মমিনুল ইসলাম, ত্রিশাল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি : আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বাধা উপেক্ষা করে ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার আমিরাবাড়ী ইউনিয়নের গোপালপুরে বাবে বরকত দেওয়ানবাগ শরীফে প্রায় পাঁচ শতাধিক ভিক্ষুব্ধ জনতা ভাঙচুরের চেষ্টা চালিয়েছে। এসময় প্রতিরোধের মুখে পড়ে আহত হয়েছে অন্তত অর্ধশতাধিক।
রবিবার সকালে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের লোকজন একত্রিত হয়ে ভাঙচুরের চেষ্টা চালায়। এ সময় তারা দেওয়ানভাগ শরীফের প্রধান ফটক ও সীমানাপ্রাচীর ভেঙে ভিতরে ডুকার চেষ্টা চালালে ভিতরে থাকা হাজারো ভক্ত অনুরাগী ভিতরে থেকেই মরিচের গুঁড়ো স্প্রে, ইটপাটকেল নিক্ষেপ, গুলাই দিয়ে মার্বেল নিক্ষেপ ও গরম পানি ছোড়ে। বাহির থেকেও এসময় বিক্ষুব্ধ জনতা ভিতরে থাকা লোকজনের উপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে অর্ধশতাধিক আহত হয়। এসময় বিক্ষুব্ধ জনতা উত্তেজিত হয়ে মূল ফটকের বাইরে থাকা তাদের কন্ট্রোল রুমে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরিস্থিতি ক্রমেই খারাপ হতে থাকলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিতে লাঠিচার্জ করে বিক্ষুব্ধ জনতাকে তাড়িয়ে দেয়। বর্তমানে পরিস্থিতি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
জানা যায়, দেওয়ানবাগ শরীফে বিতর্কিত ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ড হতো বলে জানিয়ে তা গুড়িয়ে দিতে দুইদিন আগে থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সহ এলাকাভিত্তিক ব্যাপক প্রচার করা হয়। তারই প্রেক্ষিতে আজ এ হামলার চেষ্টা হলো।
জানতে পেরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে সকাল থেকেই ঘটনাস্থলে ছিলেন ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর জেলা পর্যায়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উর্ধতন কর্মকর্তা ও স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। এ সময় এই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তারা।
স্থানীয় রাকিবুল হাসান রাকিব বলেন, ‘ইসলাম বিরোধী বিভিন্ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করায় এলাকাবাসী ভন্ড পীর দেওয়ানবাগীর ওপর অনেক আগে থেকেই ক্ষিপ্ত ছিল। আজকে সকালে এলাকার জনগণ একত্র হয়ে এই দরবার উৎখাত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাকে এলাকা থেকে বিতাড়িত করবো। এ বিষয়ে আমরা প্রশাসনের কাছে তিনটি দাবি জানিয়েছি।'
দেওয়ানবাগ শরীফের মিডিয়া সেলের কো-অর্ডিনেটর ড. সৈয়দ মেহেদী হাসান আজকের হামলায় তাদের ১২০ জন আহত হয়েছে জানিয়ে বলেন, ' দীর্ঘদিন ধরে আমরা শান্তিপূর্ণ ভাবে আমাদের দরবার পরিচালনা করে আসছি। আমাদের দেওয়ানবাগী হুজুরের মূল শিক্ষায় হলো মানবতার শিক্ষা। আমরা কাউকে আঘাত করিনি। এভাবে চলতে থাকলে তো টিকা যাবে না। আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে আমরা আগে সংবাদ সম্মেলন করে প্রতিবাদ জানাবো, তারপর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
ত্রিশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামাল হোসেন বলেন, 'দেওয়ানবাগ শরীফে হামলা হতে পারে এমন সংবাদের ভিত্তিতে সকাল থেকেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়ন করা হয়। স্থানীয় এলাকাবাসী হামলা চালাতে চাইলে আমরা তাদেরকে বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিযন্ত্রণে আনার চেষ্টা করি। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
ত্রিশাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জুয়েল আহমেদ বলেন, 'উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়ন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।