আর.কে.বাপ্পা, দেবহাটা (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি: সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় কে সামনে রেখে দেবহাটা উপজেলা ও থানা প্রশাসন সহ সকল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরবিচ্ছিন্ন তৎপরতা চলছে। ইতিমধ্যে তুলির শেষ আঁচড়ে দেবীর আগমনী বার্তা জানান দিয়ে প্রতিমার মাটির কাজ শেষে রং তুলির আঁচড়ের কাজ শেষ। দেবীর আগমন ধ্বনি বেজে গিয়েছে আকাশে বাতাসে।
বুধবার (৯ অক্টোবর) ষষ্টীর মধ্য দিয়ে শুরু হবে দুর্গাপূজা। দুর্গা দেবীর আগমন ও প্রস্থানের বাহন নিয়ে এবং তার ফলাফল নিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে বহু প্রথা প্রচলিত আছে। দেবী দুর্গা বা তার পুত্র কন্যাদের নিজস্ব বাহন থাকলেও দুর্গার আগমন ও প্রস্থান বিষয়ে প্রতিবছরই আলাদা আলাদা প্রথার উল্লেখ পাওয়া যায়। আর দেবীর এই বাহন বিষয়ে হিন্দুশাস্ত্র অনুযায়ী মর্তালোকে সারাবছর কেমন যাবে সেটা উল্লেখ করে থাকে। এবছর দেবী দুর্গার আগমন হবে দোলা বা পালকিতে। শাস্ত্রমতে বলা হয়, দেবীর আমন দোলা বা পালকিতে হলে তার ফল হয় মহামারী বা দূর্ভোগের সমান। আর চলে যাবের ঘোটক বা ঘোটক বা ঘোড়ায়।
এবছর উপজেলার ২১টি পূজা মন্ডপে পূজা উদযাপন করা হবে বলে জানা গেছে। উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে যে ২১টি পূজা মন্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে সেগুলো হলো কুলিয়া ইউনিয়নের বহেরা দূর্গাপূজা মন্ডপ, কুলিয়া ঘোষপাড়া দুর্গাপূজা মন্ডপ, শ্যামনগর পশ্চিমপাড়া দুর্গাপূজা মন্ডপ, বালিয়াডাঙ্গা দুর্গাপূজা মন্ডপ, হিজলডাঙ্গা দুর্গাপূজা মন্ডপ, শ্যামনগর পূর্বপাড়া দুর্গাপূজা মন্ডপ ও সুবর্নাবাদ দুর্গাপূজা মন্ডপ, পারুলিয়া ইউনিয়নের সন্ন্যাসখোলা সার্বজনীন দুর্গাপূজা মন্ডপ, উত্তর পারুলিয়া চারা বটতলা দুর্গাপূজা মন্ডপ, দক্ষিন পারুলিয়া জেলেপাড়া দুর্গাপূজা মন্ডপ, নোড়ারচক দুর্গাপূজা মন্ডপ, বড়শান্তা দুর্গাপূজা মন্ডপ, মাঝ পারুলিয়া দূর্গাপূজা মন্ডপ ও উত্তর কোমরপুর দূর্গাপূজা মন্ডপ, সখিপুর ইউনিয়নের পালপাড়া দুর্গাপূজা মন্ডপ, কোড়াঁ পাকড়াতলা দুর্গাপূজা মন্ডপ, নওয়াপাড়া ইউনিয়নের গাজীরহাট দুর্গাপূজা মন্ডপ, দেবহাটা সদর ইউনিয়নের ফুটবল মাঠ দুর্গাপূজা মন্ডপ, দেবহাটা বাজার দুর্গাপূজা মন্ডপ, টাউনশ্রীপুর দুর্গাপূজা মন্ডপ ও টাউনশ্রীপুর পালপাড়া দুর্গাপূজা মন্ডপ।
ইতিমধ্যে পূজা উদযাপনে সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষেরা বিভিন্ন আয়োজন সম্পন্ন করেছে। প্রতিমা শিল্পীরা জানান, নিখূঁত মূর্তি তৈরীতে করণীয় সব রকম উপকরন ব্যবহার করা হয়েছে। দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে প্রতিমার মাটির কাজ শেষে রং তুলির আঁচরে প্রতিমাগুলো জীবন্ত করে তুলেছেন তারা। এবছর সরকারভিাবে যেভাবে নির্দেশনা দেয়া আছে সেভাবে পূজা উদযাপনের জন্য দেবহাটা উপজেলা প্রশাসন ও থানা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পৃথক পৃথক ভাবে মন্দির কমিটির নেতৃবৃন্দকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
দেবহাটা থানার অফিসার ইনচার্জ ইদ্রিসুর রহমান জানান, এবছর দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে আইনশৃ্খংলা বাহিনী সদা তৎপর। ইতিমধ্যে উপজেলার মধ্যে ৩/৪ টি মন্ডপে জনসমাগম বেশী হওয়ার জন্য সেখানে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। এছাড়া পুলিশ, আনসার, বিজিবিসহ সকল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বয়ে পৃথক পৃথক টিম তৈরী করা হয়েছে।
দেবহাটা উপজেলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আসাদুজ্জামান জানান, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজাকে শান্তিপূর্ন ও নির্বিঘ্নে উদযাপন করার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে। সরকারী নির্দেশনার আলোকে সকল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা ও মন্দির কমিটির নেতৃবৃন্দকে দিক নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পূজা কমিটির নেতৃবৃন্দের সাথে মিটিং করে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এছাড়া নিয়মিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল, কন্ট্রোল রুম ও মনিটরিং টিম গঠন করা হয়েছে।