শাহাজাদা এমরান, কুমিল্লা: কুমিল্লার লালমাই উপজেলা প্রতিষ্ঠার ৭ বছর হলেও ভূমি সেবায় চরম দূর্ভোগের কবলে পড়েছে হাজারও মানুষ। এই উপজেলার বাকই উত্তর ইউনিয়নের ২০ গ্রামের মানুষ ভূমি সেবা নিতে হয় পার্শ্ববর্তী উপজেলা লাকসাম থেকে। দীর্ঘদিনের ভোগান্তি নিরসনে ভূমিকা নেই কর্তৃপক্ষের।
জানা যায়, ২০১৭ সালে কুমিল্লার ১৭তম উপজেলা হিসেবে ৯টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত হয় লালমাই উপজেলা। তারমধ্যে, লাকসাম উপজেলা থেকে একটি ইউনিয়নের আংশিক অংশ নিয়ে গঠিত হয় বাকই উত্তর ইউনিয়ন। যার কারনে ভূমি সেবা পূর্বের ন্যায় এখনো চালু রয়েছে। আর তাই ইউনিয়নের ২০ গ্রামের মানুষের যাবতীয় ভূমি সংক্রান্ত সেবা সমূহ নিয়ে প্রতিনিয়ত ভোগান্তির কবলে পড়তে হচ্ছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে লালমাই উপজেলার অধীনে ভূমি সেবা কার্যক্রম চালু চেয়েছেন এখানকার মানুষ।
রফিকুল ইসলাম নামক একজন বলেন, লাকসামের এমপি তৎকালীন স্বৈরাচার সরকারের স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলামের ইশারায়ই ভূমি সেবা আলাদা করা হয়নি। কারন লুটেপুটে খেয়েছে তারই পরিবারের লোকজন। এছাড়াও, স্থানীয় কয়েকজন অভিযোগ করে বলেন, জেলা প্রশাসকের রাজস্ব শাখার অবহেলার কারনেও এগোচ্ছেনা কাজ।
বাকই উত্তর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বলেন, আমরা লাকসাম থেকে লালমাই উপজেলায় অন্তর্ভূক্ত হয়েছি দীর্ঘ ৭ বছর হয়েছে। সেই সুবাদে সকল কার্যক্রম লালমাইতে থাকার কথা কিন্তু ভূমি সংক্রান্ত সকল সেবা নিতে যেতে হয় লাকসাম সেখানে আমাদেরকে তেমন মূল্যায়নও করেনা।
লাকসাম উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সিপাতুন নাহার বলেন, এটা দীর্ঘদিন যাবৎ এইভাবে চলছে। প্রশাসনিক যখন ডিভাইডেশন হয়েছে এই বিষয়ে কেউ কাজ করেনি। তাছাড়া, সীমানা নির্ধারণটা ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন আনতে হয়। কিছু ক্ষেত্রে দেখেছি সার্ভেয়াররা কিছু কিছু কাজ করেছে, ওটার কোন ডকুমেন্ট লাকসামে নেই তবে, লালমাইতে কিছু বোধহয় আছে। এবং আমরা চেষ্টা করছি, ডিসি স্যারকে জানিয়েছি সম্ভবত অতিদ্রুত আমরা কাজ করা শুরু করবো যাতে বাকই উত্তরের কাজ গুলো লালমাই থেকেই হয়।
লালমাই উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মারজানা আক্তার বলেন, বাকই উত্তর ইউনিয়নের ভূমি সেবা লালমাই অন্তর্ভূক্ত করতে আমরা যাবতীয় কাজপত্রাদি সহ ডিসি অফিসে চিঠি দিয়েছি। এবং গত কিছুদিন পূর্বে মিটিংয়েও এই বিষয়টা নিয়ে কথা বলছি। ডিসি স্যার বলছে দিয়ে দেবো ফাইলও ফুটাপ দিয়েছে।
লালমাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার এহসান মুরাদ বলেন, ২০১৭ সালে গেজেট হওয়ার পরেও কেন এতোদিন বাকই উত্তর ইউনিয়নের ভূমি সেবা লালমাইতে অন্তর্ভূক্ত হয়নি। উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের বিষয়টি দেখা উচিত তাছাড়া, আমারা আমাদের জায়গা থেকে সকল কাগজপত্র জমা দিয়েছি অফিসিয়াল অর্ডার আসলে কাজ শুরু করে দেবো।
কুমিল্লা জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ কাবিরুল ইসলাম খান বলেন, আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি, লালমাইতে কিভাবে যাবে। কোন ভূমি অফিসে যাবে, মৌজাটা কিভাবে চিহ্নিত করবে এটার জন্য আমরা কাজ করছি। আশা করি এইটা সমাধান করতে পারবো।
কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মোঃ আমিরুল কায়ছার বলেন, অলরেডি আমরা চিঠি দিয়ে দিয়েছি কিংবা যাবে। এমন অবস্থায় আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আগেই যাওয়ার কথা ছিল কেন যায়নি আমি জানিনা। আমি যখন জেনেছি বলে দিয়েছি। এটা চলে আসবে খুব দ্রুতই চলে আসবে।