ছায়েদ আহমেদ, হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি: হাতিয়ায় মধ্য চরভারত সেন মমতাজিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা ফৌজিয়া আক্তার জেরিন ছুটি ছাড়াই দীর্ঘদিন দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। স্কুলটির পক্ষ থেকে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে লিখিত দরখাস্ত দিলেও এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ার অভিযোগ উঠে।
স্কুল সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষিকা ফৌজিয়া আক্তার জেরিন গত ২৮ এপ্রিল থেকে অদ্যবধি পর্যন্ত বিনা অনুমতিতে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন। ২৮ এপ্রিল ক্লাস্টার অফিসার এবিএম নুরেজামান স্কুল ভিজিটে আসলে উক্ত শিক্ষিকাকে অনুপস্থিত দেখান। স্কুলটির প্রধান শিক্ষক তখন ঐ শিক্ষিকার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি অফিসকে ম্যানেজ করছেন বলে উল্লেখ করেন।
এমন অভিযোগের জের ধরে রোববার (২৫ আগস্ট) দুপুরে সরেজমিন গিয়ে স্থানীয় শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও অপর শিক্ষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সহকারী শিক্ষিকা ফৌজিয়া আক্তার জেরিন ছুটি ছাড়াই গত চার মাসের অধিক সময় ধরে স্বামীর সাথে যুক্তরাজ্যে বসবাস করছেন। বিষয়টি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল জব্বার কে জানানোর পরও কোনো ব্যবস্থা নেননি।
স্থানীয় অভিভাবক খলিল জানান, ফৌজিয়া ম্যাডাম অনেকদিন পর্যন্ত দেশের বাইরে, এতে আমাদের ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার ক্ষতি হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে যেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
সালাউদ্দিন নামের আরেক গার্ডিয়ান বলেন, ফৌজিয়া ম্যাডামের বেতন-ভাতা সহ সব কিছু যেন বন্ধ করা হয়। স্কুলটির সহকারী শিক্ষক মাহফুজুল বারী জানান, বিনা ছুটিতে দীর্ঘদিন তিনি দেশের বাইরে থাকায় আমাদের পাঠদানেও অসুবিধা হয়।
মধ্য চরভারত সেন মমতাজিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষিকা নাজমুন নাহার বেগম জানান, সহকারী শিক্ষিকা ফৌজিয়া আক্তার জেরিন বিনা ছুটিতে যুক্তরাজ্যে চলে যাওয়ার বিষয়ে আমি লিখিত দরখাস্ত দিয়েছি শিক্ষা অফিসার আব্দুল জব্বারকে। তিনি দরখাস্তটি অফিস সহকারী নাজিমকে দিতে বললে আমি তাকে (অফিস সহকারী নাজিম) দরখাস্তটি দিয়েছি। এছাড়াও আমার এই সহকারী শিক্ষিকা এর আগেও কয়েকবার ডেপুটেশনে সময় কাটিয়েছিল বলে জানান এই প্রধান শিক্ষিকা।
যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত শিক্ষিকা ফৌজিয়া আক্তার জেরিনের মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ করলে তার মা পরিচয়ে জনৈক নারী কলটি রিসীভ করে জানান, জেরিন দেশে কবে আসে তা তো জানিনা। তবে ছুটি সংক্রান্তে আমরা শিক্ষা অফিসের নাজিমের সাথে যোগাযোগ রাখছি।
এ বিষয়ে হাতিয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল জব্বার জানান, দরখাস্ত দিলে আমি মনে হয় ব্যবস্থা নিয়েছি। কিন্তু ঐ শিক্ষিকার ঠিকানায় কোনো শোকজ পাঠানো হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি তার সদুত্তর দেননি।
এদিকে নোয়াখালী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মনছুর আলী চৌধুরী জানান, বিষয়টি সম্পর্কে জরুরি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে বলে দেব।
উল্লেখ্য, খাতাপত্রে স্কুলটির শিক্ষার্থী সংখ্যা শতাধিক হলেও উপস্থিতি ৪০ থেকে ৪৫ জন। যেখানে প্রধান শিক্ষক সহ তিনজন শিক্ষক রয়েছেন। এর মধ্যে একজন বিটিপিটি প্রশিক্ষণে আছেন।