বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে সিরাজগঞ্জ শহরে প্রকাশ্যে ছাত্র-জনতার ওপর অস্ত্র উঁচিয়ে গুলিবর্ষণ করে ভাইরাল হওয়া সেই যুবলীগ নেতা আবু মুছাকে (৪২) কক্সবাজার থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
শনিবার (৫ অক্টোবর) রাতে র্যাব-১২ সিরাজগঞ্জ সদর কোম্পানি কমান্ডার এম আবুল হাশেম সবুজ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথা জানানো হয়।
এর আগে সন্ধ্যায় র্যাব-১২ এবং র্যাব-১৫ এর যৌথ অভিযানে কক্সবাজারের সদর উপজেলার পৌর এলাকার কলাতলী বিচ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত আবু মুছা সিরাজগঞ্জ শহরের দত্তবাড়ি মহল্লার মৃত ছানোয়ার হোসেন ওরফে ছানুর ছেলে। তিনি সিরাজগঞ্জ যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য। এছাড়াও তিনি পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী ছিলেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে র্যাব জানতে পারেন গ্রেপ্তার আসামি আবু মুছা ওরফে কিলার মুছা বিগত সময়ে সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সাবেক এমপি জান্নাত আরা হেনরীর প্রধান ক্যাডার হয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে সিরাজগঞ্জ পৌরসভা এলাকায় অস্ত্র ও ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে জোরপূর্বক জমি দখল, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজিসহ নানাবিধ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল।
এ ছাড়াও গত ৪ আগস্ট সরকার পতনের এক দফা দাবিতে সিরাজগঞ্জ শহরে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার ওপর প্রকাশ্যে অস্ত্র উঁচিয়ে হামলা চালানোর কথাও সে স্বীকার করেছে। যার ভিডিও ঘটনার পর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিল। আন্দোলন চলাকালে সিরাজগঞ্জ শহরে পৃথক সংঘর্ষ চলাকালে গুলি করে এবং কুপিয়ে যুবদল ও ছাত্রদলের ৩ নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়। এসব ঘটনায় সিরাজগঞ্জ সদর থানায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে পৃথক ৩টি হত্যা মামলা হয়েছে। গ্রেপ্তার মুছা প্রতিটি মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। গত ২ মাস যাবত গ্রেপ্তার এড়াতে সে দেশের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপনে ছিল। কক্সবাজার থেকে সুযোগ বুঝে সে সীমান্ত দিয়ে পালানোর চেষ্টা করছিল বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত সোমবার এসব মামলার অন্যতম আসামি সিরাজগঞ্জ-২ আসনের সাবেক এমপি জান্নাত আরা হেনরী ও তার স্বামী সিরাজগঞ্জ জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শামীম তালুকদার লাবুকে মৌলভীবাজারে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় র্যাব গ্রেপ্তার করেছে। তারা বর্তমানে জেলা যুবদলের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক সোহানুর রহমান রঞ্জু হত্যা মামলায় সিরাজগঞ্জ থানা পুলিশের হেফাজতে ৭ দিনের রিমান্ডে রয়েছেন।