গাজী জয়নাল আবেদীন, রাউজান (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি: চট্টগ্রামের রাউজানে বেপরোয়া গতির বাসের ধাক্কায় মো. সাব্বির উদ্দিন (১৭) নামের এক কলেজ ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাউজান সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের সামনে চট্টগ্রাম-রাঙ্গামাটি মহাসড়কে এই মর্মান্তিক দূর্ঘটনাটি ঘটে।
নিহত সাব্বির রাউজান সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী এবং উপজেলার রাউজান সদর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের জারুলতলা গ্রামের তাজ মোহাম্মদ চৌধুরী বাড়ির নাছিম উদ্দিন সওদাগরের ছেলে। ঘটনার পরপরই কলেজ থেকে বের হয়ে চট্টগ্রাম-রাঙ্গামাটি মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে কলেজের বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। তারা দুপুর ২টা ২০ মিনিট পর্যন্ত সড়কের চলাচলকারী যাত্রীবাহর বাসগুলো আটকে রাখে। তবে অন্যান্য পরিবহন স্বাভাবিক ভাবে চলাচল করতে দেয়।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কলেজ গেইট সম্মুখে সাব্বির সিএনজি চালিত অটোরিকশা থেকে নামার পর বেপরোয়া গতির ঢাকাগামী এস. আলম পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস সজোরে ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যায়। সাব্বির বাসের ধাক্কায় উড়ে গিয়ে সড়কের ডিভাইডারে গিয়ে পড়ে। এতে সে মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতপ্রাপ্ত হয়। কলেজ কর্মচারীরা তাৎক্ষণিকভাবে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে গহিরার জেকে মেমোরিয়াল হসপিটালে নেন। সেখান হতে নগরীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে ঘন্টাখানেক পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
রাউজান হাইওয়ে পুলিশ সংবাদ পেয়ে তাড়া করে ঘাতক বাসটি আটক করতে সক্ষম হলেও চালককে আটক করতে পারেনি। এই বিষয়ে রাউজান হাইওয়ে পুলিশের উপ- পরিদর্শক (এস আই) সিরাজুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছি। আমারা ঘাতক বাসটি আটক করি। তবে, ঘটনার পরই চালক পালিয়েছে। আমরা চালককে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছি। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের সাথে সমাঝোতা করা হয়েছে। তারা আগামী ২৪ ঘন্টার ভিতর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী দিয়ে সড়কের অবরোধ তুলে নেয়।
নিহতের বাবা নাছিম উদ্দিন সওদাগর বিলাপ করে বলেন, আমার ছেলেকে গাড়িতে তুলে দিয়ে জলিল নগরে দোকান খুলতে যাই, এমন সময় ফোন আসে 'আমার ছেলে জেকে মেমোরিয়াল হাসপাতালে'। আমি হাইচ নিয়ে দ্রুত জেকে হাসপাতালে যায়। সেখান হতে নগরীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে ঘন্টা খানেক পর চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। আমার ৪ ছেলের মধ্যে সে ছিল ৩ নম্বর।
শিক্ষার্থীরা দূর্ঘটনা রোধে রাউজান সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের সামনে দ্রুতসময়ে সড়কে গতিরোধকসহ জেব্রা ক্রসিংয়ের ব্যবস্থা এবং একটি ফুট-ওভার ব্রিজের দাবী জানান।