চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি: চাঁপাইনবাবগঞ্জে অস্ত্র ও মাদক মামলায় পৃথক দুটি আদালতে দুইজনকে যাবজ্জীবন ও আরেকজনকে ১৭ বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত।
বুধবার দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সিনিয়র দায়রা জজ ও স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মোহা. আদীব আলী ও স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক মো. রবিউল ইসলাম এই রায় প্রদান করেন।
দন্ডপ্রাপ্তরা হলেন- চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার শাহাবাজপুর ইউনিয়নের কয়লাবাড়ি এলাকার ফজলুর রহমনের ছেলে মজিবুর রহমান (৩৫), একই উপজেলার শ্যামপুর ইউনিয়নের শরৎনগর মিয়াপাড়ার মিজানুর রহমান মিয়ার ছেলে দেলোয়ার হোসেন ওরফে পিয়াস (২৫) ও ধাইনগর ইউনিয়নের গুপ্তমানিক এলাকার রবিউলর ইসলামের ছেলে নাঈম আলী (২৩)।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. নাজমুল আজম জানান, ২০২১ সালের ১২ মার্চ দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার আলীমনগর ঘাটে ১০০ গ্রাম হেরোইনসহ দেলোয়ার ও হামিমকে গ্রেপ্তার করে ৫৩ বিজিবি। ঘটনার পরের দিন বিজিবির সুবেদার মো. আবুল কাশেম বাদী হয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানায় মামলা করেন। একই বছরের ১৮ মে তাদের দুজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন সদর থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই অমিত কুমার পান্ডে।
মামলার দীর্ঘ সাক্ষ্যগ্রহণ ও শুনানী শেষে আদালতের বিচারক দেলোয়ারকে যাবজ্জীবন, একই সঙ্গে তাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন। এ মামলায় অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় হামিম নামের অপরজনকে বেকসুর খালাস দেন আদালত।
তিনি আরো জানান, এছাড়াও একটি অস্ত্র মামলায় নাঈম নামের একজনকে ১৭ বছরের কারাদন্য দেন আদালত। ২০২০ সালের ২৬ আগস্ট রাতে শিবগঞ্জের জামতলাব্রিজ এলাকা থেকে একটি বিদেশী পিস্তুল, একটি ওয়ান শুটার গান, দুটি ম্যাগাজিন ও ৬ রাউন্ড গুলিসহ নাঈমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-৫। ঘটনার পরের দিন চাঁপাইনবাবগঞ্জ র্যাব ক্যাম্পের নায়েব সুবেদার মো. আবু তালেব বাদী হয়ে শিবগঞ্জ থানায় মামলা করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওই থানার এসআই নুরুল ইসলাম ওই বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর তাকে অভিযুক্ত করে চার্জশীট দাখিল করেন আদালতে। মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ ও শুনানী শেষে ১৯ (এ) ধারায় ১০ বছর ও ১৯ (এফ) ধারায় আরও ৭ বছরের কারাদন্ড দেন আদালত রায় ঘোষণার সময় আসামি অনুপস্থিত ছিলেন।
এদিকে রাষ্ট্রপক্ষের আরেক আইনজীবী মো. রবিউল ইসলাম বলেন, ২০১৯ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর ভোরে শিবগঞ্জের কয়লাবাড়ী এলাকায় ৩টি বিদেশী পিস্তল ও একটি ওয়ান শুটারগান, ৩টি ম্যাগাজিন, ১৬ রাউন্ড গুলিসহ মজিবুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এ সময় তার সহযোগী শাহাজান ওরফে আছাড়ি পালিয়ে যায়। ঘটনার দিনই র্যাবের এসআই নাজিম উদ্দিন বাদী হয়ে শিবগঞ্জ থানায় মামলা করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা র্যাবের এসআই মো. তোফাজ্জল হোসেন ওই বছরের ৬ নভেম্বর তাদের দুজনকেই অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন।
তিনি আরও বলেন, মামলার শুনানী শেষে ১৯ (এ) ধারায় মজিবুর রহমানকে যাবজ্জীবন ও ১৯ (এফ) ধারায় আরও ৭ বছরের কারাদন্ড দেয়া হয়। অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় এই মামলা থেকে শাহাজান ওরফে আছাড়িকে বেকসুর খালাস দেন আদালত।