চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের চিলমারীতে ২বছরেও শেষ হয়নি বীরমুক্তিযোদ্ধাদের আবাসন ৫টি বীরনিবাসের কাজ। বীরনিবাস ৫টির ৭০-৮০শতাংশ কাজ করে বাকি কাজ ফেলে রাখার অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বীরনিবাস নির্মাণের কাজ করছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২২সালের ১৩আগস্ট তারিখে উপজেলায় দ্বিতীয় দফায় ৩৫টি বীরনিবাস নির্মাণের বরাদ্দ দেয় মন্ত্রণালয়। উপজেলা প্রশাসন ও প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস বীরনিবাসগুলির নির্মাণের কাজ বাস্তবায়ন করছেন। এক তলাবিশিষ্ট ৭৩২বর্গফুট আয়তনের বীর নিবাসের এই বাড়িতে দুটি শয়নকক্ষ, একটি বসার কক্ষ (ড্রয়িংরুম), একটি খাওয়ার কক্ষ (ডাইনিং), একটি রান্নাঘর, একটি প্রশস্থ বারান্দা ও দুটি শৌচাগার রয়েছে। প্রতিটি বাড়ী ১৪লক্ষ ৮হাজার ২৬৬টাকা হিসাবে ৩৫টি বাড়ীর নির্মাণ ব্যায় ধরা হয়েছে মোট ৪কোটি ৯২লক্ষ ৮৯হাজার ৩১০ টাকা।
উপজেলায় বরাদ্দকৃত দ্বিতীয় দফার ৩৫টি বীরনিবাসের মধ্যে ৩০টির কাজ শেষ হলেও বাকি ৫টির ঘরের কাজ ২বছরেও শেষ না হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ঠিকাদার ৭০-৮০শতাংশ কাজ করেই ফেলে রেখেছেন সব। কাজ ৫টি করেন উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান আজাদ জামান।
সরেজমিন দেখা গেছে, নির্মাণাধীন বীরনিবাসের ৫টি দরজা-জানালা লাগানো হয়নি। দেয়া হয়নি ইলেকট্রিক সংযোগ, দেয়াল রং করাসহ ছোট-খাট কাজ বাকি রয়েছে।
মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বীর নিবাসের ঘর পেয়ে যেন চরম ভোগান্তিতে পড়েছে রাণীগঞ্জ এলাকার বীরমুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালেক। বিছানায় শয্যাশয়ী এ মুক্তিযোদ্ধা জীবনের শেষ নিঃশ্বাস এ ঘরে ফেলতে পারবেন কিনা শঙ্কায় রয়েছেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালেকের মতো বীর নিবাসের ঘর নিয়ে চরম দূর্ভোগে পড়েছেন বালাবাড়ী হাট কিসামত বানু এলাকার বীরমুক্তিযোদ্ধা আনছার আলী, রানীগঞ্জ বাজার এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা রিয়াজুল হক সর্দার, মদনমোহন এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল ইসলাম ও ভাটিয়া পাড়ার শহিদ বীরমুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী সাহের বানু বেগম।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আনছার আলী বলেন, ঘরের অসমাপ্ত কাজ শেষ করতে বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরেও কোন কাজ হয়নি। ইউএনও ও পিআইও সাহেব শুধুই আশ্বাস দিয়েছেন। উপয়ান্তর না পেয়ে অসমাপ্ত ঘরের দরজা ও জানালায় টিনের বেড়া দিয়ে থাকতে হচ্ছে। ভুক্তভোগী মুক্তিযোদ্ধাদের অভিযোগ ওই ঠিকাদার কাজ শেষ না করেই ৩দফার বিলের টাকাও উত্তোলন করেছেন। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফ্ফর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি অত্যান্ত দুঃখজনক। কাজটি যথাসময়ে শেষ না করে মুক্তিযোদ্ধাদেরও হেয়প্রতিপন্ন করা হয়েছে।’
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী নুরুজ্জামান আজাদ জামানের সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ মোশারফ হোসেন বলেন, ইতোমধ্যে ওই ঠিকাদারকে শোকজ করা হয়েছে। ওই ঠিকাদার কাজ শেষ করার জন্য কয়েকদিন সময় চেয়েছেন।