ছায়েদ আহমেদ, হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি: বিদ্যালয়সমূহের বিভিন্ন উন্নয়ন খাতে সরকারি বরাদ্দ আত্মসাৎ, অধীনস্থকে হাজিরায় অনুপস্থিত দেখিয়ে ঘুষ নিয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে সিএল ছুটি লেখা, কৈফিয়ত তলবের নামে শিক্ষকদের হেনস্তা করে ঘুষ আদায়, তদন্তে বাদী-বিবাদী পক্ষ থেকে সুবিধামতো মোটা অংকের ঘুষ নিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন গায়েব করা, অর্থের বিনিময়ে শিক্ষকদের অভিযোগের আবেদন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট না পাঠিয়ে গায়েব করে ফেলাসহ নানাবিধ গুরুতর অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে হাতিয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ইউপিইও.) আ: জব্বার ও উচ্চমান সহকারী (ইউডিএ.) নাজিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে।
নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে যোগদানের পর থেকে এই শিক্ষা কর্মকর্তা (চলতি দায়িত্ব) মো: আ: জব্বার ও উচ্চমান সহকারী কাম হিসাব রক্ষক নাজিম উদ্দিন রাষ্ট্রীয় বিধি-বিধানের কোনো তোয়াক্কায়-ই করছেন না।
দাপ্তরিক ডকুমেন্টস ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, শিক্ষা অফিস পরিকল্পিতভাবে শিক্ষকদের কর্মরত পদ ও শূন্য পদ বাড়িয়ে কমিয়ে দিয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ডিপিইও.) বরাবর প্রস্তাব প্রেরণ করে সংযুক্তি আদেশ করান। উৎকোচ না দিলে জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে জুনিয়র শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেন। ইউপিইও যত্রতত্র মিথ্যা কথা বলে বেড়ান, সকালে যা বলেন বিকেলে তা অস্বীকার করেন। তার অর্থলোভ মিথ্যাচারের কারণে সহকারীরা হাতিয়ায় এসে টিকতে পারেনা। আবার যারা আসেন সেসকল অনুপস্থিত সহকর্মীদের থেকে মাসোয়ারার বিনিময়ে ব্যবস্থা না নিয়ে নিয়মিত বেতন দিয়ে দেন।
পিটিআই. প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নিম্ন ধাপে বেতনভোগী প্রায় ছয়শত শিক্ষকের মধ্যে গত এক বছরে প্রায় তিনশত শিক্ষক থেকে ২০ হাজার টাকা করে ঘুষ আদায় করে বকেয়া বিলের বরাদ্দ না এনে উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিসের যোগসাজসে তাদের বকেয়া বিল পরিশোধ করায় ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস।
এছাড়াও ২২৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্লিপ বরাদ্দ থেকে গণিত অলিম্পিয়াডের শিক্ষা উপকরণ সরবরাহের নামে বিদ্যালয় প্রতি নগদ ৬ হাজার টাকা নিয়ে শিক্ষা অফিস মাত্র দুই হাজার টাকার উপকরণ দেয়। এসকল গুরুতর অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে সম্প্রতি জাতীয় দৈনিকগুলোতে প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলার একাধিক শিক্ষক জানান, ডিপিইও. এর সাথে যোগাযোগ রক্ষা করেই এসকল অনিয়ম-দুর্নীতি করে যাচ্ছেন ইউপিইও ও ইউডিএ।
এদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে বুধবার (৩০ অক্টোবর) উপজেলার বেজুগালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এম.এন লাইজু শাহীন বলেন, রুটিন মেন্টিনেন্সের বরাদ্দকৃত চেক গ্রহন করতে শিক্ষা অফিসে গেলে ইউপিইও আ:জব্বার আমাকে অফিস সহকারী নাজিম উদ্দিনের কাছে পাঠায়। নাজিম উদ্দিন আমাকে বিভিন্ন কৈফিয়ত করে এবং পার্সেন্টেজ দাবি করে। পরে আমি চেক রেখেই চলে আসি। শুধু শিক্ষক নেতা ছাড়া আর সকল শিক্ষককে অফিস এবং নাজিম উদ্দিন এইভাবে অপমান এবং হয়রানি করে। এমন দুর্নীতি-অনিয়ম পূর্বে ছিলনা বলেও জানান এই প্রধান শিক্ষক। এতোসব সুনির্দিষ্ট অভিযোগের পরও বহাল তবিয়তে আছেন হাতিয়া ইউপিইও. আ:জব্বার ও ইউডিএ. নাজিম উদ্দিন।
