মোবারক হোসেন, সিঙ্গাইর, (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি: বিএনপির নেতাকর্মীদের নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক) অপপ্রচার করার প্রতিবাদে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আনান জামানের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছে মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলা বিএনপি। শনিবার (৭ আগষ্ট) মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এই সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে দেন সিঙ্গাইর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান মিঠু। তিনি বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আনান জামান সিঙ্গাইর উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য। তার গ্রামের বাড়ি সিঙ্গাইর উপজেলার বলধারা ইউনিয়নের গোলাইডাঙ্গা গ্রামে।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকতে আনান জামান তার গ্রামের বাড়ীতে ঢাকা থেকে উঠতি বয়সের ছেলে-মেয়েদের নিয়ে গান বাজনার আড়ালে প্রায়ই মাদকের আড্ডা ও অসামাজিক কর্মকান্ডে লিপ্ত হতেন। বিষয়টি এলাকাবাসী জানলেও তাকে কেউ কিছু বলতে সাহস পায়নি। সম্প্রতি আনান জামান তার ফেসবুক আইডিতে লাইভে এসে বেএনপির নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে বলেন, আমাকে এবং আমার মঞ্চ পুড়িয়ে দিয়ে যদি আপনারা শান্ত হোন তবে তাই হোক। আমি আর লুকিয়ে রাখতে পাড়ছি না এত কষ্ট এত যন্ত্রণা। গত ৫ আগষ্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে আমাদের শিক্ষার্থীরা যখন রাস্তায় ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছিল, রাষ্ট্রের নোংরা পরিস্কার করছিল, বন্যার সময় সাবাই এক হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ছিল,নিজের কাছে এত ব্যাথা এত যন্ত্রণা তুচ্ছ মনে হচ্ছে। কিন্তু গত সোমবার যখন আপনারা বললেন ১৬ বছর ধরে আপনারা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন,একটি আর্থিক দুরবস্থার মধ্যে রয়েছেন। যদি আমি আপনাদের মোটা অংকের টাকা না দেই, তাহলে আপনারা যতগুলো হত্যা মামলা হবে তার মধ্যে আমার নাম দিয়ে দিবেন এবং নো জাসষ্টিজ করে আমার মঞ্চ পুড়িয়ে দিবেন। তাঁর পড় থেকে এই অসম্মান আমি আর নিতে পাড়ছি না। আমি আর নিব না। আমি আসলে মৃত্যুটাকে উদযাপন করবো। আমি সাতদিনের মধ্যে কোথায় পাব এত টাকা। আমি তো টাকা দিতে পারবো না। আমি সাতশত মম জ্বালিয়ে নিজের মৃত্যু উদযাপন করতে পারবো। আপনার ভাল থাকুন সুন্দর থাকুন।
ফেসবুক লাইভে আনান জামানের এমন অভিযোগের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, জেলা ও উপজেলা বিএনপির কোন নেতাকর্মী তার নিকট এই চাঁদা দাবি করেননি। আওয়ামীলীগ নেতা ও শিক্ষক আনান জামান যদি এই ঘটনার কোন প্রমান দিতে পারেন, যিনি তার কাছে চাঁদা দাবি করেছেন তার বিরুদ্ধে সংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর যদি তিনি ঘটনার সত্যতা প্রমান করতে না পারেন তাহলে মিথ্যা প্রচারনায় বিএনপির ভাবমূর্তী নষ্ট হওয়ার দায়ে আনান জামানের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইন প্রয়োগ করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, গত পনের বছর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে আনান জামান নিজ এলাকায় অসহায় গ্রামবাসীদের নানাভাবে অত্যাচার নির্যাতন করেছেন। তিনি একজন শিক্ষক হওয়া সত্বেও ঢাকা থেকে ক্যাডার বাহিনী নিয়ে নিজ এলাকায় জায়গা-জমি দখল করতেন। আনান জামানের কাছে নিজ গ্রামের অনেক ব্যবসায়ীরা টাকা পাবেন। তার বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করলেই তিনি পুলিশ দিয়ে হয়রানি করতেন।
এসময় মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আজাদ হোসেন খান, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম নূরতাজ আলম বাহার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম বাদল, বাবুল হোসেন, সিঙ্গাইর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবিদুর রহমান খান রোমান, সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান মিঠু, যুগ্ম-সম্পাদক আওলাদ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক সাজেদুল আলম স্বাধীন, পৌর বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট খোরশেদ আলম ভূইয়া জয় ও জেলা যুবদলের সদস্য সচিব তুহিনুর রহমানসহ জেলা, উপজেলা বিএনপির অনেক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে আনান জামানের অভিযোগের বিষয়ে জানতে তার মুঠোফোন নম্বরে একাদিকবার ফোন করা হয়। কিন্তু ফোন না ধরায় এবিষয়ে তার মতামত জানা সম্ভব হয়নি।