রমজান আলী, সাতকানিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি: চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় শ্বশুর বাড়ির নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে গলায় ফাঁস লাগিয়ে রেশমা সোলতানা রিফা (২৪) নামে এক গৃহবধুর আত্মহত্যার অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার (৯ নভেম্বর) সকাল ১১টার দিকে উপজেলার আমিলাইশ ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড পশ্চিম ডলু এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় নিহতের শ্বশুর-শাশুড়িকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়। নিহত রেশমা সোলতানা রিফা (২৪) উপজেলার কাঞ্চনা ইউনিয়নের সফর আলী সিকদার বাড়ি এলাকার আব্দুর রহমানের মেয়ে।
নিহতের বাবা আব্দুর রহমান বলেন, গত ৩ বছর আগে পারিবারিকভাবে আমাদের পার্শ্ববর্তী আমিলাইশ ইউনিয়নের প্রবাসী মহিউদ্দিনের সঙ্গে আমার মেয়ে রেশমা সুলতানা রিফার বিয়ে হয়। তাদের ২ বছর বয়সী এক ছেলে আছে, মেয়েটি দুই মাসের গর্ভবতী ছিল। মেয়েকে বিয়ের পর থেকেই তার স্বামী, ননদ, ননদের জামাই, তার মা কারণে-অকারণে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতনের পাশাপাশি কথায় কথায় মরে যেতে উসকানি দিতেন। বিষয়টি সে আমাকে জানালে আমি জামাইকে ঘটনার বিষয়ে জানতে চাই। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তিনি আমাকে হুমকি-ধমকি দেন। নিহত রিফার স্বামীর অনুরোধে রিফাকে আমার বাড়িতে ১১ মাস রেখে যায়। শ্বশুর এবং স্বামীর কথা অনুযায়ী, গত ৩ দিন আগে তার শ্বশুর বাড়ি দিয়ে আসি। দিয়ে আসার ৩ দিন পর আমার মেয়ে লাশ হয়ে গেছে। যা কোনভাবে আমি মেনে নিতে পারছি না। তারা আমার মেয়েকে গলায় ফাঁস দিয়ে মেরে ফেলেছে। আমি তাদের ফাঁসি চাই।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে রিফার শ্বশুর সাহাব মিঞা বলেন, আমার বয়স হয়েছে, কাউকে নির্যাতন করার শক্তি তো শরীরে নেই। আমার ছেলের বউ ফাঁস দিয়েছে শুনে হাসপাতালে নিয়ে যায়, তখন ডাক্তার জানায় সে মারা গেছে। আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ করা হচ্ছে।
সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তফা কামাল খাঁন বলেন, গৃহবধুর মৃত্যুর বিষয়ে ভিকটিমের বাবা থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ উপজেলার কেরানিহাটের একটি বেসরকারী হাসপাতালে গিয়ে ভুক্তভোগীর জবানবন্দি রেকর্ড করি। এ ঘটনায় নিহতের শ্বশুর-শাশুড়ি ও ননদকে পুলিশ হেফাজতে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতাল (চমেকে) পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট হাতে আসলে পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।