এদিকে, শিক্ষা অফিসের এ সীমাহীন অনিয়মের সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছেন শিক্ষক শ্রেণির সুবিধাবাদী একটি অংশ। তাদের অনিয়মের বিরোধিতা করলেই অন্যদের হতে হয় হেনস্তার শিকার। শিক্ষা অফিস যে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে অভিযোগ পেয়েও কোন ব্যবস্থা নেননি বা তা গায়েব করে ফেলেন- তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য বিদ্যালয়সমূহ হল-
শিক্ষা অফিসের যোগসাজসে উপজেলার মধ্য চর আমানুল্যাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বিলাস কৃষ্ণ দাস দুই উপজেলায়(সুবর্ণচর সৈকত কলেজে খণ্ডকালীন) শিক্ষকতা, নিয়মিত উপস্থিত না থেকেও হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে বেতন উত্তোলন এবং বিদ্যালয়ের উন্নয়ন কাজে বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাৎ করেন। চলতি বছরের ১৮ আগস্ট থেকে ২১ আগস্ট পর্যন্ত তিনি স্কুলে উপস্থিত না থেকে ২২ আগস্ট এসে পূর্বের দিনগুলোতে স্বাক্ষর দিয়ে দেন।
ঘূর্ণিঝড় রিমেলের বাতাস পর্যন্ত লাগেনি তবুও গোপনীয়তা রক্ষা করে হাতিয়া দ্বীপের মূল ভূখণ্ডের একমাত্র বিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্তের নামে ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা বরাদ্দের চেক গ্রহন করে তাও আত্মসাৎ করেন। বিদ্যালয়টির অপর ০৩জন শিক্ষকের সাথে কথা বলে জানা যায়, তাদের কেউই জানতেন না রিমেলের এ বরাদ্ধের কথা। বিষয়গুলো ইউপিইও. এবং ডিপিইও জানারপরও বিহিত ব্যবস্থা নেননি।
বরং এ বিদ্যালয়ের অন্য সহকারী শিক্ষক ফয়সাল ইসলামকে প্রধান শিক্ষক তার অনিয়মের বিরুদ্ধে থাকার সন্দেহে শিক্ষা অফিসের ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ তারিখের ৬৫২ নম্বর পত্রের মাধ্যমে জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে শূন্যপদ ৩ টির জায়গায় দু'টি দেখিয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে সুপারিশসহ অন্য স্কুলে(ছৈয়দিয়া স:প্রা:বি:) কোন শূন্য পদ না থাকলেও শুন্যপদ ২টি লিখে সংযুক্তির প্রস্তাব প্রেরণ করেন। এই প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে ফয়সাল ইসলামকে ৩ জন শিক্ষক হতে ২ অক্টোবর ২০২৪ তারিখে প্রস্তাবিত বিদ্যালয়ে সংযুক্তি আদেশ প্রদান করে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মনছুর আলী চৌধুরী। অবৈধ উপায়ে করা সংযুক্তির আদেশটি পরে আবার বাতিলের জন্য ৬ অক্টোবর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর আবেদন দেয় শিক্ষক। কিন্তু কী কারনে আদেশটি বাতিল হবে সে সম্পর্কে কোন মন্তব্য না লিখে তারপরদিন তড়িঘড়ি করে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের পরামর্শে আদেশটি বাতিলের জন্য ৭ অক্টোবর ২০২৪ তারিখের ৭২১ নম্বর পত্র মাধ্যমে প্রস্তাব পত্র প্রেরণ করে আঃ জব্বার। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এ আদেশটি বাতিল করেন ঠিকই কিন্ত উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের করা এমন জালিয়াতির বিরুদ্ধে কোন প্রশাসনিক ব্যবস্থাই নেননি তিনি। ভুক্তভোগী শিক্ষক ফয়সাল ইসলাম জানান প্রধান শিক্ষক অকারণে শিক্ষা অফিসের মাধ্যমে তাকে হয়রানি করেছে।
