শাহাজাদা এমরান, কুমিল্লা: কুমিল্লা নগরীর নানুয়া দিঘির পাড়ে পূজা মন্ডপে কোরআন রাখার জেরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনার তিন বছর পরও অপরাধীদের সাজা হয়নি। শেষ হয়নি বিচারকাজও। জানা যায়নি এই ঘটনার প্রকৃত অপরাধীকে।
জানা যায়, ২০২১ সালের ১৩ অক্টোবরের সেই ঘটনার পর কুমিল্লার বিভিন্ন থানায় মোট ১২টি মামলা দায়ের হয়েছিল। পুলিশ জানায়, এরমধ্যে ছয়টি মামলার অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দুটি মামলায় ১০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছে সিআইডি। বাকি চারটি মামলায় ৯৯ জনের বিরুদ্ধে দন্ডবিধি ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে।
অভিযোগপত্র দেওয়ার পরও আদালতে কোনো মামলারই বিচার শুরু হয়নি বলে জানিয়েছেন সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমান।
অন্যদিকে পিবিআই তাদের তদন্ত করা চারটি মামলার মধ্যে দিলিপ দাস হত্যা মামলাসহ তিনটি মামলায় অভিযোগপত্র দাখিল করেছে। আর দেবিদ্বারের ধর্মীয় অনুভূতিকে আঘাত মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে বলে জানিয়েছেন পিবিআই পরিদর্শক হেলাল উদ্দিন আহমেদ।
কুমিল্লা নগরীর নানুয়ার দিঘির পাড়ে যে মণ্ডপ ঘিরে সহিংসতা হয়েছিল সেই ঘটনায় সিআইডি কুমিল্লা নগরীর লস্করপুকুর এলাকার নুর আহমেদ ও আমেনা বেগমের ছেলে ইকবাল হোসেনসহ মোট পাঁচ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দায়ের করেছে। তবে ইকবাল হোসেন ছাড়া অন্যরা বর্তমানে জামিনে রয়েছেন।
কুমিল্লা আদালতের পুলিশ পরিদর্শক মজিবুর রহমান জানান, তিনটি মামলায় চট্টগ্রামের সাইবার ট্রাইবুনালে অভিযোগপত্র দাখিল করা আছে। মণ্ডপে হামলার ঘটনা সংশ্লিষ্ট প্রত্যেকটি মামলারই তদন্ত সম্পন্ন করেছে পুলিশ। অভিযোগ গঠনের শেষে বিচার সম্পন্ন করতে সাক্ষীদের জেরা ও যুক্তিতর্ক শুনানি বাকি। বিচার শুরুর বিষয়ে জেলা পাবলিক প্রসিকিউটর জহিরুল ইসলাম বলেন, মণ্ডপে হামলার মামলাগুলো এখনও বিচারের জন্য প্রস্তুত হয়নি।
এ ব্যাপারে মন্তব্য জানতে চাইলে জেলা পূজা উৎযাপন কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নির্মল পাল বলেন, মণ্ডপে হামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মামলাগুলোর প্রকৃত অবস্থা একমাত্র পুলিশই বলতে পারে।
উল্লেখ্য, জেলা পূজা উৎযাপন কমিটির তথ্য অনুযায়ী এবার কুমিল্লায় মোট ৭৭৭টি মণ্ডপে দুর্গাপূজার আয়োজন হচ্ছে।