আটঘরিয়া (পাবনা) প্রতিনিধি: আদা চাষ করে বাজিমাত করেছেন আটঘরিয়া পৌরসভার হাজিপাড়া গ্রামের আদাচাষি দুলাল মৃর্ধা। আটঘরিয়া কৃষি অফিসের পরামর্শে প্রথম বারের মতো তিনি পতিত জমির ঝোপঝাড় এ বাড়ির আঙ্গিনায় পরিষ্কার করে বস্তায় (ব্যাগিং পদ্ধতিতে) আদা চাষ করে নিজ এলাকায় সাড়া ফেলেছেন। তার দেখাদেখি বর্তমানে এই এলাকার অনেকেই বস্তায় আদা চাষে আগ্রহী দেখাচ্ছেন।
উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে জাতীয় কৃষি পদক প্রাপ্ত কৃষক শ্রী বিপ্লব কুমার সেন আদা চাষে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। এরপর প্রণোদনার বীজ সার ও তাদের পরামর্শ নিয়ে চাষ শুরু করেন। প্রথমে ছাই, জৈব সার ও বালু মিশিয়ে মাটি প্রস্তুত করেন। প্রতিটি বস্তায় তিন থেকে চারটি করে আদার চারা রোপণ করেন।
দুলাল মৃর্ধা জানান, এভাবে আদা চাষে সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো পতিত জমিতে খুবই সীমিত খরচ আর অল্প শ্রমে চাষ করা সম্ভব। একেকটি বস্তায় প্রায় দুই কেজি পর্যন্ত আদা পাওয়া যাবে উল্লেখ করে তিনি জানান, আদা গাছে পানির চাহিদা অনেক কম। আবার সার বা কীটনাশক ব্যবহার করতে হয় খুবই কম। মাঝে মধ্যে পাতা মরা রোগ প্রতিরোধে কিছু ওষুধ স্প্রে করতে হয়। এর বাইরে তেমন কোনো পরিচর্যা করতে হয় না। এভাবে আদা চাষ করে সহজেই লাভবান হওয়া যায়।
তিনি আরও জানান, প্রথম অবস্থায় অল্প পরিসরে চাষ করেছি। আগামীতে আরও বড় পরিসরে আদা চাষ করবো। একটি বস্তায় চারা রোপণ করতে মোট খরচ প্রায় ৪০-৫০ টাকা। কিন্তু একেকটি বস্তায় আদা পাওয়া যাবে প্রায় দেড় থেকে দুই কেজি।
দুলাল মৃর্ধার এ পদ্ধতিতে আদা চাষ দেখে এলাকার অনেক মানুষের মধ্যে আগ্রহ তৈরি হয়েছে। আশপাশের বিভিন্ন গ্রাম থেকে আদা চাষ দেখতে আসেন অনেকে। স্থানীয় বাসিন্দা ওসমান গনী জানান, এভাবে আদা চাষ এর আগে আমি দেখিনি। এটি দেখার পরে আমাদের মধ্যে আগ্রহ তৈরি হয়েছে।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জাহিদুল হক জানান, অনেকের আদা চাষের উঁচু জমি নেই। তাই পতিত জমিতে বস্তায় আদা চাষের পরামর্শ দেওয়া হয়। এছাড়া বাড়ির ছাদ ও পরিত্যক্ত জমিও কাজে লাগাতে পারবে অনেকে। পৌরসভা ছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে আদার চাষ হচ্ছে।
আটঘরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সজীব আল মারুফ জানান, আদা চাষে খুব বেশি খরচ নেই। একটি বস্তায় ১০ কেজি মাটি, চার কেজি জৈব সার, এক কেজি ভার্মি কম্পোস্ট দিতে হবে। সেখানে আদার বীজ লাগিয়ে দিলে ১০ মাসে ভালো ফলন আসে।
তিনি আরও জানান, পরীক্ষামূলকভাবে বস্তায় আদা চাষ পৌর সভা সহ বিভিন্ন এলাকায় ভালো সাড়া ফেলেছে। উপজেলায় ১২ হাজার বস্তায় আদার চাষ হয়েছে। সেখানে ২০ টন আদা উৎপন্ন হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।