নাসির উদ্দীন বুলবুল, গাজীপুর প্রতিনিধি: প্লাস্টিক মুক্ত বাংলাদেশ গড়তে দেশব্যাপী শুরু হয়েছে প্লাস্টিক দূষণ প্রতিরোধ কর্মসূচি'।
শনিবার সকাল দশটায় গাজীপুর মহানগরীর গাছা বঙ্গবন্ধু কলেজ মাঠে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন এবং স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংকের যৌথ উদ্যোগে অস্থায়ী বাজার প্লাস্টিক এক্সেঞ্জ স্টোর স্থাপন করা হয়, সেখানে স্থানীয় দরিদ্র তিনশত পরিবারের ব্যবহৃত সিঙ্গেল প্লাস্টিক বোতল জমা দিলেই পাচ্ছেন বিভিন্ন নিত্যপণ্য। স্থানীয় বাসিন্দারদের জন্য বসানো প্লাস্টিকের বিনিময়ে বাজার প্রোগ্রাম থেকে স্থানীয় দুস্থ তিন শতাধিক পরিবার প্লাস্টিকের বিনিময়ে বাজার করতে পেরেছে। প্রথম দিনেই প্রায় তিন টনের বেশি প্লাস্টিক সংগ্রহ করা হয়েছে।
আয়োজকরা জানান, সংগৃহীত প্লাস্টিক রিসাইকেলের জন্য কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছে। যেন প্রতিটি প্লাস্টিক রিসাইকল করার মাধম্যে পরিবেশ দূষণ রোধের পাশাপাশি প্লাস্টিক বর্জ্যকে সম্পদে রূপান্তর করা যায়।
সরেজমিন দেখা যায়, নানা নিত্যপণ্যের পসরা নিয়ে কলেজ চত্বরে বসেছে বিশাল সুপারশপ। লোকজন প্লাস্টিকের বিনিময়ে এসব পণ্য কিনছেন। বাজারে ১ কেজি প্লাস্টিকের দাম ২০-৩০ টাকা হলেও সেখানে বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা মূল্য। এক কেজি প্লাস্টিক দিয়ে এক কেজি চাল যেমন পাওয়া যাচ্ছে, তেমনি ছয়টি ডিমও পাওয়া যাচ্ছে। প্রায় ২১ টি পণ্য থেকে নিজেরাই বাছাই করে কেনার স্বাধীনতা পাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।
প্লাস্টিক এক্সচেঞ্জ স্টোরে বাজার করতে ফাতেমা বেগম বলেন, তিনি অসুস্থতার কারণে গার্মেন্টসের চাকরি হারিয়ে অসহায়। বাজার করার মতো টাকা নেই তার। আশপাশ থেকে প্রায় ১০ কেজি প্লাস্টিক কুড়িয়েছেন। ভাঙারির দোকানে দিলে ২০০-২৫০ টাকা বিক্রি করতে পারতেন। এখানে প্রায় ৭০০-৮০০ টাকার বাজার কিনতে পারছেন। ছোট সংসারে তাতেই ১৫ দিনের বাজার হয়ে গেছে তার।
আয়োজনটিতে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবীদের পাশাপাশি স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী টিম, স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংকের কর্মকর্তাবৃন্দ, কলেজ কর্তৃপক্ষ এবং শিক্ষার্থীদের বিশাল একটা টিম স্বতঃস্ফূর্ত কাজ করে গেছেন। দরিদ্ররা কুড়ানো প্লাস্টিক জমা দিয়ে কম মূল্যে নিত্যপণ্য কিনতে যেমন পারবেন, তেমনি স্থানীয় মানুষের মাঝে প্লাস্টিক দূষণের ভয়াবহতা বোঝাতে ও প্লাস্টিকবিরোধী সচেতনতা তৈরিতে এই আয়োজন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।