শ্রীবরদী (শেরপুর) প্রতিনিধি: শেরপুরের শ্রীবরদীতে একদিনের ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে কয়েক হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। রাস্তা ডুবে যাতায়াতের যানবাহন বন্ধ হয়ে গেছে। ডুবে গেছে ধান খেত, ভেসে গেছে মৎস্য খামার। পানি উঠেছে বাজারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে। হঠাৎ আকস্মিক বন্যায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে লোকজন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার শেখ জাবের আহমেদ বন্যা কবলিত বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছেন। তিনি বলেন, পানিবন্দী পরিবারের তালিকা করা হচ্ছে। সহায়তা কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক খোঁজ খবর রাখা হচ্ছে।
শুক্রবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার রানীশিমুল ইউনিয়ন ও সিংগবরুণা ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়ে লোকজন পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। বালিজুড়ি, মালাকোচা, হালুয়াহাটি, বিলভরট, চক্রপুর, টেঙ্গরপাড়া, ভায়াডাঙ্গা বাজার, আশান্দিপাড়া, শিমুলকুচি, রানীশিমূল, কর্ণঝোড়া, মাটিফাটা, বড়ইকুচি সহ বিভিন্ন এলাকার মানুষজন পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। ইতোমধ্যেই ভায়াডাঙ্গা বাজারের সাথে কর্ণঝোড়া, বালিজুড়ি ও ঝিনাইগাতির রাস্তা পানিতে তলিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। বালিজুড়ি, কর্ণঝোড়া ও ভায়াডাঙ্গা বাজারের বিভিন্ন দোকানে পানি উঠে মালামাল ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এছাড়াও ঘরবাড়ি, ফসলি জমি, সবজি ক্ষেত, মৎস্য খামার, পুকুর, পোল্ট্রি খামার সহ বিভিন্ন মালামাল পানিতে ডুবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এসব এলাকার লোকজন গৃহপালিত পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। হালুয়াহাটি গ্রামের কাশেম মিয়া বলেন, ভোরে হঠাৎ বাড়ি উঠানে পানি দেখতে পায়। দুপুরের দিকেই একমাত্র থাকার বসত ঘরটি প্রায় তলিয়ে গেছে। টেঙ্গরপাড়া গ্রামের মৎস্য খামারি সৈয়দ আব্দুল বাকী গালেব বলেন, ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে মৎস্য খামার করেছিলাম। কিন্তু আকস্মিক বন্যায় দুই একর জমির খামারের মাছ ভেসে গেছে।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সাইফুর রহমান বলেন, ৫০টির অধিক মৎস্য খামার পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে প্রায় ২ কোটি টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে তারা। উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সাবরিনা আফরিন বন্যাকবলিত বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে বলেন, ১ হাজার ৩ শত ৫০ হেক্টর জমির আমন ধান ও ৬১ হেক্টর জমির সবজি খেত সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এছাড়াও ১ হাজার ১৮৫ হেক্টর আমন ধান ও ৬৪ হেক্টর জমির সবজি আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তবে সময় যত যাচ্ছে পানি ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে করে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আরো বৃদ্ধি পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।