সঞ্জীব সরকার,উল্লাপাড়া , সিরাজগঞ্জ: চলনবিল খ্যাত সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় মিঠাপানির দেশীয় প্রজাতির মাছের শুঁটকি চাহিদা দিন দিন বাড়ছে । বর্ষা এলে এই এলাকায় প্রচুর পরিমান দেশিয় প্রজাতির মাছ ধরা পড়ে। এ অঞ্চলের দেশিয় প্রজাতির মাছগুলো , পুঁটি, শিং, মাগুর, পাবদা, গুলশা, মলা, ঢেলা, চেলা, বাতাশি, টেংরা, বাচা, টাকি, বাইম, খলিশা, কৈ, বেলে, ভেদা,চান্দা , চেং, বৌ-মাছ, চাপিলা খাল-বিল, নদী-নালা, খালবিলে প্রচুর পরিমান দেশিয় প্রজাতির মাছ দেখা যায় । সেই মাছ ধরে নিয়ে এসে জেলেরা বিক্রি করে থাকে বিভিন্ন হাটবাজারে। মাছগুলো হাটবাজার থেকে সংগ্রহ করে শুঁটকি করা হয় ।
স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহের পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রফতানি হচ্ছে। শুঁটকি করাকে কেন্দ্র করে একদিকে যেমন ভালো দাম পাচ্ছে স্থানীয় জেলেরা অন্যদিকে শুঁটকিমাছ করে লাভবান হচ্ছে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। দেশিয় প্রজাতির শুটকি মাছ প্রক্রিয়াজাতকরণ করে লাভ হওয়ায় বাণ্যিজিকভাবে বাড়ছে এর পরিধি। এসব মাছ স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে জেলার নিলফামারীর সৈয়দপুর ,ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়। এছাড়াও ভারত সহ বিভিন্ন দেশে শুঁটকি রপ্তানি করা হয় বলে জানাযায়।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় , উপজেলার মোহনপুর, বড়পাঙ্গাসী ,উধুনিয়া, সলঙ্গা সহ ছোট বড় কয়েকটি স্থানে গড়ে উঠেছে শুঁটকি পল্লী । কোন প্রকার কেমিক্যাল ছাড়া সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্নভাবেই শুঁটকি মাছ করা হচ্ছে । এই মাছকে ঘিরে গড়ে উঠেছে শুটকি মাছ প্রক্রিয়াজাতকরণ। এসব শুটকি মাছ শুকানোকে কেন্দ্র করে নারী পরুষ অনেকের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে।
শুঁটকি ব্যবসায়ীরা বলেন, বিভিন্ন বাজার থেকে ভোরে দেশিয় প্রজাতির মাছ সংগ্রহ করে নিয়ে এসে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করে মাছ খোলা মাঠে রোদে চাতালে শুকাতে দেই। বিভিন্ন জেলায় শুটকি মাছগুলো বিক্রি করা হয় পাইকারদের কাছে। রোদে শুকানো এসব শুঁটকি মাছে কোন ধরনের ক্ষতিকর কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয় না। বিভিন্ন সময় দেশিয় মাছ প্রান্তিক জেলেরা পানিতে সংগ্রহে ঘাটতি দেখা দিলে শুটকি উৎপাদনে বিপাকে পড়তে হয়। ফলে লেবারদের নিজ পকেট থেকে টাকা দিতে হয়। এছাড়াও বৃষ্টিপাতের অনেক সময় ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। সরকারি ভাবে স্বল্প সুদে ঋণের ব্যবস্থা করলে শুটকি ব্যবসায়ীরা লাভবান হতো ।
উল্লাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো: আতাউর রহমান বলেন, উপজেলার কয়েকটি এলাকায় দেশিয় প্রজাতির মাছ শুটকি করা হয় । এ সকল শুটকি মাছ জেলায় চাহিদা পূরণ করে দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্রি ও দেশের বাহিরে রপ্তানি হয়ে থাকে।
শুটকি মাছ শুকানোকে কেন্দ্র করে অনেকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। গত বছরে বিভিন্ন দেশিয় প্রজাতির শুটকি মাছ ৯১ টন উৎপাদন হয়েছিলো এ বছর ১ শত টনের মতো উৎপাদন হবে বলে আমরা আশাবাদী।