ঢাকা
৮ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
রাত ১২:২৭
logo
প্রকাশিত : সেপ্টেম্বর ৭, ২০২৪
আপডেট: সেপ্টেম্বর ৭, ২০২৪
প্রকাশিত : সেপ্টেম্বর ৭, ২০২৪

কুমিল্লায় চাঞ্চল্যকর তিন খুনের আসামী গ্রেফতার, পুলিশের কাছে দায় স্বীকার ঘাতকের

শাহাজাদা এমরান,কুমিল্লা: কুমিল্লার হোমনায় এক দিনের ব্যবধানে মা-ছেলেসহ চাঞ্চল্যকর তিন খুনের রহস্য উদঘাটন ও ঘাতককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশের কাছে হত্যার কারণ বর্ণনা ও দায় স্বীকার করার পর ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী নেওয়ার জন্য আসামী মো. আক্তার হোসেনকে (২৭) গতকাল শনিবার কুমিল্লার আদালতে নেওয়া হয়েছে।

পুলিশ বলছে, খুন হওয়া নারীর সঙ্গে টাকা পয়সার লেনদেনের জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটায়। গত বুধবার রাতে ভিকটিমের ঘরে ঢুকে মাহমুদা আক্তার (৩০) ও তার ছেলে শাহাদাত হোসেন প্রকাশ সাহাদ (০৯) এবং ভাতিজি তাইফা সিনহা তিশাকে (১৫) গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ^াসরোধ ও মাথায় কাঠের লাঠির আঘাতে হত্যা করে পালিয়ে যায়।

খবর পেয়ে বৃহস্পতিবর সকালে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্দের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। খুন হওয়া মাহমুদা আক্তারের পিতা মো. আবুল হোসেন বাদি হয়ে ওইদিন (বৃহস্পতিবার) রাতে ৩০২/৩৪ ধারায় হোমনা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পুলিশ খুনের ঘটনার এক দিনের ব্যবধানে শুক্রবার বিকেলে
প্রযুক্তির মাধ্যমে আসামী আক্তার হোসেনকে তার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

আসামী উপজেলার শ্রীমদ্দি চরের গাঁও গ্রামের হক মিয়ার ছেলে। লাশের ময়নাতদন্ত শেষে শুক্রবার বিকেলে উপজেলার বড় ঘাগুটিয়া ঈদগাহ মাঠে জানাজা ও স্থানীয় কবরস্থানে পাশাপাশি তিনিটি কবরে তাদের দাফন করা হয়েছে। স্বজনদের আহাজারিতে সেখানের আকাশ ভারী হয়ে উঠে। এসময় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।

এ ঘটনায় হোমনা সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মীর মহসীন মাসুদ রানা বলেন, আসামী আক্তার হোসেন মাহমুদাকে চাচী সম্বোধন করতো।

তিনি গ্রেফতার আক্তারের বরাত দিয়ে বলেন, মাহমুদা আক্তার হোসেনের কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে সাত চল্লিশ হাজার টাকা ধার নেন। বুধবার তাকে ওই টাকা দেওয়ার কথা বলেই মাহমুদা তাকে (আক্তারকে) বাড়িতে নেন। রাত আটটার সময় সে ওই বাড়িতে যায়। সেখানে আখ, সিঙ্গারা খেয়ে-দেয়ে রাত দশটার মধ্যে সবাই ঘুমিয়ে পড়ে। আক্তারকেও ঘরের মেঝেতে ঘুমাতে দেন। এর আগে টাকা পয়সার লেনদেন নিয়ে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও মনোমলিন্য হয়। এরই রাগে ক্ষোভে রাত প্রায় দুইটার দিকে প্রথমে মাহমুদা আক্তার প্রকাশ মাহফুজাকে গলায়া ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস দিয়ে স্বাশরোধ করে হত্যা করে। পরে একে একে একইভাবে তার ছেলে শাহাদাত হোসেন
প্রকাশ সাহাদ এবং ভাতিজি তাইফা সিনহা তিশাকে হত্যা করে। পরে কাঠের একটি লাঠি দিয়ে মাথায় আঘত করে থেঁতলে রক্তাক্ত জখম করে তাদের মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরে ভোরে ফজরের নামাজের আগেই ঘাতক আক্তার পালিয়ে যায়।

এ ব্যাপারে হোমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, তিন খুনের আসামী আক্তার হোসেনকে তার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছি। ৬৪ ধারয় স্বীকারোক্তির জন্য আদালতে পাঠানো হয়েছে।

থানা সূত্রে জানা যায়, ভিকটিম মাহমুদা আক্তার প্রকাশ মাহফুজার একই উপজেলার বড় ঘাগুটিয়া গ্রামের শাহ-পরানের সঙ্গে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। তাদের বিবাহীত জীবনে শাহাদাত হোসেন প্রকাশ সাহাদের জন্ম হয়। ভিকটিমের স্বামী মো. শাহ-পরান ঢাকায় একটি জুতা কোম্পানিতে চাকুরী করেন। স্বামী ঢাকায় চাকুরী করার কারণে মাহমুদা তার সন্তানকে নিয়ে রাতের বেলায় ঘুমাতে ভয় পেত। এর পরিপ্রেক্ষিতে ভিকটিমের দূরসম্পকের ভাতিজি পাশর্^বর্তী বাড়ির তাইফা সিনহা তিশাকে সঙ্গে রাখতেন। প্রতিদিনের মতো রাতের খাওয়া দাওয়া শেষ করে গত বুধবার রাত দশটার মধ্যে তাদের দো-চালা টিনের ঘরের পশ্চিম পাশের রুমে ঘুমিয়ে পড়েন।

পরের দিন বৃহস্পতিবার সকাল আটটার দিকে ভিকটিমের বাড়িতে নিহত তাইফা সিনহা তিশাকে তার ছোট বোন মীম ডাকতে আসেন। এসেই ভিকটিমের বসত ঘরের পূর্ব পাশের দরজা ও শয়ন কক্ষের দক্ষিণ পাশের জানালা খোলা দেখতে পায়। মীম ওই জানালা দিয়া ভিকটিম মাহমুদা আক্তার প্রকাশ মাহফুজা ও তার ছেলে শাহাদাত
হোসেন প্রকাশ সাহাদ এবং তাইফা সিনহা তিশাকে খাটের ওপর গলায় ওড়না পেঁচানো ও মাথায় রক্তাক্ত জখম অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে। এমন অবস্থা দেখে বোন মীম চিৎকার শুরু করেন। চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে এসে তাদের ঘরে ঢুকে মাহমুদা ও তার ছেলে শাহাদাত এবং তিশাকে মৃত অবস্থায় খাটের ওপর ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস লাগানো এবং তাদের মাথা কাটা রক্তাক্ত জখম দেখতে পায়।

সর্বশেষ
logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ তাপস রায় সরকার
মোবাইল: +৮৮০ ১৭৩৬ ৭৮৬৯১৫
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1736 786915, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2024 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram