ঢাকা
২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সকাল ৬:৪৮
logo
প্রকাশিত : আগস্ট ২৬, ২০২৪
আপডেট: আগস্ট ২৬, ২০২৪
প্রকাশিত : আগস্ট ২৬, ২০২৪

অষ্টগ্রামে যুবদল নেতা মারধর মামলার আসামি প্রবাসী ও কারাবন্দি

অষ্টগ্রাম (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি: কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম উপজেলায় বিএনপি নেতাকে মারধরের অভিযোগ এনে আওয়ামীলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ১২৪ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করা হয়। গত বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) অষ্টগ্রাম মডেল থানায় মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়। মামলাটি দায়েরের পর থেকেই এলাকায় নানা সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। এ মামলায় প্রবাসী ও কারাবন্দিকে আসামি করার অভিযোগ উঠেছে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ৬ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে একটি বিজয় মিছিল বের হয়ে পূর্ব অষ্টগ্রাম আখড়া বাজার এলাকার বিএনপি কার্যালয়ের সামনে গেলে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা মিছিলে হামলা করে। হামলায় মামলার বাদি মনির মিয়াকে গুরুতর আহত করে মৃত অবস্থায় ফেলে রেখে যায় বলেও এজাহারে উল্লেখ করা হয়। এছাড়াও মিছিলে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়।

মামলার এজাহারে দুজন আসামির নাম রয়েছে। আসামিদের মধ্যে এজাহারে উল্লেখিত পূর্ব অষ্টগ্রাম ইউনিয়নের বাসিন্দা ৯৫ নং আসামি খান প্রিয় তিনি গত দেড় বছর আগে সংযুক্ত আরব আমিরাত কাতারে প্রবাসী হন। ৯৭ নং আসামি অজিত খান বাবুও বর্তমানে মালয়েশিয়ায় প্রবাসে রয়েছেন। এছাড়া ১১৫ নং আসামি আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মুক্তার খা অন্য একটি মামলায় ঘটনার দিন কারাবন্দি ছিলেন। ঘটনার দুদিন পর ৮ আগস্ট জামিনে কারামুক্ত হন তিনি। এ মামলায় একজন প্রবাসী ও একজন কারাবন্দিকে কিভাবে আসামি করা হলো এ প্রশ্নে স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্যে সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এলাকাবাসীরা মনে করেন সম্পূর্ণ প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে এ মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।

মামলার প্রবাসী আসামী খান প্রিয়র সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, গত ২০২৩ সালের ৮ আগস্টের একটি ফ্লাইটে বাংলাদেশ থেকে রাতে রওনা হলে ৯ আগস্ট সকালে তিনি কাতারে পৌঁছান। সেদিন থেকে অদ্যাবধি তিনি কাতারে রয়েছেন। প্রবাসে থেকেও ২০২৪ সালের ৬ই আগস্টের মামলায় তিনি আসামি হওয়ার বিষয়টি হাস্যকর বলে দাবি করেছেন।

মামলার আরেক আসামি মুক্তার খা জানান, তিনি অন্য একটি মামলায় ঘটনার দিন কারাগারে ছিলেন। ঘটনার দু'দিন পর ৮ই আগস্ট তিনি জামিনে কারামুক্ত হন। কারাগারে থেকেও মামলার আসামি হওয়ার বিষয়টি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার বলে মনে করেন। ঘটনার দিনের সঠিক তদন্তের দাবিও জানান তিনি।

প্রবাসী ও কারাবন্দিকে কেন মামলার আসামি করা হলো এমন প্রশ্নে মামলার বাদী মোহাম্মদ মনির মিয়ার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, সিসিটিভি ফুটেজ দেখেই আসামিদের নাম দেওয়া হয়েছে। সকলের সাথে আলোচনা করেই মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।

এজাহারে বর্ণিত ঘটনার তারিখ অনুযায়ী ঐদিন মামলার বাদী ও স্বাক্ষীদের কেউ আহত অবস্থায় অষ্টগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন কি না এ বিষয়ে অনুসন্ধানে হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ঐ দিন এমন কোনো গুরুতর আহত রোগী চিকিৎসা নিতেই আসেন নি।

মামলায় অষ্টগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুল হক হায়দারি বাচ্চু প্রধান আসামি, ২নং আসামি তাঁর ছেলে বিপ্লব হায়দারি, ৩নং আসামি রাজিব আহমেদ হেলু, ৪নং আসামি উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক তৌফিকুল ইসলাম তারিফ। এছাড়া অন্যান্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম জেমস, অষ্টগ্রাম রোটারী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মোজতবা আরিফ খান ও পূর্ব অষ্টগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান কাছেদ মিয়া।

মামলার বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম জেমস জানান, মনির মিয়ার ওপর হামলার বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। তবে সেদিন পূর্ব অষ্টগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে হামলা হয়েছিল বলে জেনেছেন।

এ ব্যাপারে অষ্টগ্রাম উপজেলা বিএনপির সৈয়দ সায়েদ আহাম্মদ জানান, মামলার আসামি যাদের সমস্যা রয়েছে তাদের নাম চার্জশীট থেকে যাচাই বাছাইয়ের মাধ্যমে বাদ দেয়া হবে। মামলার এজাহারে বর্ণিত সকল ঘটনা সত্য বলেও জানান তিনি।

উপজেলা বিএনপির সাবেক আহবায়ক সৈয়দ ফাইয়াজ হাসান বাবু বলেন, আমরা এসব প্রতিহিংসামূলক মামলা মোকদ্দমার পক্ষে নই। আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও নেতা তারেক রহমান দলের সকলকে সতর্ক করে বলেছেন কাউকে যেন মিথ্যা ও হারানিমূলক মামলা না দেয়া হয়। তারপরও এই মামলাটি কেন করেছে এ বিষয়ে আমি তেমন কিছুই জানি না।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অষ্টগ্রাম উপজেলার ক্যাম্প কমান্ডার মেজর আরিফা খাতুন জানান, মামলায় আসামিদের কয়েকজন প্রবাসে থাকেন বলে খবর পেয়েছি। মামলাটা যেহেতু দায়ের হয়ে গেছে সে ক্ষেত্রে আমাদের হস্তক্ষেপ করার ক্ষমতা নেই। তবে প্রবাসী যারা মামলার আসামি হয়েছেন তারা থানার ওসি বরাবর একটি দরখাস্ত দিয়ে তাদের বর্তমান অবস্থানের কথা জানাতে পারেন।

অষ্টগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম জানান, মামলার কার্যক্রম আপাতত স্থগিত রয়েছে। এখনো পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। মামলায় বর্ণিত ঘটনার সঠিক প্রমাণাদি পেলে তা তদন্তের মাধ্যমে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সর্বশেষ
logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2024 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram