রাজবাড়ী প্রতিনিধি: রাজবাড়ীতে পদ্মা নদীতে শত শত জেলে ইঞ্জিন চালিত নৌকা নিয়ে রাত দিন একই ভাবে ইলিশ শিকার করে চলেছে। পুলিশ তৎপরতা খুবই সীমিত। প্রশাসনের অভিযান পরিচালনা করা লোকজনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নদীতে শিকার করা ইলিশ পদ্মার বাঁকে বাঁকে হাট বসিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে।
তবে গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র বলেন, সেনাবাহিনীর সদস্যদের সাথে নিয়ে মাঝে মাঝে অভিযান করা হচ্ছে। নদীতে মা ইলিশ রক্ষা অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তবে নৌযান সংকটে অভিযান পুরাপুরি সফল করা সম্ভব হচ্ছে না।
সরেজমিন ঘুরে পদ্মা নদীর রাজবাড়ীর, ধাওয়াপাড়া ফেরিঘাট, গোয়ালন্দ উপজেলার ছোটভাকলা ইউনিয়নের অন্তারমোড় থেকে দৌলতদিয়া ইউনিয়নের কলাবাগান ও উজানচর ইউনিয়নের চর করনেশন পর্যন্ত নদীর সব জায়গায় শতশত মৌসুমী জেলেকে ইঞ্জিন চালিত ট্রলার নিয়ে অবৈধ কারেন্ট জাল দিয়ে ইলিশ শিকার করতে দেখা যায়। তবে এসময় বেশকিছু প্রকৃত জেলেকে নদীর পাড়ে তাবু টাঙ্গিয়ে জাল মেরামত করতে করতে অলস সময় কাটাতে দেখা যায়। এ সময় অন্তার মোড়ে জাল মেরামত কালে এরশাদ বিশ্বাস, করম আলী বিশ্বাস, মোঃ সবুর শেখসহ একাধিক জেলে আক্ষেপ করে বলেন, আমরা জালদরি নৌকা নিয়ে বসে আছি। অথচ সৌখিন জেলেরা রাত দিন ইলিশ ধরে হাজার হাজার টাকা বিক্রি করছে। পুলিশ তাদের কখনও আটক করতে আসে না।
দৌলতদিয়া ঘাট নৌ-ফারি পুলিশ ও গোয়ালন্দ উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রয়োজনীয় নৌযান ও পর্যাপ্ত অর্থনৈতিক বাজেট না থাকায় ইলিশ রক্ষা অভিযান পুরাপুরি সফল করা সম্ভব হচ্ছে না। জেলেদের শক্তিশালী ইঞ্জিন চালিত ট্রলারের সাথে প্রশাসনের দুর্বল বোর্ড কুলিয়ে উঠতে না পারায় জেলেদের আটক করা সম্ভব হয় না।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, ছোটভাকলার অন্তার মোড়, দেবগ্রামের কাওলজানি, মুন্সী পাড়া, দৌলতদিয়ার বেপারী পাড়া, বাহের চর দৌলতদিয়া, কলাবাগান, করনেশোনা সহ পদ্মার পাড়ে প্রতিনিয়ত ইলিশ বেচা-কেনা হচ্ছে। প্রতি কেজি ইলিশ ৩শ থেকে ১৫শ টাকায় বিক্রি হয়। দৌলতদিয়া ঘাটের কয়েক কিলোমিটার পূর্বে পদ্মা পাড়ের দুর্গম চড়ে জেলেদের ইলিশ বেচাকেনার অভয় কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত আড়ৎ রয়েছে। ওই আড়তে সব সময় শতশত কেজি ইলিশ হাজার হাজার টাকায় অবাদে বিক্রি হয়ে থাকে। এখান থেকে বেপারীরা পাইকারি দরে কিনে বিভিন্ন হাট বাজারে নিয়ে যায়। তবে এদের প্রতিরোধে থানা পুলিশ বা প্রশাসনের কোন তৎপরতা নেই বললেই চলে।
নৌ-পুলিশ নদীতে অভিযান চালালেও প্রয়োজনের তুলনায় তা খুবই কম। দৈনিক রাজবাড়ী সদর ও উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তারা নদীতে অভিযানে গেলে জেলেরা তাদের উপর আক্রমণ করার চেষ্টা করে। তাদের মারমুখী ভুমিকায় মৎস্য কর্মকর্তারা পিছু হঠাতে বাধ্য হয়। এ দিন দৌলতদিয়া ঘাট নৌপুলিশ ৪ জেলেকে আটক করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে নিয়ে এলে তাদেরকে জেল জরিমানা করা হয়।