ঢাকা
২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
রাত ১:৩৪
logo
প্রকাশিত : আগস্ট ২৪, ২০২৪
আপডেট: আগস্ট ২৪, ২০২৪
প্রকাশিত : আগস্ট ২৪, ২০২৪

নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়ে দুর্ভোগে বানভাসিরা

স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় দেশের ১১টি জেলার ৭৭ উপজেলার ৯ লাখ ৪৬ হাজার ৭৬৯ জন মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ৪৮ লাখ ৬৯ হাজার ২৯৯ জন। আর আকস্মিক এই বন্যায় গত চার দিনে দুই নারীসহ ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. কামরুল হাসান গতকাল শুক্রবার মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সংবাদ ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান। পরে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকেও এ সংক্রান্ত একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানায়, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলো হলো—ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, লক্ষ্মীপুর ও কক্সবাজার। বন্যায় দেশের ৭৭টি উপজেলা ও ৫৮৯টি ইউনিয়ন-পৌরসভা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যায় নিহতদের মধ্যে কুমিল্লায় চার, ফেনীতে এক, চট্টগ্রামে চার, নোয়াখালীতে এক, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এক, লক্ষ্মীপুরে এক ও কক্সবাজারে তিন জন রয়েছেন।

ত্রাণ মন্ত্রণালয় জানায়, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের উদ্ধার ও তাদের মধ্যে পর্যাপ্ত ত্রাণসামগ্রী বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পানিবন্দি ও ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের আশ্রয় প্রদানের জন্য মোট ৩ হাজার ১৬০টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে ১ লাখ ৮৮ হাজার ৭৩৯ জন লোক ও ১৭ হাজার ৮৪৮টি গবাদি পশুকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ১১ জেলার ক্ষতিগ্রস্তদের চিকিত্সাসেবা প্রদানের জন্য ৬৩৭টি মেডিক্যাল টিম কাজ করছে।

ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরুল হাসান সংবাদ ব্রিফিংয়ে আরো জানান, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে বিতরণের জন্য বিভিন্ন জেলায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় ৩ কোটি ৫২ লাখ নগদ টাকা, ২০ হাজার ১৫০ মেট্রিক টন চাল এবং ১৫ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার বরাদ্দ দিয়েছে। বন্যা আক্রান্ত জেলাসমূহের জেলা প্রশাসকদের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, মেডিক্যাল টিম ও অন্য স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে সার্বক্ষণিক কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। তথ্য ও সহযোগিতার জন্য ০২৫৫১০১১১৫ নম্বর চালু রয়েছে।

চট্টগ্রামে বন্যায় চার জনের মৃত্যু: চট্টগ্রাম অফিস জানায়, জেলায় বন্যায় চার জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে প্রশাসন। মৃতদের মধ্যে ফটিকছড়ি উপজেলায় দুই জন, হাটহাজারীতে একজন এবং রাঙ্গুনিয়ায় একজন রয়েছেন। এর মধ্যে হাটহাজারীতে বন্যার পানিতে বিদ্যুত্স্পৃষ্টে একজনের মৃত্যু হলেও বাকিদের মৃত্যু হয়েছে পানিতে ডুবে। চট্টগ্রাম জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ মজুমদার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, চট্টগ্রামের ১০ উপজেলায় ২ লাখ ৬২ হাজার ৪০০ জন মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। ফটিকছড়ি উপজেলার নাজিরহাট নতুন ব্রিজ এলাকায় হালদার তীর রক্ষা বাঁধ ভেঙে গেছে। ভেঙে যাওয়া বাঁধের অংশ দিয়ে লোকালয়ে ঢুকেছে পানি। এতে হাটহাজারী উপজেলার ফরহাদাবাদ ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এছাড়া ফটিকছড়ি উপজেলা ও সংলগ্ন এলাকায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন ১ লাখ মানুষ। টানা বর্ষণে চট্টগ্রামের শস্যভান্ডার হিসেবে খ্যাত গুমাই বিলে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর জমির রোপা আমন ধানের চারা পানিতে ডুবে গেছে। এক সপ্তাহের মধ্যে পানি না নামলে আমন চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

