গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি: তরুণ প্রজন্মকে বইমুখী করতে চা বিক্রির টাকায় একশত বই কিনে ছোট্ট পরিসরে পাঠাগার স্থাপন করেন চা দোকানি হারুন মিয়া। নাম রাখেন ‘হারুন পাঠাগার’। পাঠাগারটি সমৃদ্ধ করতে সহস্রাধিক বই উপহার নিয়ে এগিয়ে আসেন স্থানীয় ব্যক্তি ও বেসরকারি সংস্থা। কিন্ত বুকসেলফ না থাকায় হারুন বইগুলো সংরক্ষণ করতে পারছিলেন না। তাই বস্তবন্দি হয়ে পড়ে থাকতো বইগুলো।
বিষয়টি জানতে পেরে ময়মনসিংহের গৌরীপুর ইউএনও মো. শাকিল আহমেদ হারুনের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়ান। রোববার সন্ধ্যায় হারুন পাঠাগার পরিদর্শন করেন তিনি। পাঠাগারের বই সংরক্ষণের জন্য একটি নতুন বুকসেলফ উপহার দেন চা দোকানি হারুন মিয়াকে।
বুকসেলফ উপহার পেয়ে আনন্দে আত্মহারা হয়ে উঠেন চা দোকানি হারুন মিয়া। তিনি বলেন, এখন থেকে আমার পাঠাগারের বইগুলো আর বস্তাবন্দি হয়ে থাকবে না। পাঠাগারের সব বই বুকসেলফে শোভা পাবে। পাঠকরা দোকানে এসে পছন্দ মতো বই বুকসেলফ থেকে নিয়ে পড়েতে পারবেন। পাশাপাশি নাম-ঠিকানা নিবন্ধন করে বাড়িতেও নিয়ে যেতে পারবেন।
ইউএনও মো. শাকিল আহমেদ বলেন, গণমাধ্যমে খবর প্রকাশের পর আমি জানতে পারি বুকসেলফ না থাকায় চা দোকানি হারুন মিয়ার প্রতিষ্ঠিত হারুন পাঠাগারের বইগুলো বস্তাবন্দি হয়ে পড়ে থাকতো। অনেক বই নষ্ট হচ্ছিল। পাঠাগারের বই সংরক্ষণের জন্য তাকে নতুন বুকসেলফ উপহার দিয়েছি। পাশাপাশি সবাইকে পাঠাগারে এসে বই পড়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
হারুনের বাড়ি পৌর শহরের সতীষা মহল্লায়। অভাবের তাড়নায় স্কুল থেকে ঝড়ে পড়ে ২০১২ সালে গৌরীপুর পৌর শহরের ধানমহাল এলাকায় জালাল হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্টের বারান্দার একাংশ ভাড়া নিয়ে চা দোকান খোলেন তিনি। চা বিক্রির টাকায় বই কিনে ২০২৩ সালে একশত বই নিয়ে যাত্রা শুরু করে এই চা দোকানির প্রতিষ্ঠিত ‘হারুন পাঠাগার’।
বুকসেলফ উপহার প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন গৌরীপুর পাবলিক কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ শফিকুল ইসলাম মিন্টু, গৌরীপুর মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ফারুক হায়দার হোসেন, ইসলামাবাদ সিনিয়র মাদরাসার উপাধ্যক্ষ এমদাদুল হক, গৌরীপুর গণপাঠাগারের নির্বাহী পরিচালক আমিরুল মোমেনীন, উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী কার্যালয়ের উপসহকারি প্রকৌশলী সালাহউদ্দিন সোহেল, গৌরীপুর রক্তদান ফাউন্ডেশনের সভাপতি আশিকুর রহমান রাজিব প্রমুখ।