মির্জাগঞ্জ (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি: বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এয়ার ভাইস মার্শাল(অবঃ) আলতাফ হোসেন চৌধুরী বলেছেন, আওয়ামীলীগের প্রেতাত্মারা কিন্তু এখনো পালিয়ে ও তারা বিভিন্ন ভাবে আড়ালে দাঁড়িয়ে আছে। তারা সুযোগ পেলেই ছোঁবল মারবে এবং তাদের সুযোগ যদি কোন বিএনপির নেতাকর্মী এনে দেয়, সেই মোনাফেকের উপর যেন আল্লাহর ‘গজব’ পড়ে। অল্প কয়টা টাকার জন্য আওয়ামীলীগের চোর, ডাকাত, গুন্ডা, খুনিরা এখানে আশ্রয় নেয়ার চেষ্টা করতেছে। নিজের সামান্য সার্থের জন্য ১৬ বছরের অত্যাচার রক্তের উপর আবারও অত্যাচার নিয়ে আসার চেষ্টা করছে। আপনাদের চিহ্নিত করতে হবে ওই ভারতের দালালদের ওই আওয়ামীলীগের প্রেতাত্মাদের, আর সবচয়ে চিহ্নিত করতে হবে বিএনপির ‘মোনাফেকদের’। ঘরের মধ্যে যতক্ষণ মোনাফেক থাকবে, তাদেরকে ততক্ষণ সামলাতে পারবেনা, তেমনি বাইরের শত্রুকে সামলানো অনেক কষ্টকর হয়ে যাবে।
কলেজ রোড এলাকার বিএনপির অফিস ভাংচুর করে ইটগুলো নিয়ে গেছে। তাই আপনারা আইন কেউ নিজের হাতে নিবে না। এই ১৬ বছরে আওয়ামীলীগ আইন নিজের হাতে নিয়েছিলো বলেই শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছে। কোন সরকার পতনের পরে সেই দেশের প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী এমপি, মসজিদের খতিব ও এমনকি নেতাকর্মীরাও পালিয়ে যায় এ কথা কখনো শুনেছেন। শেখ হাসিসা পালিয়ে যাওয়ার পরে কোন দেশ আশ্রয় দিতে চাই নাই শুধু ভারত সরকারই আশ্রয় দিয়েছে। বাংলাদেশকে অস্থাীতিশীল করার জন্য ভারত সরকার শেখ হাসিনাকে সকল প্রকার সুবিধা দিয়ে আসছে। বিভিন্ন ভাবে চেষ্টা করার পরেও সকল ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হইতে বাধ্য। তাই অন্যায় দিয়ে কেউ কখনো সফল হয়না। বাংলাদেশের আজকে যারা কুসন্তান তারা সব পালিয়েছে। আজকে যারা একত্রিত হয়েছে, হাতে হাত ধরেছে ইউনাইটেড হয়েছে তারা একত্রে কাজ করছেন। আপনারা যারা একত্রে থাকবেন ওই আওয়ামীলীগের প্রেতাত্মা কেন এর চাইতেও বেশি কিছু হয় তারা আপনাদের কোন ক্ষতি করতে পারবে না।
পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলা বিএনপি আয়োজিত ব্যানারে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ও বন্যায় মৃত্যুবরণকারীদের স্মরণে মিলাদ ও দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
সোমবার সকাল এগারোটায় উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মোঃ আনোয়ার হোসেন সিকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে তিনি আরো বলেন, বিগত ১৬ বছরে ইতিহাস বুকফাটা কান্না, বিধবা ও সন্তানহারা মায়ের দীর্ঘশ্বাস সেটা শেষ হয়েছে এই শিশুদের রক্তের মাধ্যেমে গত ৫ আগস্ট। ছাত্র-ছাত্রীর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। আমি স্যালুট করি ছাত্র-ছাত্রীর পিতা-মাতা ও শিক্ষকদের প্রতি। দ্বিতীয়বারের মতো বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে অনেক রক্তের বিনিময়ে। এই ফ্যাসিবাদী সরকাররে শাসন আমলে আমাদের নেতাকর্মীদের জায়গা জমি, দোকান ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ক্ষেতের ফসল, গোয়ালের গরু, পুকুরের মাছ কেড়ে নিয়েছে এবং যখন আমাদের কিছুই ছিলো না তখন আমাদের দাদার আমলের বড় গাছটাও কেটে নিয়েছে। কোথাও বিচার পাওয়া যেত না। কোথাও বিচার না পেয়ে অনেক নেতাকর্মী আত্মহত্যা করছে। যে শিশু সন্তানরা-ছাত্র-ছাত্রীরা মাঠে নেমেছিলো তারা শুধু সন্তান না, তারা আল্লাহর রহমত হয়ে এসেছিলো। আর যারা বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকার হয়ে এসেছেন তারাও আল্লাহর রহমত হয়ে এসেছেন। গত ১৬ বছরে বিভিন্ন মামলায় আমি ৮শত বার কোর্টে হাজিরা দিয়েছি। দেশের অর্থনীতি-শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে গেছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধানের সহযোগিতায় আবারও ঘুরে দাড়াবে বাংলাদেশ।
উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মোঃ আমিনুল ইসলাম খোকনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট সমাজসেবক বেগম সুরাইয়া আক্তার চৌধুরী, পটুয়াখালী জেলা বিএনপির সদস্য মোঃ মাকসুদ আহমেদ বায়েজিদ পান্না, উপজেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মোঃ জাহাঙ্গীর আলম ফরাজী, বিশিষ্ট সমাজসেবক মোঃ ফিরোজ আলম গোলদার, পটুয়াখালী জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মোঃ আনিসুর রহমান, পটুয়াখালী জেলা মহিলা দলের সাবেক সভানেত্রী অধ্যাপিকা লায়লা ইসয়ামিন, উপজেলা যুবদলের আহবায়ক মোঃ গাজী রাসেদ সামস, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক মোঃ রুবেল মৃধা, মাধবখালী ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি মোঃ মনিররুল ইসলাম খন্দকার, মাধবখালী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মোঃ শাহীন চৌধুরী, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের আহবায়ক মোঃ রফিকুল ইসলাম, শ্রমিকদলের সভাপতি মোঃ নাসির উদ্দীন হাওলাদার প্রমূখ। অনুষ্ঠান শেষে মিলাদ ও দোয়া অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন মাওলানা মোঃ আবুল কালাম আজাদ।