শেখ দীন মাহমুদ, পাইকগাছা (খুলনা) প্রতিনিধি: খুলনার পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনির কে আর আর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সিনিয়র ক্রীড়া শিক্ষক মিলন কুমার রায়ের বিরুদ্ধে ফের দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। সোমবার ভুক্তভোগী ছাত্রীর পিতা এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি/ সম্পাদক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।
প্রাপ্ত অভিযোগ ও ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর পিতা জানায়, কে আর আর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সিনিয়র ক্রীড়া শিক্ষক মিলন কুমার রায় দীর্ঘদিন যাবত তার মেয়েকে বিভিন্ন ভাবে কু-প্রস্তাব ও বাজে ইঙ্গিত দিয়ে আসছে। তবে তার মেয়ে জনৈকা ওই শিক্ষার্থী নাবালিকা থাকায় এবং লোক লজ্জার ভয়ে কাউকে কিছু জানাননি।
সর্বশেষ গত ২০/১০/২০২৪ এবং ২৪/১০/২০২৪ তারিখে উক্ত বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণির টেস্ট পরীক্ষা চলাকালীণ সময়ে, ওই শিক্ষক নামধারী চিহ্নিত লম্পট মিলন কুমার রায় তার মেয়ের পাশে এসে ঘোরাঘুরি করতে থাকে এবং শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে হাত দিয়ে বলে, তুমি অনেক সেক্সি, তোমার ফিগার অনেক হট। তুমি আমার বিষয়টা দেখবে আর আমি তোমার পরীক্ষার পাশের বিষয়টি দেখব। এরপর তার মেয়ে কোন রকম পরীক্ষা শেষ করে মানিকতলা বাজারস্থ তার ভাইয়ের দোকানে গিয়ে আকস্মিক কান্নাকাটি করতে থাকলে তার সাথে স্কুল থেকে বাজে কিছু হয়েছে এমনটি অনুমান করতে পেরে তার ছেলে বোনকে সাথে নিয়ে বাড়িতে আসেন। এরপর সে বিস্তারিত আমাকেসহ পরিবারের সকলকে জানায়।
এরপর ঘটনার বিস্তারিত জেনে ভুক্তভোগী ছাত্রীর পিতা ওই লম্পট শিক্ষক নামধারী মিলনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে লিখিত অভিযোগ করেছেন।
এদিকে ঘটনার জানাজানি হলে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাসহ অভিভাবকরা সোমবার দুপুরে চাকরি থেকে লম্পট মিলনকে অব্যাহতি ও অনতিবিলম্বে তার গ্রেফতার দাবিতে মিছিল করে। এসময় তারা মিলনের শাস্তির দাবিতে বিভিন্ন শ্লোগান দিতে থাকেন।
স্থানীয়রা জানান, শিক্ষক নামধারী লম্পট মিলন এর আগেও একাধিকবার এমন ঘটনা ঘটিয়েছে। যা বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হলে তাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। তবে তৎকালীন সময়ে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের সহযোগিতায় সে পার পেয়ে যায়। তবে এবারে যাতে এমন ঘৃণ্য অপরাধকারী মিলনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয় সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সকলের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তারা।
ঘটনার বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত শিক্ষক মিলন কুমার রায়ের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে একাদিকবার কল করেও সেটি বন্ধ পাওয়ায় তার মন্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ আব্দুর রহমান লিখিত অভিযোগ প্রাপ্তির বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, এ ব্যাপারে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিকে এখনও কিছু জানানো হয়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কে আর আর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মাহেরা নাজনীন জানান, বিষয়টি সম্পর্কে তিনি অবগত নন। এমনকি কোন অভিযোগও পাননি। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে তিনি আশ্বস্ত করেছেন।