চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি: গত কয়েকদিন ধরে ভারতের দিক থেকে ঢেয়ে আসা পানির কারণে পদ্মা, মহানন্দা ও পুনর্ভবা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের ২টি উপজেলার ১০ ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলের ১ হাজার ৫শ’ ৫৯ হেক্টর জমির ফসল জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। আর চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর ও শিবগঞ্জ উপজেলার পদ্মা নদীর তীরবর্তী ১০টি ইউনিয়নের ২ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
বন্যায় কবলিত নিম্নাঞ্চল ইউনিয়ন হলো- সদর উপজেলার আলাতুলি, নারায়নপুর, শাহজাহানপুর ও চরবাগডাঙ্গা, শিবগঞ্জ উপজেলার উজিরপুর, পাঁকা, দুলর্ভপুর, ঘোড়াপাখিয়া ও মনাকষা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবীব বলেন, উজানের ঢলে গত সপ্তাহ ধরে পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় ১১ সেন্টিমিটার পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। পদ্মায় পানি বিপদসীমা ধরা হয়েছে ২২ দশমিক ০৫ মিটার। বর্তমানে পদ্মার পানি বিপদসীমার মাত্র ৮০ সেন্টিমিটার নিচ নিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে, কয়েক দিনের মধ্যে নদীর পানি কমতে শুরু করবে বলে জানান এই কর্মকর্তা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. পলাশ সরকার জানান, পদ্মার পানি বৃদ্ধির কারণে শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁকা, উজিরপুর, দুর্লভপুর ও সদর উপজেলার নারায়ণপুর, আলাতুলী, শাহাজাহানপুর, চরবাগডাঙ্গা ইউনিয়নের ১ হাজার ৫শ’ ৫৯ হেক্টর মাসকালাই, রোপা আউশসহ সবজি পানি নিচে ডুবে গেছে। ডুবে যাওয়া মাসকালাইয়ের মধ্যে রয়েছে শিবগঞ্জ উপজেলার ১ হাজার ২৫০ হেক্টর ও সদর উপজেলায় ২১২ হেক্টর। তিনি আরো জানান, দুইটি উপজেলার প্রায় ৫ হাজার ৩১৫ জন কৃষকের
মাসকালাই, আউশ ধান, গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজ, চিনা ও আখ ফসলের ক্ষতি হয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা নারায়ণপুর ইউনিয়নের মোঃ সাদ্দাম হেসেন বলেন, ১০ থেকে ১৫ দিন আগে ১২ বিঘা জমিতে মাসকালাই বীজ ছিটিয়ে ছিলাম। হঠাৎ করে পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আমার সব জমির মাসকালাই জলমগ্ন হয়ে গেছে। এদিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার নারায়ণপুর দারুল হোদা আলিম মাদ্রাসার শ্রেণীকক্ষে পানি প্রবেশ করায় ছাত্রদের পাঠদান বন্ধ রয়েছে।
নারায়ণপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাজির হোসেন জানান, হঠাৎ করে পানি বৃদ্ধির ফলে চরাঞ্চলের বিপুল পরিমাণ জমির মাসকালাই ডুবে যাওয়ায় নষ্ট হতে বসেছে। বেশি দামে মাসকালাই বীজ কিনে বপন করে তা ডুবে যাওয়া কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে।
শিবগঞ্জ উপজেলার পাঁকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক জানান, শিবগঞ্জ উপজেলায় পাঁকা ইউনিয়নের ২ হাজার ৫’শ কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ ত্রাণ ও পুনর্বাসন শাখার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মীর আল মনসুর শোয়াইব জানান, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে একটি সভায় বন্যা প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এরই মধ্যে বন্যা মোকাবেলায় যাবতীয় প্রস্তুতি নিয়েছে জেলা প্রশাসন।