তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি: দেশের সর্ব উত্তরের পঞ্চগড় জেলার তেঁতুলিয়ায় , ভোর বেলা কুয়াশা এবং শিশির বিন্দু দেখে শীতকাল মনে হলেও এখন শরৎকাল( আশ্বিন মাস )। ঘন কুয়াশাই শীতের আগমনী বার্তা দিচ্ছে উত্তরের এই অঞ্চলে । শিশির বিন্দু ঝরছে সবুজ ধানের ডগায় ও চা গাছের পাতায় পাতায় শিশির ফোটা ভোরের আলোয় চকচক করছে। সেই শিশির ঝরা ঘাস উপেক্ষা করে চা চাষিদের যেতে দেখা যায় চায়ের সবুজ ক্ষেতে।
শনিবার (২রা সেপ্টেম্বর) ভোরে কুয়াশাছন্ন এ উপজেলার সীমান্তঘেষা বিভিন্ন জায়গায় এমন চিত্র দেখা যায় । তেঁতুলিয়া প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের সকাল ৯ টায় দেশের সর্বনিম্ন ২০.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হলেও ধীরে ধীরে তা কমে আসছে । হেমন্তের শুরুতেই এ অঞ্চলে ভোরে ঘন কুয়াশা ,দিনে গরম রাতে শীত, ‘বিরূপ আবহাওয়া বলছেন আবহাওয়া সংশ্লিষ্টরা ।
স্থানীয়রা জানায়, উত্তরের এই অঞ্চলে হিমালয় পর্বত ও কাঞ্চনজঙ্ঘা সন্নিকটে হওয়ায় এ অঞ্চলে শীতের আগমন অতি দ্রুত ঘটে অন্যান্য জেলার আগেই। পর্বতমালার প্রবাহমান হিমেল হাওয়া আর ঘন কুয়াশার চাদরে ঢেকে যাওয়ায় আগেই শীত অনুভূত হয় এই এলাকায় ।
আবহাওয়া বিদদের মতে বৈশ্বিক আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে হেমন্তের শুরুতে মৌসুমি বায়ু কম সক্রিয় থাকায় এবং উত্তরীয় বায়ুর কিছুটা প্রভাব থাকায় শেষ রাতে শীত নেমে এলে বেশ ঠান্ডা অনুভূত হয়। বিশেষ করে মৌসুমি বায়ু যখন বাংলাদেশের ওপর আর সক্রিয় থাকবে না, তখন হালকা ধরনের শীত পড়বে।
সকালে স্থানীয় হাসান আলী ও রাজিউল ইসলামের সাথে কথা হলে জানান , ভোর থেকেই ঘন কুয়াশা গাছগাছালিতে শিশির বিন্দু দেখতেছি। তবে অনেকটাই শীত অনুভূত হচ্ছে। মনে হচ্ছে শীত এবার তাড়াতাড়ি নামবে ও শীতও বেশি হবে। দিনের বেলায় গরম বেশি হওয়ার কারণে কাজে কামে একটু সমস্যা হচ্ছে ।
পরিবেশ কর্মী মাহমুদুল ইসলাম মামুন জানান, হেমন্তের শুরুতেই মাঠের ক্ষেত খামারে কুয়াশার শিশির বিন্দু পরিলক্ষিত হয়। এ যেন জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াল অশনি সংকেত! তবু মানুষ পরিমিতিবোধে নেই, সবুজায়ন সৃজনে আগ্রহনেই। তাই সবাইকে পরিবেশ ও জলবায়ু নিয়ে ভাবতে হবে, সচেতন হতে হবে। আর যেহেতু উত্তরাঞ্চল হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত। তাই এখানে শীতের আগমন আগেই ঘটে। এ কুয়াশায় বোঝা যাচ্ছে শীত পড়তে যাচ্ছে।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাশেল শাহ জানান, গত কয়েকদিন থেকে তাপমাত্রা উঠানামা করছে এবং সকালে হঠাৎ করে চারপাশ কুয়াশায় ঢেকে যায়। ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত ঘন কুয়াশা দেখা গেছে। আজ (শনিবার) সকাল ৯ টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ২০.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং শুক্রবার পহেলা নভেম্বর রেকর্ড করা হয়েছিলো সর্বনিম্ন ২৩.০ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ৩১শে অক্টোবর বৃহস্পতিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকড করা হয়েছিল ২১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এখন দিন যত যাবে তাপমাত্রা তত কমতে থাকবে।