শাহাজাদা এমরান, কুমিল্লা: অস্ত্র জমা দেওয়ার সরকার ঘোষিত সময় পার হলেও সংশ্লিষ্ট থানায় অস্ত্র জমা দেননি কুমিল্লা সদর আসনের সাবেক এমপি ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আ ক ম বাহা উদ্দিন বাহার, নাঙ্গলকোট উপজেলা চেয়ারম্যান সামসুদ্দিন কালু, চৌদ্দগ্রামের কাশিনগর ইউপি চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ও কুসিকের সাবেক মেয়র তাহসিন বাহার সূচনার স্বামী সাইফুল আলম রনি। এর মধ্যে ইউপি চেয়ারম্যান মোশাররফ ছাড়া অন্য ৩ জন পৃথক ভাবে থানায় জিডি করেছেন ৫ আগস্টের সংগঠিত ঘটনায় অস্ত্রলুট হয়েছে বলে।
৫ আগস্ট সরকার পতনের দিন বিকেলে বিক্ষুব্ধ লোকজন কুমিল্লা নগরীর মুন্সেফবাড়ি এলাকায় এমপি বাহারের বাড়িতে হামলার সময় অস্ত্র লুটের ঘটনা ঘটেছে মর্মে থানায় জিডি করা হয়েছে। ২০১৩ সালের ২১ এপ্রিল জেলা প্রশাসন থেকে এমপি বাহারের নামে একটি শটগানের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল। এছাড়াও এমপি বাহারের বড় মেয়ে ও কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র ডা. তাহসীন বাহার সূচনার স্বামী সাইফুল আলম রনির নামে লাইসেন্স দেওয়া শটগানও জমা দেয়া হয়নি। ২০২০ সালের ৮ জুলাই তাকে অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া হয়।
কোতোয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শিবেন বিশ্বাস বলেন, সাবেক এমপি বাহার ও তার মেয়ের জামাতার নামে ইস্যুকৃত অস্ত্র গত ৫ আগস্টের ঘটনায় হারানো গেছে বলে থানায় তাদের পক্ষ থেকে পৃথক জিডি করা হয়েছে। অস্ত্র উদ্ধারে পুলিশ কাজ করছে।
অপরদিকে নাঙ্গলকোট উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সামছুদ্দিন কালুর নামে ২০১৫ সালের ১ ফেব্রুয়ারি একটি পিস্তলের লাইসেন্স দেওয়া হয়। তিনি দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতির পদে আছেন। নাঙ্গলকোট থানার ওসি এ কে ফজলুল হক বলেন, বাড়ি থেকে গত ৫ আগস্ট অস্ত্রটি হারানো গেছে বলে কালু থানায় জিডি করেছেন। তাই অস্ত্র জমা দিতে পারেননি। এছাড়াও অস্ত্র জমা দেননি চৌদ্দগ্রাম উপজেলার কাশিনগর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মোশাররফ হোসেন।
চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি নাজমুল হুদা বলেন, ২০০৯ থেকে এ থানায় ১৮টি অস্ত্রের লাইসেন্স দেওয়া হয়। সরকার ঘোষিত সময়ের মধ্যে ১৭টি অস্ত্র থানায় জমা হয়েছে। মোশাররফ হোসেনের নামে ইস্যু করা পিস্তল তিনি আজও (শুক্রবার) জমা দেননি। ধারণা করা হচ্ছে তিনি আত্মগোপনে দেশের বাইরে চলে গেছেন। পুলিশ অস্ত্র উদ্ধারে কাজ করছে।
এর আগে ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত বেসামরিক জনগণকে দেওয়া আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স স্থগিত করা হয়। গত ২৫ আগস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্তে নির্দেশনা জারি করা হয়। গত ৩ সেপ্টেম্বরের মধ্য গোলাবারুদসহ আগ্নেয়াস্ত্র সংশ্লিষ্ট থানায় জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।