রামুতে তিন মরদেহ উদ্ধার: রামু (কক্সবাজার) সংবাদদাতা জানান, কক্সবাজারের রামুতে পানির স্রোতে নদীতে নিখোঁজ চার জনের মধ্যে তিন যুবকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। গর্জনিয়া ইউনিয়নের জুমছড়ি গ্রামের আমজাদ হোসেন (২২) ও ঈদগড় ইউনিয়নে নদীতে ভেসে যাওয়া সাচিং মারমার (৩০) লাশ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উদ্ধার করা হয়। আবার শুক্রবার সকালে রবিউল আলমের (৩৫) মরদেহ পাওযা যায় মাঝিরকাটা এলাকায়। তবে এ পর্যন্ত সন্ধান পাওয়া যায়নি ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের লম্বরীপাড়া এলাকার নুরুল কবিরের ছেলে শিশু রাজ উদ্দিন জুনাঈদের (১০) । তিন জনের মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রামু উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. রাশেদুল ইসলাম।

মৌলভীবাজারের বাঁধে ভাঙন: মৌলভীবাজার প্রতিনিধি জানান, জেলার মনু ও ধলাই নদীর ১৩টি স্থানে বাঁধ ভেঙে বন্যার পানি প্রবেশ করছে। পৃথকভাবে মনু প্রকল্পের দুটি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এ পর্যন্ত জেলার প্রায় তিন শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। প্রায় চার লক্ষাধিক লোক পানিবন্দি অবস্থায় আছে। অনেকেই বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র, আত্মীয়স্বজনদের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। সরকারিভাবে জেলার ৭ উপজেলায় ২৩৫ মেট্রিক টন চাল ও ১২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জাবেদ ইকবাল জানান, শুক্রবার বেলা ৩টায় মৌলভীবাজার শহরের কাছে মনু নদের পানি চাঁদনীঘাট পয়েন্টে বিপত্সীমার ১১১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে, কুশিয়ারা নদীর পানি ১১ সেন্টিমিটার ও জুড়ী নদীর পানি বিপত্সীমার ১৯৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

গোমতীর বাঁধ ভেঙে গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত: কুমিল্লা প্রতিনিধি জানান, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে জেলার বুড়িচং উপজেলার ষোলনল ইউনিয়নের বুরবুরিয়া এলাকায় গোমতী নদীর বাঁধ ভেঙে উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের বাসিন্দা পানিবন্দি হয়ে পড়েন। শুক্রবার পর্যন্ত বাঁধের ভাঙন সম্প্রসারিত হয়ে প্রায় ২০০ ফুটেরও অধিক ছাড়িয়ে গেছে বলে জানা গেছে। বাঁধভাঙা পানির তীব্র স্রোতে বুরবুরিয়া, খাড়াতাইয়া, নানুয়ার বাজারসহ আশপাশের বিভিন্ন গ্রামের বাড়িঘর পানিতে তলিয়ে যায়। দুর্গত এলাকার অনেক পরিবার গোমতীর বাঁধের বিভিন্ন স্থানে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান নেয়। তবে বাঁধ ভাঙার মধ্য দিয়ে ধীরগতিতে কমতে শুরু করেছে গোমতীর পানি।

মিরসরাইয়ে প্লাবিত নতুন নতুন এলাকা: মিরসরাই (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতা জানান, চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে হালদা নদীর বাঁধ ভেঙে যাওয়ার পর পানির তীব্রতা আরো বাড়ে। এখানে এখানো কার্যত পানিবন্দি হয়ে আছেন লাখো মানুষ। শুক্রবার দুপুরের পর থেকে নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে জোরারগঞ্জ, ইছাখালী, কাটাছরা, মিঠানালা ও মঘাদিয়া ইউনিয়ন। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে দেখা দিয়েছে তীব্র খাবার সংকট। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে বিভিন্ন এলাকার বিদ্যুত্ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক না থাকায় উদ্ধারকাজে বিঘ্ন ঘটছে।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ৪০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে যানজট: ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ৪০ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে তীব্র যানজট দেখা দিয়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন এ সড়কে যাতায়াত করা যাত্রী ও চালকরা। জানা গেছে, ফেনীর মুহুরীগঞ্জ থেকে কুমিল্লা পর্যন্ত মহাসড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। শুক্রবার সন্ধ্যার সময় মিরসরাইয়ের জামালের দোকান এলাকায় ঢাকামুখী লেনে যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। সরেজমিনে দেখা গেছে, মহাসড়কের ঢাকামুখী লেনের মিরসরাই সদর থেকে ফেনী পর্যন্ত হাজার হাজার গাড়ি আটকা রয়েছে। উলটোপথে ত্রাণবাহী গাড়ি যাওয়ার জন্য সহযোগিতা করা হচ্ছে। আবার অনেক গাড়ি যানজটে আটকা রয়েছে। ট্রাকচালক আরিয়ান রাব্বি বলেন, ‘প্রায় ১৫ ঘণ্টা সড়কে আটকা রয়েছি। হোটেল বন্ধ থাকায় কোনো খাবার পাচ্ছি না। কখন ঢাকায় পৌঁছাব বুঝতেছি না।’ জোরারগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সোহেল সরকার জানান, সড়কে পানির কারণে গাড়ি চলাচল বন্ধ রয়েছে। পানি নেমে গেলে যানজট নিরসন হয়ে যাবে।

খুলনায় বাঁধে ভাঙন, পানি ও খাবারের সংকট: খুলনা অফিস জানায়, ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধ মেরামত করলেও ভদ্রা নদীর জোয়ারের পানির তোড়ে আবারও ভেঙে গেছে। গতকাল শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে পাইকগাছা উপজেলার দেলুটি ইউনিয়নের কালিনগর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। এর আগে এলাকার শত শত মানুষ বাঁশ, চাটাই, বস্তা, বালুসহ বিভিন্ন জিনিস নিয়ে বাঁধ আটকানোর চেষ্টা করে। কিন্তু ভদ্রা নদীর জোয়ারের পানির তোড়ে আবারও ভেঙে পানি আগের মতোই লোকালয়ে প্রবেশ করে। এতে পাইকগাছা উপজেলার অসংখ্য গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

নোয়াখালীতে ট্রেন চলাচল বন্ধ: নোয়াখালী প্রতিনিধি জানান, রেললাইন পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় গতকাল থেকে নোয়াখালীর সঙ্গে সারা দেশের ট্রেন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। শুক্রবার বিকালে ট্রেন চলাচল বন্ধের ঘোষণা দেয় রেল কর্তৃপক্ষ। এদিকে পানির কারণে আরজু (৪০) নামের এক যুবকের মরদেহ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করতে পারেননি স্বজনরা। তার মরদেহ দেড় কিলোমিটার দূরে ভ্যান গাড়িতে করে এলাকার এক প্রান্তে কবরস্থানে নিয়ে দাফন করতে হয়েছে।

ফেনীর ৯২ শতাংশ মোবাইল টাওয়ার অচল: রিপোর্টার জানান, বন্যায় ফেনী জেলার ৯২ শতাংশ মোবাইল টাওয়ারই অচল হয়ে পড়েছে। আর বন্যাকবলিত ১০ জেলার প্রায় ১১ শতাংশ মোবাইল টাওয়ার অচল রয়েছে। বিদ্যুত্ সংযোগ না থাকা এবং টাওয়ার এলাকা ডুবে যাওয়ায় নেটওয়ার্ক সচল করা যাচ্ছে না। গতকাল শুক্রবার বেলা ৩টা পর্যন্ত হালনাগাদ তথ্যে এ কথা জানায় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।

বিটিআরসি জানিয়েছে, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও সিলেট জেলার ১৩ হাজার ২৪০টি টাওয়ারের মধ্যে শুক্রবার বেলা ৩টা পর্যন্ত ১ হাজার ৪৬১টি টাওয়ার অচল ছিল। সেনাবাহিনীর সহায়তায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় টাওয়ার সচল করতে সমন্বয়ের কাজ চলছে।

কুষ্টিয়ায় গড়াই নদীর তীরসহ গ্রোয়েন বাঁধে ভাঙন :কুষ্টিয়া প্রতিনিধি জানান, গড়াইতে পানি বৃদ্ধিতে চরমভাবে ভাঙছে নদীর তীর ও গ্রেয়েন বাঁধ। নদীতে ক্রমাগত ধেয়ে আসছে পানি। অতিরিক্ত পানির চাপে গত এক সপ্তাহে শহরের উত্তর কমলাপুরসংলগ্ন গড়াই নদী তীরের আড়াই/তিন হাজার ফুট ভেঙে গেছে। ভাঙন ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ড বালুভর্তি প্রায় চার হাজার জিও ব্যাগ নদীতে ফেলেছে।

