ঢাকা
২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
রাত ১১:৪১
logo
প্রকাশিত : আগস্ট ৩১, ২০২৪
আপডেট: আগস্ট ৩১, ২০২৪
প্রকাশিত : আগস্ট ৩১, ২০২৪

যশোরের ঝিকরগাছায় নির্মাণধীন এক ব্রীজের কারণে ভোগান্তিতে ১০ গ্রামের মানুষ

যশোর প্রতিনিধি: যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার কায়েমকোলা থেকে ঝিকরগাছা ভায়া শ্রীরামপুর আঞ্চলিক ৮ কিলোমিটার সড়কের ঘোড়দাহ- ফুলবাড়ির মাঝামাঝি কপোতাক্ষ শাখা নদের ওপর নির্মাণধীন একটি ব্রীজের কাজ টলামাটাল অবস্থায় চলছে। দীর্ঘ কয়েকমাস বন্ধ থাকার পর গত দেড় মাস আগে থেকে পুনরায় নির্মাণ কাজ শুরু হলেও তা ধীরগতিতে চলছে। ব্রীজের পাশ থেকে তৈরি করা বিকল্প রাস্তা (সাইড ব্রীজ) খালের পানির স্রোতে ভেঙে যায় ফলে সড়কপথে যোগাযোগ বিছিন্ন ও ভোগান্তিতে পড়েছে এ সড়ক দিয়ে চলাচলকারী দুপাশের প্রায় আট থেকে দশটি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। ঝুঁকি নিয়ে ব্রীজের ওপর থেকে বাঁশ, মই দিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে এলাকাবাসীদের। বন্ধ রয়েছে ছোটখাটো যানবাহন চলাচলও।

 বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে প্রোগ্রাম ফর সাপোর্টিং রুরাল ব্রিজেস প্রকল্পের আওতায় ৩ কোটি ৪৮ লাখ ২৭ হাজার টাকা ব্যায়ে ৩০ মিটার দৈর্ঘের এ পিএসসি গার্ডার ব্রীজের নির্মান কাজ চলছে। নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০২২ সালে ১৪ই ফেব্রুয়ারী। গত ২০২৩ সালের ৮ই আগস্টের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনো তা শেষ হয়নি। 

স্থানীয় এলাকাবাসী ও নির্মাণ শ্রমিকদের অভিযোগ, দীর্ঘ কয়েক মাস ব্রীজের নির্মাণ কাজ বন্ধ ছিল। এরপর গত দেড় মাস আগে নির্মাণ কাজ শুরু হলেও তা টালমাটাল অবস্থায় চলছে। সঠিকভাবে মুজুরি না পাওয়ায় নির্মাণ কাজ করতে অনীহা প্রকাশ করছেন নির্মাণ শ্রমিকেরা। অপরদিকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ না হওয়ায় এবং বিকল্প সাইড ব্রীজ পানির স্রোতে ভেঙে যাওয়ায় ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষেরা। ঝুঁকি নিয়ে নির্মাণধীন ব্রিজের ওপর দিয়ে রড ডিঙিয়ে বাঁশ, মই দিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে যাত্রীদের। 

স্থানীয় সমাজকর্মী আশিকুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, কাজ শুরু হওয়ার পর থেকে বেশ কয়েকমাস ব্রিজের নির্মাণ কাজ বন্ধ ছিল। হঠাৎ গত বৃহস্পতিবার নদীর পানির স্রোতে ব্রীজের বিকল্প অস্থায়ী রাস্তা সাইড ব্রীজ ভেঙে যায়। এটি মেরামত করা স্থানীয়দের পক্ষে সম্ভব নয়। এদিকে বিকল্প রাস্তা ভেঙে গেলে এটি মেরামতে কোন উদ্যোগ নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। 

তিনি আরও জানান, জয়রামপুর, ঘোড়দাহ,ফুলবাড়ি, দৌলতপুর, শ্রীরামপুর,  তীপ্তিপুরসহ প্রায় ১০টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ প্রতিদিন এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করে। নির্মাণ শ্রমিকেরাও অভিযোগ করছেন তারা ঠিকঠাক মজুরী পাচ্ছেন না। ফলে তারাও কাজ করতে অনীহা প্রকাশ করছেন। 

আলমগীর হোসেন নামে এক ইজিবাইক চালক বলেন, 'গত কয়েকদিন ব্রীজের বিকল্প রাস্তা ব্যবহার করে যাত্রী নিয়ে চলাচল করেছি। এখন সে রাস্তাটি ভেঙে যাওয়ায় এপাশ থেকে ওপাশে যাওয়া যাচ্ছে না। যাত্রীদের এখানে নামিয়ে দিচ্ছি। তারা ঝুঁকি নিয়ে মই, বাঁশ দিয়ে ব্রীজ পার হচ্ছেন।'

ঘোড়দাহ গ্রামের বাসিন্দা আরিফুর রহমান বলেন, আমার মাকে ঝিকরগাছায় ডাক্তার দেখাতে নিয়ে গিয়েছিলাম। ফেরার পথে অনেক কষ্ট করে কোলপাজা করে ব্রিজ পার করেছি। শিশু, বৃদ্ধ এবং মহিলারা ঝুঁকি নিয়ে লোহা, রডের মধ্যে দিয়ে ব্রীজ পার হচ্ছে। যেকোনো সময় বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। ব্রীজ দ্রুত নির্মাণ হওয়া জরুরী একইসাথে বিকল্প রাস্তার ব্যবস্থা করার দাবি জানাচ্ছি।'

মাগুরা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আকরাম হোসেন সাংবাদিকদের বলেন,কাজের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে এক বছর আগে। তবে এর মধ্যে প্রথম ঠিকাদার মারা গেছে, পরে ঠিকাদার চেঞ্জ হয়েছে। চলাচলের জন্য ব্রীজের পার্শ রাস্তা হিসেবে সাইড ব্রীজ নির্মাণের জন্য ঠিকাদারদের বরাদ্দ ছিল। এর আগে ২-৩ বার সাইড ব্রীজ ভেঙেছে। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদাররা কোনভাবেই গুরুত্ব দিচ্ছে না। সাইড ব্রীজের বরাদ্দ থাকা সত্বেও দায়সারাভাবে সাইড ব্রীজ নির্মাণ করায় কিছুদিন পর পর এমন দূর্ঘটনা ঘটছে।

তিনি বলেন,আমি ব্রীজের ওখানে যাব ঠিকাদারের সঙ্গে কথা বলব। দেখি তারা কি করে।'এ বিষয়ে বক্তব্য নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার অপু'কে মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ফোনটি রিসিভ করেননি।

ঝিকরগাছা উপজেলা প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম মোল্লা বলেন, সাইড ব্রীজের ওখানে আগে পাইপ দেওয়া ছিল পরে জলাবদ্ধতার কারণে পাইপ সরিয়ে লোহার পাটাতন দেওয়া হয়। সাইড ব্রীজ পুনরায় ভাঙছে বলে আমি  জেনেছি। আমি খোঁজ খবর নিচ্ছি।'তিনি আরও বলেন, কাজের মেয়াদ শেষ হয়েছে। এর আগে ঠিকাদারও কয়েকবার চেঞ্জ হয়েছে। ব্রীজের কাজ শেষের পথে। তবে বর্তমান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্মাণ সময়সীমা বাড়ানোর জন্য আবেদন করেছে বলে জানতে পেরেছি। আশা করি দ্রুত ব্রীজের কাজ শেষ হবে।'

logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1736 786915, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2024 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram