ঢাকা
২৬শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
রাত ১২:০৪
logo
প্রকাশিত : সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২৪

পানিবন্দি কক্সবাজার, আটকা পড়েছেন হাজারো পর্যটক

টানা ভারী বৃষ্টিতে কক্সবাজার শহরের বেশিরভাগ এলাকা পানিতে তলিয়ে হয়েছে। সৈকত এলাকার হোটেল-রিসোর্ট, কটেজ জোনে জলাবদ্ধতা দেখা দেওয়ায় বিপাকে পড়েছেন পর্যটকেরা। পাঁচ শতাধিক হোটেল-মোটেলে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কয়েক হাজার পর্যটক আটকা পড়েছেন। এছাড়া সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে লাল পতাকা উড়িয়ে পর্যটকদের সমুদ্রে নামতে নিষেধ করা হচ্ছে।

বৃষ্টিতে শহরের প্রধান সড়ক, সৈকত সড়কসহ অন্তত ৩৫টি উপসড়ক বৃষ্টির পানিতে ডুবে গেছে। এতে কয়েকশো দোকানের মালামাল নষ্ট হয়েছে। হাজারো ঘরবাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন সেখানকার মানুষেরা। সব মিলিয়ে জনজীবনে নেমেছে স্থবিরতা।

ভারী বৃষ্টিতে কক্সবাজারে পাহাড়ধসে ছয়জন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের দক্ষিণ ডিককূল এলাকায় মারা গেছেন মা ও দুই মেয়ে এবং উখিয়া উপজেলার ১৪ নম্বর হাকিমপাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মারা গেছেন তিন সহোদর। নিহতরা হলেন, মিজানুর রহমানের স্ত্রী আখি মনি (২১) এবং তাদের দুই মেয়ে মিহা জান্নাত নাঈমা (৫) ও লতিফা ইসলাম (১), ক্যাম্পের ই-২ ব্লকের কবির আহমেদের ছেলে আব্দুর রহিম, আব্দুল হাফেজ ও আব্দুল ওয়াহেদ।

কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ আব্দুল হান্নান জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টা থেকে শুক্রবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় কক্সবাজারে ৫০১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। চলতি মৌসুমে একদিনে যা সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ড। ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকতে পারে। বাতাসের তীব্রতাও বেশি থাকবে, যা দমকা ও ঝোড়ো হাওয়া আকারে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার বেগে বাড়তে পারে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, শহরের কলাতলী হোটেল-মোটেল জোনের প্রধান সড়কটি বৃষ্টির পানিতে ডুবে গেছে। সড়কের দুপাশের পাঁচ শতাধিক হোটেল গেস্ট হাউসে যাতায়াতের অভ্যন্তরীণ ১০টি উপসড়কও প্লাবিত হয়েছে। এতে অন্তত ২০ হাজার পর্যটক হোটেলে আটকা পড়েন। কলাতলী সড়ক থেকে সমুদ্র সৈকতে নামার সুগন্ধা সড়কটিও ডুবে আছে। সড়কে হাতে গোনা কয়েকটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক চলাচল করলেও সেগুলো অলিগলিতে ঢুকতে পারছে না।

শহরের ব্যস্ততম পাঁচ কিলোমিটারের প্রধান সড়কও পানিতে তলিয়ে গেছে। বাজারঘাটা, বড়বাজার, অ্যান্ডারসন সড়ক, টেকপাড়া, বার্মিজ মার্কেট এলাকা, বৌদ্ধমন্দির সড়ক, গোলদিঘিরপাড়, তারাবনিয়াছড়া, রুমালিয়ারছড়ার কয়েকশো দোকান, অফিস-আদালত ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে বৃষ্টির পানি ঢুকেছে।

ঢাকা থেকে ঘুরতে যাওয়া একজন পর্যটক জানিয়েছেন, তারা সপরিবারে পাঁচজন গত বুধবার কক্সবাজারে বেড়াতে যান। শুক্রবার ঢাকায় ফেরার কথা ছিল। কিন্তু জলাবদ্ধতার কারণে তারা হোটেলে আটকা পড়েছেন।

জলাবদ্ধতার কারণে রান্নাবান্না বন্ধ থাকায় হাজার হাজার মানুষ এখন খাবার ও পানীয় জল সংকটে পড়েছেন বলেও জানা গেছে।

এলাকাবাসী বলছেন, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে বৃষ্টিপাত শুরু হলেও ভারী বর্ষণ শুরু হয় দুপুর ২টা থেকে। এরপর শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত টানা ভারী বর্ষণে পুরো শহরের আট লাখ মানুষের কর্মজীবন স্থবির হয়ে পড়ে। গত ৫০ বছরেও এমন ভারী বর্ষণ দেখেননি বলে জানিয়েছেন শহরের প্রবীণ বাসিন্দারা। ভারী বর্ষণের ফলে জেলার বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ১০টি পাহাড়ে ফাটল দেখা দিয়েছে। বেশ কিছু অংশে ভূমিধসের ঘটনাও ঘটছে।

কক্সবাজার হোটেল-মোটেল গেস্টহাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম সিকদার বলেন, সহস্রাধিক পর্যটক জলাবদ্ধতায় হোটেল মোটেলে আটকা পড়েছেন। এরকম জলাবদ্ধতা এর আগে দেখিনি। মূলত শহরজুড়ে অপরিকল্পিত উন্নয়ন, পৌর কর্তৃপক্ষের অদূরদর্শী সিদ্ধান্ত ও দুর্নীতি এবং পাহাড় কাটা বেড়ে যাওয়ায় এমন ভয়াবহ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।

গেস্টহাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সেলিম নেওয়াজ বলেন, দীর্ঘ দুই মাস পর ১০ সেপ্টেম্বর থেকে সৈকতে পর্যটক আসতে শুরু করেছে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন থাকায় শুক্রবার অন্তত এক লাখ পর্যটক সমাগমের আশা ছিল। কিন্তু বৈরী পরিবেশে অধিকাংশ পর্যটক বুকিং বাতিল করেছেন।

কক্সবাজার সদর উপজেলা এবং উখিয়া উপজেলার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পৃথক পাহাড় ধসের ঘটনায় দুই পরিবারের ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাত ৩টা থেকে ৪টার মধ্যে পৃথক এ দুর্ঘটনা ঘটে।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বিভীষণ কান্তি দাশ বলেন, পাহাড়ের ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থান থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে চারটি পৃথক টিম মাঠে কাজ করছেন।

logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ তাপস রায় সরকার
মোবাইল: +৮৮০ ১৭৩৬ ৭৮৬৯১৫
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1736 786915, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2024 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram