শহিদ জয়, যশোর: যশোরে বাংলাদেশ কারাতে অর্গানাইজেশনের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত একটি আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট থেকে সাংবাদিকসহ ৫জনকে পুলিশের হেফাজতে নেয়া হয়েছে। শুক্রবার যশোর জিমনেশিয়ামে ওই অনুষ্ঠানে উদ্বোধন করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যশোরে থিম সং এ শেখ হাসিনার নাম উল্লেখ থাকায় অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম বিব্রত বোধ করেন এবং তিনিই পুলিশকে নির্দেশ দেন ৫জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়ার জন্য।
এই ৫জন হলো- দৈনিক স্পন্দন এর ফটো সাংবাদিক ও যশোর সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম সম্পাদক ইমরান হাসান টুটুল, কারাতে অর্গানাইজেশন যশোর জেলার শাখার সভাপতি হুমায়ুন কবীর, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, জয়তী সোসাইটির পরিচালক অর্চনা বিশ্বাস ও শেখর যশোরের সাধারণ সম্পাদক রওশন আরা রাসু।
সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, দুইদিনের কারাতের আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার শুক্রবার ছিলো উদ্বোধন অনুষ্ঠান। প্রতিযোগিতায় নেপালের ১৬জন, ভারতের দুইজন অতিথি, নেপালের একজন অতিথি এবং বাংলাদেশের ১০ জেলার মোট ৩২০ জন অংশ নেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শেষে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে শেখর যশোরের কর্মীরা নিত্য পরিবেশন করে। ওই নিত্যানুষ্ঠানের যশোরের পরিচিতি তুলের ধরার জন্য ‘থিম সং’ বাজানো হয় মোবাইল ফোনের মাধ্যমে। ওই গানের শেষের দিকে যশোরের শেখ হাসিনা আইটি পার্কের কথা উল্লেখ করা হয়। গানটি অনেক আগেই রেকর্ড করা। ওই গানে শেখ হাসিনার নাম উল্লেখ থানায় ডিসি সাহেব বিব্রিত বোধ করেন। পরে তিনি জিমনেশিয়ামের গেটে তালা ঝুলিয়ে দেয়ার নির্দেশ দিলে পুলিশ গেট বন্ধ করে দেন। সেখান থেকে তাকে এবং সভাপতি হুমায়ুন কবীর, রওশন আরা রাসু, এবং ইমরান হাসান টুটুলকে পুলিশের হাতে তুলে দেন। পুলিশ তাদের থানায় নিয়ে আসে। এছাড়া অর্চনা বিশ্বাসকে মোবাইল করে থানায় ডেকে নিয়ে তাকে হেফাজতে নেয় পুলিশ। ওই অনুষ্ঠানে অর্চনা বিশ্বাস অতিথি হিসাবে অংশ নেন। তিনি অনুষ্ঠানের শেষের দিকে হট্টোগোল শুরু হলে বাড়িতে চলে যান। পরে পুলিশ সংবাদ দেয় তাকে।
তিনি আরো বলেছেন, ওই গানটি অসতর্কতাবসত বাজানো হয়েছিল। এই জন্য প্রকাশ্যে তারা ক্ষমা চেয়েছেন। একই কথা বলেছেন, শেখর যশোরের সাধারণ সম্পাদক রওশন আরা রাসু।
সাংবাদিক ইমরান হাসান টুটুল বলেছেন, তিনি সংবাদ সংগ্রহের জন্য ওই অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন। কি কারনে তাকে পুলিশ হেফাজতে নিয়েছে তা তিনি জানেন না। একই কথা বলেছেন, জয়তী সোসাইটির পরিচালক অর্চনা বিশ্বাস। তার দাবি তিনি অতিথি হিসাবে সেখানে গিয়েছিলেন।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে কথা বলার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
এ বিষয়ে কোতয়ালি থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাক সাংবাদিকদের বলেছেন, তিনি ডিসি সাহেবের নির্দেশ পালন করেছেন মাত্র। ৫জনকে থানায় নিয়ে এসে সসম্মানে রাখা হয়েছে। ডিসি বা এসপি সাহেব পরবর্তীতে যে নির্দেশ দেবেন সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।