গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি: নাটোরের গুরুদাসপুরে তৃতীয় ধাপে অনুষ্ঠিত ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সরকারি কর্মকর্তাদের কর্তব্য সম্পাদনে বাধা প্রদান ও ভাংচুর করে ফলাফল বানচালের অপচেষ্টা করার অপরাধে দুইজন উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী ও একজন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীর নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ওইদিন ২৯ মে ভোট গ্রহণ শেষে রাতে ফলাফল ঘোষণার সময় কন্ট্রোলরুমে ঢুকে দলবদ্ধ হয়ে আক্রমণ করেন পরাজিত প্রার্থী ও তাদের সমর্থকেরা।
এ ঘটনায় গত ৪ সেপ্টেম্বর রাতে গুরুদাসপুর উপজেলা প্রশাসনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মমতাজ উদ্দিন বাদি হয়ে গুরুদাসপুর থানায় মামলাটি দায়ের করেছেন। কিন্তু স্বাক্ষীরা সুস্পস্টভাবে স্বাক্ষী দিতে চাইছেন না। ফলে মামলাটি আলোর মুখ দেখবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন অনেকেই।
মামলার অভিযুক্তরা হলেন- গুরুদাসপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আনারস মার্কা প্রতীকের উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী আতিয়ার রহমান বাঁধন, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোটরসাইকেল মার্কা প্রতীকের উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী সরকার এমদাদুল হক মোহাম্মদ আলী ও উপজেলা যুবলীগ নেতা টিয়া পাখি প্রতীকের প্রার্থী হুমায়ুন কবির প্রিন্স।
তারা দিনব্যাপী নির্বাচন শেষে রাতে ফলাফল ঘোষণাকে কেন্দ্র করে সরকারি কর্মকর্তাদের কাজে বাধা দেন। আক্রমণের মুখে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতায় কন্ট্রোলরুম ত্যাগ করেন কর্মকর্তারা। সেইদিন বেসরকারিভাবে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ আহম্মদ আলী ঘোড়া প্রতীকে ২০ হাজার ৩৫৯ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আতিয়ার রহমান বাঁধন (আনারস) নিয়ে ১৯ হাজার ৯০৩ ভোট ও মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে সরকার এমদাদুল হক মোহাম্মদ আলী পেয়েছিলেন ১৯ হাজার ৭৫৯ ভোট।
জানা যায়, ফলাফল ঘোষণার দুইদিন পরেই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ৭২টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৬টি কেন্দ্রের ফলাফল শিট বদলে দেওয়ার অভিযোগ এনে পুনরায় নির্বাচনের আবেদন জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন, মানববন্ধন এবং বিক্ষোভ করেন পরাজিত প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা।
এ ব্যাপারে ওই তিন প্রার্থীর সাথে কথা বলতে মুঠোফনে একাধিকবার যোগাযোগ করলে তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আরিফ হোসেন।
এ বিষয়ে গুরুদাসপুর থানা ওসি মো. উজ্জল হোসেন বলেন, মামলার স্বাক্ষীদের জবানবন্দি রেকর্ড করা হচ্ছে। তবে অধিকাংশ স্বাক্ষী এ ব্যাপারে মুখ খুলতে চাইছেন না।