দ: রাজের হাওলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাজল রানী পাল তার দুই সহকারী শিক্ষকের নানাবিধ শৃঙ্খলা পরিপন্থী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চলতি বছরের ১১ জুন উপজেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর অভিযোগ দেন। এইউপিইও. এবিএম. নুরেজ্জমান ও আকবর হুসাইন অভিযোগে সত্যতা পেয়ে তাদের তদন্ত শেষে ২৪ জুন ২০২৪ তারিখের স্মারক নং-সউশিঅ/নোয়া/হাতিয়া/২০২৪/০৯ মোতাবেক বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সুপারিশ করে প্রতিবেদন জমা দেন ইউডিএ. নাজিম উদ্দিনের নিকট। কিন্তু নাজিম উদ্দিন সে তদন্ত প্রতিবেদন গায়েব করে দেন।
হাজী লাল মিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকগণ শিক্ষা অফিসের যোগসাজসে দীর্ঘদিন বিদ্যালয়ে নানাবিধ অনিয়ম করে আসছেন। তাদের অনিয়মের বিরোধিতা করায় প্রধান শিক্ষকের বিরোধীতায় নামেন তারা।
বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক মো: মোশারেফ হোসাইন ২০ অক্টোবর থেকে ২৬ অক্টোবর পর্যন্ত ৭ দিন কর্তৃপক্ষের বিনা অনুমতিতে স্কুলে অনুপস্থিত থাকেন। তার অনুপস্থিতির বিষয়টি বিদ্যালয় দাতা সদস্যের ভাতিজা ও ছাত্র অভিভাবক মো: রাশেদ ইউপিইও কে মুঠোফোনে জানান। এতে ইউপিইও ক্ষিপ্ত হয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে দায়ী করে মোবাইল ফোনে বলেন এর জন্য আমি আপনাকে কৈফিয়ত তলব করব। পরদিন কাল্পনিক অভিযোগে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে কৈফিয়ৎ তলব করেন। ২৮ অক্টোবর প্রধান শিক্ষকের কৈফিয়ত তলবের জবাবের একদিন পর ২৯ অক্টোবর শ্রেণী কার্যক্রম চলাকালীন সময়ে প্রধান শিক্ষককে অবহিত না করে বাকি শিক্ষকদের তার অফিসে ডেকে নিয়ে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে লিখিত নেন অন্যত্র বদলি করতে।
স্কুলটির সাবেক প্রধান শিক্ষকের বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের দাতা সদস্য মো: মোস্তফা ২০২৩ সালের ১০ এপ্রিল জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার নিকট অভিযোগ দেন। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার ১৯ জুলাই ২০২৩ তারিখের ৩৮.০১.৭৫০০.০০০.০২.০১১.২২-১৫২৫ নং পত্র মোতাবেক তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এ.বি.এম. নুরেজ্জমানের নির্দেশে সংশ্লিষ্ট ক্লাস্টার অফিসার এ আবেদনের তদন্ত করেন। অভিযোগের সত্যতা পেয়ে তদন্ত কর্মকর্তা ইউডিএ. নাজিম উদ্দিনের নিকট তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। কিন্তু নাজিম উদ্দিন মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে অভিযুক্ত'র পক্ষ হয়ে তা গায়েব করে দেওয়ায় এ তদন্ত প্রতিবেদনগুলোর একটিও অদ্যাবধি আলোর মুখ দেখেনি।
নাজিম উদ্দিন থেকে এ অভিযোগসমূহের কারণ জানতে চাইলে তিনি তা পাশ কেটে যান।
হাতিয়া উপজেলার মধ্য চরভারতসেন মমতাজিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ফৌজিয়া আক্তার জেরিন শিক্ষা অফিসকে ম্যানেজ করে ২৮ এপ্রিল ২০২৪ তারিখ থেকে বিনা ছুটিতে যুক্তরাজ্যে চলে যান। প্রধান শিক্ষক নাজমুন নাহার বেগম বিষয়টি সম্পর্কে ইউপিইও আ:জব্বার বরাবর একই বছরের ০২ জুন অভিযোগ দেন। ২৮ এপ্রিল তারিখে ক্লাস্টার অফিসার এবিএম. নুরেজ্জামান স্কুল ভিজিটে আসলে উক্ত শিক্ষিকাকে অনুপস্থিত দেখান। কিন্তু চার মাস পার হয়ে গেলেও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবেদনটি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ে প্রেরণ করলেও তাদের অনিয়মের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেননি তিনি। সহকারী শিক্ষক ফৌজিয়া আক্তার জেরিন এখনো রয়েছেন যুক্তরাজ্যে।
নিঝুম দ্বীপ বাতায়ন কিল্লা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আবু বকর ছিদ্দিক উপজেলা শিক্ষা অফিস কর্তৃক দাবিকৃত উৎকোচ না দেওয়ায় তাকে বাদ দিয়ে তার জুনিয়র শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেওয়াসহ নানাবিধ গুরুতর অনিয়মের বিরুদ্ধে গত ৯ জুলাই জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর একটি অভিযোগপত্র দেন। কিন্তু উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের যোগসাজসের ফলে এ অভিযোগেরও কোনও ফল পাওয়া যায়নি।
উত্তর পশ্চিম গুল্লাখালী হাজী গিয়াস উদ্দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল কাদের উম্মাদ ও অশালীন আচরণ, শিশু নির্যাতনসহ সরকারি বরাদ্দ আত্মসাতের বিরুদ্ধে স্থানীয়দের বিক্ষোভ ও অভিযোগের ভিত্তিতে ২০২৪ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর
উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা নুরেজ্জমান ও আকবর হুসাইন তদন্ত করেন। সেই তদন্তের প্রতিফলন এলাকাবাসী এখনো দেখতে পায়নি। অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল কাদের সেই আগের মতোই স্থানীয়দের সাথে অসদাচরণ করে যাচ্ছে। বর্তমানে স্কুলটিতে উপস্থিত থাকেনা একজন শিক্ষার্থীও।
পূর্ব জোড়খালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক নাজমা আরা বেগমের বিরুদ্ধে সরকারি বরাদ্দের প্রায় ৪ লাখ টাকা আত্মসাতের বিষয়ে ২০২৩ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন একই স্কুলের সহকারী শিক্ষক মো: তাওহিদুল ইসলাম। এ অভিযোগের তদন্ত এখনো করা হয়নি। বরাদ্দ আত্মসাতের অভিযোগের বিষয়ে নাজমা আরা বেগম বলেন, শিক্ষা অফিস এ ব্যাপারে আমাকে কখনো কোনো প্রশ্ন করেননি।
এই প্রধান শিক্ষক নাজমা আরা বেগম বর্তমানে হাজী আলতাফ হোসেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত থেকে একইভাবে অনিয়ম করে যাচ্ছে বলে স্কুলটির একাধিক সহকারী শিক্ষক ও অভিভাবক'রা জানান। সহকারী শিক্ষক মেহরাজ উদ্দিন জানান, কিছুদিন আগে প্রধান শিক্ষক নাজমা আরা বেগমের অনিয়ম-দুর্ণীতির বিষয়ে সাংবাদিক এসে খোঁজ খবর নেওয়ায় বর্তমানে স্কুলে তিনি কিছুটা নিয়মিত আসেন। কিন্তু সরকারি বরাদ্দ তিনি তার ইচ্ছেমতো ব্যয় দেখান। পরীক্ষার প্রশ্নপত্র আমাদের পকেটের টাকা দিয়ে প্রিন্ট করতে হয়। ক্লাস্টার অফিসারকে জানানোর পরও তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা হয়নি। তিনি এবং তার স্বামীর(মধ্য মাইজচরা সরকারি প্রাথমিকবিদ্যালয়ের প্র.শি. আব্দুল আহাদ) বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির প্রমাণসহ গণমাধ্যমে প্রকাশ হয় বলেও ক্ষোভ জানান সহকারী শিক্ষক মেহরাজ উদ্দিন।
অভিযোগ সম্পর্কে হাতিয়া উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আ:জব্বার মন্তব্য না করে বলেন, এগুলো আমার ডিপার্টমেন্ট দেখবে।
নোয়াখালী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মনছুর আলী চৌধুরীর সাথে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি ব্যস্ততার অজুহাতে ফোন রেখে দেন।