জসিম সিদ্দিকী, কক্সবাজার: কক্সবাজারের রামু উপজেলার ধলিরছড়ায় বনাঞ্চলের ২৯ একর জমি দখল করে ক্রীড়া ও কারিগরি কলেজের সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দিয়েছিলেন সাবেক হুইপ কমল। দখলের প্রায় ১৫ বছর পর জমিটি উদ্ধার করে রামু উপজেলা প্রশাসন।
কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের রামুর জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের ধলিরছড়া এলাকায় ২০০৮ সালে শতাধিক চিহ্নিত সন্ত্রাসী নিয়ে বনাঞ্চলের ধলিরছড়া মৌজার ২৯ একর খাস জমি তিনি দখল করে নেন। ওই দিন তিনি হাজারো লোকজনের সামনে নিজে কক্সবাজার ক্রীড়া ও কারিগরি কলেজ নামে একটি সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেন।
১৫ বছর ধরে দখল করে রাখা সেই জমিতে কলেজ প্রতিষ্ঠা তো দূরের কথা, উল্টো ১০ একরের বেশি খাস জমি প্লট আকারে বিক্রি করে হাতিয়ে নেয়া হয় কোটি কোটি টাকা। ওই দখল করা জমি থেকে চার হাজারের বেশি সেগুন-গর্জনসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছপালা কেটে ফেলা হয় ।
অথচ ওইদিন সোনালী ব্যাংকের তৎকালীন পরিচালক ও হলমার্ক কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত কমল বলেছিলেন, এলাকার শিক্ষার্থীদের জীবনমান উন্নয়নে সরকারি জমিতে তিনি ক্রীড়া ও কারিগরি কলেজ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের টানা ১৬ বছরে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন নানাভাবে চেষ্টা করেও বেদখল হওয়া ২৯ একর জমি উদ্ধার করতে পারেনি।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটলে কমল আত্মগোপনে চলে যান। এরপর সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় রামু উপজেলা প্রশাসন কমলের দখলে থাকা ২৯ একর সরকারি জমি উদ্ধার করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে রামু উপজেলা আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানান, জায়গা দখলের এক বছরের মাথায় প্লট বানিয়ে অন্তত ১৫ একর জমি বিক্রি করেন কমল। তিনি আত্মগোপন করলেও তাঁর অনুসারীরা এলাকায় অবস্থান করে জায়গাটি পুনর্দখলের চেষ্টাও চালাচ্ছেন।
এ নিয়ে রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাশেদুল ইসলাম বলেন, ক্রীড়া ও কারিগরি কলেজ প্রতিষ্ঠার নামে সাবেক সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল সরকারি জায়গাটি অবৈধভাবে দখল করেছিলেন। সম্প্রতি জায়গাটি উদ্ধার করে সেখানে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেয়া হয়েছে। বেদখলে থাকা জমিতে ইতোমধ্যে যেসব অবৈধ স্থাপনা তৈরি করা হয়েছে, তা উচ্ছেদ করা হবে। পাশাপাশি দখলদারদের তালিকা তৈরি করে সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা দায়ের করে তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে।