ঢাকা
২২শে অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
রাত ৯:০৮
logo
প্রকাশিত : অক্টোবর ২২, ২০২৪

টাঙ্গাইলে অস্থির চালের বাজার, বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি: খুচরা বাজারে মানভেদে সব ধরনের চালের দাম বাড়তি। টাঙ্গাইলের চালের আড়ত ও বাজারের বিভিন্ন মুদি দোকানে প্রতি কেজি মোটা চাল ৬০-৬২ টাকা ও মিনিকেট চাল কেজিপ্রতি ৭২ থেকে ৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত তিন মাসের ব্যবধানে প্রতি ২৫ কেজির বস্তায় বেড়েছে ২৫০-৩০০ টাকা। আর এ কারনে ক্রেতাকে প্রতি কেজিতে বাড়তি গুণতে হচ্ছে ১০-১২ টাকা। চালের হঠাৎ এ দরবৃদ্ধিতে খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা মিল মালিকদের দায়ী করেছেন। অন্যদিকে মিল মালিকরা বলছেন, অবৈধ মজুতদারির কথা। তারা বলেছেন, অবৈধভাবে ধান, চালের মজুতের কারণে দাম বাড়ছে। মজুত ধানের দাম বেড়ে যাওয়ায় কৃষকরা এর সুফল না পেলেও বেশি দামে চাল কিনতে হচ্ছে ভোক্তাদের। এতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন স্বল্প আয়ের মানুষ।

জেলার পার্ক বাজার, ৬ আনি বাজার ও সিটি বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, কয়েক মাসের ব্যবধানে মোটা চাল হাসকি-২৯ প্রতি কেজিতে দশ টাকা থেকে বারো টাকা বেড়ে ৫০ টাকা থেকে ৬০-৬২ টাকা, কাটারী নাজির ৭৫, কাটারী ভোগ ৮০, বি আর ২৯ ৬০, মিনিকেট ৭৫, চিনিগুড়া ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থতির পর মোকামে সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে। এছাড়া বাজারে চালের সরবরাহও কম। যার প্রভাব পড়েছে দামের ওপর।

জেলার বিভিন্ন ধানের হাট ঘুরে দেখা গেছে, কিছুদিন আগে বি আর ২৯ প্রতি বস্তা (৭৫ কেজি) ধান বিক্রি হতে ২ হাজার ৫০০ টাকায়। আজ তা বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার টাকায়। অর্থাৎ অল্পকিছু দিনের ব্যবধানে প্রতি বস্তায় ধানের দাম বেড়েছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা।

৬ আনি বাজারের খুচরা চাল ব্যবসায়ী মেসার্স খন্দকার ট্রেডিং এর স্বত্বাধিকারী খন্দকার আমির হোসেন হারুন জানান, রাইস মিলগুলোতে এখন ধানের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় বাজারে বেড়েছে ধানের দাম। কিছুদিন আগেও রাইস মিলগুলো ঢিলেঢালাভাবে চললেও বর্তমানে মিল মালিকরা চাল উৎপাদন বাড়িয়ে দিয়েছেন। ফলে ধানের চাহিদা কিছুটা বেড়েছে। ভরা আমন মৌসুমে ধানের দাম তেমন বেশি না থাকলেও এখন মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় এর সুফল পাচ্ছেন না কৃষক।

নাগরপুর উপজেলার শাহাজানী বাজারে ধান বিক্রি করতে আসা কৃষক সামেজ মিয়া জানান, আবাদের সময় দোকানে থাকা বকেয়া সারের দাম আর শ্রমিকের মজুরি পরিশোধ করতে কাটা-মাড়াই শেষে কম দামে ধান বিক্রি করতে হয়েছে। এখন কৃষকের কাছে ধান নেই। ধান আছে মজুতদারদের কাছে। তাই ধানের দাম এখন বাড়লে কৃষকের লাভ নেই, লাভ করছে মজুতদাররা।

এদিকে ধানের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় বাজারে বেড়েছে চালের দাম। টাঙ্গাইল পৌর শহরের বাসিন্দা ৬ আনি বাজারে চাল কিনতে আসা মজনু মিয়া জানান, হঠাৎ চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় চাল কিনতে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। প্রতি ২৫ কেজির বস্তায় দাম বেড়েছে ৩০০টাকা। আগে বারো বা বারো শ ৫০ টাকায় ২৫ কেজির ১ বস্তা চাল পাওয়া যেত আর এখন ১ বস্তা চাল পনের শ টাকা দিয়ে কিনলাম। বড় লোকগো চালে বস্তায় বাড়লো ৫০-১০০ টাকা আর গরীবের চালে বাড়লো ৩০০ টাকা। এটা কেমন বিচার।

চাল ব্যবসায়ী আল আমিন জানান, সরকারে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় খোলাবাজারে ৩০ টাকা কেজির চাল বিক্রিসহ বিভিন্ন কর্মসূচি সচল থাকলেও চালের বাজারে এর প্রভাব নেই। এ কারনে মোটা চাল বিআর ২৯ এর উপর ব্যবসায়ীদের নজর বেশি। কারন বিআর ২৯ সব চেয়ে বেশি বিক্রি হয়ে থাকে। খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় যেসব মোটা চাল ৩০ টাকা কেজি হিসেবে সরবরাহ করা হয় তা বেশিরভাগ মানুষ খেতে পারে না। এ কর্মসূচির চাল যেহেতু সবাই কিনতে ইচ্ছুক না তাই চালের বাজারে চাপ বৃদ্ধি পাওয়ায় মিল মালিকরা দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।

৬ আনি বাজারের চাল বিক্রেতা মেসার্স রাহাত ট্রেডার্স এর স্বত্ত্বাধিকারী মোঃ আবুল হোসেন জানান, মিল মালিকদের কাছ থেকে বেশি দামে চাল কিনে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে তাদের। তারা দাম কমালে আমরাও দাম কমিয়ে দেবো।

চালের মূল্য বৃদ্ধি প্রসঙ্গে ঘাটাইল উপজেলার শুভেচ্ছা এগ্রো ফুড প্রোডাক্টস লিমিটেড এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিপ্লব চন্দ্র পাল বলেন, অনেক ব্যবসায়ী নীতিমালাকে তোয়াক্কা না করে স্টক বিজনেসের নামে বিভিন্ন ভোগ্যপণ্য মজুত করছেন। অনেক বড় বড় কৃষকও ধান মজুত করেছেন। মিল মালিকরাই এসব ব্যবসায়ী ও কৃষকদের কাছ থেকে চড়া দামে ধান কিনছেন। চালের বাজার বেশি হওয়ার এটাও একটা কারণ। তাছাড়া মিল মালিকদের উৎপাদন খরচও বেড়েছে।

logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ তাপস রায় সরকার
মোবাইল: +৮৮০ ১৭৩৬ ৭৮৬৯১৫
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1736 786915, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2024 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram