মাহমুদুল হাসান, সাটুরিয়া (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি: সাটুরিয়া সদর থেকে দরগ্রামের দূরত্ব ৫ দশমিক ৮৫ কিলামিটার। দীর্ঘদিনেও এই সড়কটির সংস্কার কাজ শেষ না হওয়ায় প্রতিদিন দুর্ভোগের মধ্যে পড়ছে সাধারণ মানুষ। প্রতিদিন উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি ব্যবহার করে উপজেলায় এসে বিভিন্ন ধরনের সেবা নিয়ে থাকেন। স্কুল, কলেজ, অফিসগামী মানুষ বিশেষ করে হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগীরা সব চেয়ে বেশি দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। বাধ্য হয়ে অনেকে জেলায় গিয়ে হাসপাতালে সেবা নিচ্ছেন। ব্যবসায় প্রসারের দিক দিয়েও এই সড়কটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রকল্পের কাজ দুই বছরে বাস্তবায়ন করার কথা থাকলেও তিন বার প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ালেও সড়ক সংস্কারের কাজ শেষ হয়নি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাজের কচ্ছপ গতি ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তদারকির অভাবে কাজ শেষ হচ্ছে না বলে মনে করছে এলাকাবাসী।
উপজেলা এলজিইডি সূত্রে জানা যায়, সাটুরিয়া-দরগ্রাম সড়কটি ব্যবহারে অনুপযোগী হওয়ায় সড়কটির সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়। রাস্তাটির সংস্কারে ব্যয় ধরা হয় ৯ কোটি ২০ লাখ ৭২ হাজার টাকা। মানিকগঞ্জের হোসাইন কনস্ট্রাকশন নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সড়ক সংস্কারের কাজ পায়। চুক্তি অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটি ২০২১ সালের জুলাই মাসে সংস্কার কাজ শুরু করে যা ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে শেষ হওয়ার কথা ছিলো। প্রকল্পের মেয়াদ তিন বার বাড়ানো হলেও এখন পর্যন্ত সড়কের সংস্কারের কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি।
কুড়ি কাহুনিয়া ঘিওর গ্রামের বাসিন্দা মো.আকবর আলী বলেন, আমাকে প্রায় প্রতিদিন আমার ব্যবসার কাজে এই রাস্তাটি ব্যবহার করে সাটুরিয়া সদরে যেতে হয়। রাস্তাটি দীর্ঘদিন যাবত ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে আছে। বৃষ্টি হলে এই রাস্তা দিয়ে যাওয়া যায় না। রাস্তা শুরু করার ৩ বছর হলেও এখন পর্যন্ত শেষ হয়নি। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের কোন মাথা ব্যথা নেই। কবে এই রাস্তার কাজ শেষ হবে তা আল্লাহ জানেন। তিনি অতি দ্রুত রাস্তাটির কাজ শেষ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
মাসুদ নামের এক সিএনজি চালক জানান, রাস্তাটির অবস্থা খারাপ হওয়ায় অনেক সময় দুর্ঘটনা হয়। গাড়িতে থাকা যাত্রীরা অনেক সময় আহত হয়। বিশেষ করে গাড়িতে গর্ভবতী নারী ও মুমূর্ষু রোগী নিয়ে গেলে অনেক সময় তাদের অবস্থা আরো খারাপ হয়ে যায়।
সাটুরিয়া উপজেলা উপ—সহকারী প্রকৌশলী মো. ইকবাল হোসেন বলেন, এখন পর্যন্ত ৭৫ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়ে হয়েছে। এ পর্যন্ত ৩ বার প্রকল্পের মেয়াদ বাড়নো হয়েছে।ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কেন কাজ শেষ করতে পারছে তা বলতে পারছি না।
হোসাইন কনস্ট্রাকশন এর ম্যানেজার মো. ইব্রাহিম বলেন, নির্মাণ সামগ্রীর দাম বৃদ্ধি ও অর্থ সংকটের কারণে সংস্কারের কাজ বন্ধ ছিলো। এখন আবার কাজ আবার শুরু করা হবে। অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে বাকি দেড় কিলোমিটার রাস্তার কাজ শেষ করা হবে।
এ বিষয়ে সাটুরিয়া উপজেলা প্রকৌশলী মো. ইমরুল হাসান বলেন, এখন সড়ক সংস্কারের কাজ চলছে। বর্তমানে দেড় কিলোমিটার সড়কের কাজ বাকি আছে। এ বছরের নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে এই সড়কের সংস্কারের কাজ শেষ হবে আশা করা যাচ্ছে জানান তিনি।