এস মিজানুল ইসলাম, বানারীপাড়া (বরিশাল) প্রতিনিধি: হত্যাচেষ্টা, চাঁদার দাবি ও মারধরের অভিযোগে বরিশাল-২ (বানারীপাড়া-উজিরপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি শাহে আলমের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) বরিশাল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে উপজেলার চাখারের বীর মুক্তিযোদ্ধার ছেলে সৈয়দ আতিকুর রহমান বাপ্পী এ মামলা দায়ের করেন। মামলায় শাহে আলম সহ তার তিন ভাই ও এক ভাগ্নে ও ১৪ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম শারমিন সুলতানা সুমি অভিযোগ তদন্ত করে সিআইডিকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার বাদী সৈয়দ আতিকুর রহমান বানারীপাড়ার চাখার গ্রামের বাসিন্দা প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ জিল্লুর রহমানের ছেলে।
মামলার অপর আসামিরা হলেন- বানারীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক সুব্রত লাল কুণ্ডু, সাংগঠনিক সম্পাদক ও বরিশাল জেলা পরিষদ সদস্য মামুন উর রশিদ স্বপন, সাংগঠনিক সম্পাদক ও বানারীপাড়া উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান নুরুল হুদা, পৌর আওয়ামী লীগের শ্রমবিষয়ক সম্পাদক পরিতোষ গাইন, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক নেতা তালুকদার, ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সুমম রায় সুমন, সাবেক সদস্য মশিউর রহমান সুমন, উপজেলা বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের আহম্মেদ রুথেন। এদের মধ্যে রিয়াজ তালুকদার সাবেক এমপি শাহে আলমের আপন ভাই, স্বপন ও নুরুল হুদা চাচাতো ভাই এবং রুথেন আপন ভাগ্নে। এ ছাড়া চার থেকে পাঁচজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
মামলার বরাতে বেঞ্চ সহকারী রেজাউল ইসলাম বলেন, ২০১৮ সালে সংসদ নির্বাচনের আগে মামলার বাদী সাবেক এমপি শাহে আলম তালুকদার গেজেটভুক্ত রাজাকারের সন্তান উল্লেখ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দেয়। শাহে আলম তালুকদার নৌকা প্রতীকে ওই নির্বাচনে এমপি নির্বাচিত হন। এরপর ২০১৯ সালের রমজান মাসে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বাদীকে বানারীপাড়া বন্দর বাজারে বেধড়ক হাতুড়িপেটা করা হয়। এতে বাদীর ডান পা অচল হয়।
এ ঘটনায় মামলা করা হলে বাদীর ওপর ক্ষিপ্ত হয় শাহে আলম। মামলা প্রত্যাহারের জন্য হত্যার হুমকি দিয়ে চাপ প্রয়োগ করা হয়। ফলে বাধ্য হয়ে মামলা প্রত্যাহার করে বাদী। এরপর বানারীপাড়া খেলাঘর পাঠাগার নির্মাণের জন্য বাদীর কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা চায় শাহে আলম ও মামলার বিবাদীরা। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় ২০২২ সালের ১০ আগস্ট শাহে আলমের নির্দেশে বিবাদীরা বাদীর বাড়িতে গিয়ে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর করে।
এ সময় তারা বাদীর স্ত্রীর গলার স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয়। এ নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে হত্যা করে সন্ধ্যা নদীতে ভাসিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। তা ছাড়া শাহে আলম এমপি থাকাসহ তার ভাইয়েরা এলাকায় বিভিন্ন পদে জনপ্রতিনিধি থাকায় এত দিন মামলা করতে পারেননি বলে বাদী উল্লেখ করেছেন।