ফেনীতে স্বেচ্ছাসেবীর মৃত্যু: রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর) সংবাদদাতা জানান, ফেনীতে উদ্ধার তত্পরতায় যোগ দিয়ে পানিতে ডুবে লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার সাইফুল ইসলাম সাগর নামে এক স্বেচ্ছাসেবীর মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে এই ঘটনা ঘটে। নিহত সাগর উপজেলার করপাড়া ইউনিয়নের ২ নম্বর শ্যামপুর এলাকার আলীম উদ্দিন ব্যাপারী বাড়ির শহীদ উল্লাহর ছেলে। তিনি চট্টগ্রামে ব্যবসা করতেন। বন্যাপরিস্থিতি অস্বাভাবিক হওয়ায় স্বেচ্ছাসেবক দলের সঙ্গে ফেনীর ফুলগাজীতে কাজ করতে যান।

চকরিয়ায় স্রোতে ভেসে শিশুর মৃত্যু: চকরিয়া (কক্সবাজার) সংবাদদাতা জানান, উপজেলায় বন্যার পানির স্রোতে ডুবে মো. হাবিব (১৩) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার বরইতলী ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড পহরচাঁদা বিবিরখিল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। হাবিব ঐ এলাকার মো. জসিম উদ্দিনের ছেলে।

হবিগঞ্জে পানিবন্দি ১৪ হাজার পরিবার: হবিগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, জেলায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। খোয়াই নদীর পানি কিছুটা কমলেও সব পয়েন্টে বিপত্সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যার কারণে শায়েস্তাগঞ্জ জংশনের অদূরে লস্করপুরে খোয়াই নদীর ওপর রেলওয়ে ব্রিজ ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে শুক্রবার বিকাল ৬টা পর্যন্ত সিলেটের সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ ছিল। জেলায় এখনো পানিবন্দি হয়ে আছে ১৪ হাজার ৩৪০টি পরিবার।

মতলবে স্বেচ্ছাশ্রমে বেড়িবাঁধ মেরামত: মতলব উত্তর (চাঁদপুর) সংবাদদাতা জানান, উপজেলার মেঘনা ধনাগোদা সেচ প্রকল্প বেড়িবাঁধের ৬৪ কিলোমিটার অংশে বিভিন্ন স্থানে সৃষ্ট গর্ত ভরাট করেছেন স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মীরা।

বরিশালে সব নদীর পানি বিপত্সীমার ওপরে: বরিশাল অফিস জানায়, বরিশাল বিভাগের ১২টি নদনদীর পানি বিপত্সীমার অনেক ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ কারণে নদীতীরসহ নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দারা গত তিন দিন ধরে পানিবন্দি অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে। পাশাপাশি শহর-উপশহর জলাবদ্ধ হয়ে আছে। এতে করে জনজীবনে বেড়েছে ভোগান্তি।

চট্টগ্রামে ভেসে গেছে কোটি কোটি টাকার মাছ: পটিয়া (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতা জানান, পাহাড়ি ঢল ও টানা বর্ষণে দক্ষিণ চট্টগ্রামে ২০ হাজারের অধিক পুকুর ডুবে কোটি কোটি টাকার মাছ পানিতে ভেসে গেছে। এতে ক্ষতির মুখে পড়েছেন ৮ উপজেলার কয়েক হাজার মাছচাষি।

পানিবন্দিদের হেলিকপটারের মাধ্যমে উদ্ধার করছে র্যাব: বিশেষ প্রতিনিধি জানান, বন্যাদুর্গত এলাকায় উদ্ধার অভিযান, ত্রাণ বিতরণ ও চিকিত্সা সেবা অব্যাহত রেখেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। ফেনীর পশুরাম সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে এক জন গর্ভবতী ও দুজন নবজাতককে উদ্ধার করে অক্সিজেন সাপোর্ট দেওয়ার মাধ্যমে সুস্থ করে তাদের নিরাপদ স্থানে পৌঁছে দিয়েছেন তারা। এছাড়া নারী, শিশু ও বৃদ্ধসহ পানিবন্দিদের হেলিকপটারের মাধ্যমে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে স্থানান্তর করছে র্যাব। গতকাল শুক্রবার বিকালে র্যাব সদর দপ্তরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের সিনিয়র সহকারী পরিচালক আ ন ম ইমরান খান এ তথ্য জানান।

সর্বশেষ
logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2024 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram