারাল অফিসার। এতে প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে দেয়া হয়েছে। এতে নাচ, গান, আবৃত্তি সহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা মুল ফটকে এসে ফিরে যান।
এসব বিষয়ে বক্তব্যের জন্য কালচারাল অফিসার সেলিনা ছাইয়েদা সুলতানা আক্তার সেলিনার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।