ঈদগাঁও (কক্সবাজার) প্রতিনিধি: সদ্য বদলির আদেশ পাওয়া কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুবল চাকমা কি বিগত বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে সরকারি সম্পদ ইউএনও'র এর গাড়ি পোড়ানোর মামলা না করেই নতুন কর্মস্থলেন যোগদান করবেন? এ নিয়ে উপজেলা জুড়ে আলোচনা-সমালোচনার শেষ নেই। তিনি যাওয়ার সময়ও কি বিগত এক বছরের মত নিজেকে বিশ্বস্ত আওয়ামী দোসর হিসেবে উপস্থাপনের দু:সাহস দেখানোর চেষ্টা করছেন এমনি প্রশ্ন সকলের।
প্রাপ্ত তথ্য মতে, বিগত বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে ঈদগাঁও উপজেলার চিহ্নিত আওয়ামী সন্ত্রাসীদের সাথে আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতাকে দমন করতে তিনিও তাদের সাথে প্রকাশ্যে মাঠে নামেন। বিগত ৫ আগস্ট আন্দোলনকারীদের দমাতে তিনি আওয়ামী সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের সাথে ঈদগাঁও বাসস্টেশনে অবস্থান নেন। এক পর্যায়ে আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতা মিছিল নিয়ে মহাসড়কে অবস্থান নিতে চাইলে প্রকাশ্যে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা ইউএনওর উপস্থিতিতেই আন্দোলনকারীদের উপর গুলিবর্ষণ করে। এতে উভয়পক্ষের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ বেঁধে যায়। তখন স্টেশন জুড়ে হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ হয়। এতে ছোট-বড় ২০/৩০ টি গাড়ি পুড়ে যায়। এর মধ্যে ইউএনওর সরকারি গাড়িও ছিল। এক পর্যায়ে ছাত্র-জনতার প্রতিরোধে টিকতে না পেরে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের সাথে ইউএনও কোন রকম পালিয়ে প্রাণে রক্ষা পান। যা তখনকার বিভিন্ন গণমাধ্যমে ভিডিও ও স্থিরচিত্রে ভাইরাল হয়। ঐ আন্দোলনে ঈদগাঁওতে এক আন্দোলনকারী নিহত ও ২০/২৫ জন গুলিবিদ্ধ হয়। যাদের অনেকে এখনো চিকিৎসাধীন।
৬ আগস্ট সরকার পতন হলেও উক্ত ইউএনও সুবল চাকমা আগের মত আওয়ামী দোসর কিছু নব্য দালাল চক্রের সাথে আঁতাত করে আওয়ামী তোষণ নীতি অব্যাহত রাখে। সরকার পতন পরবর্তী তিনমাস অতিবাহিত হয়ে গেলেও তিনি সরকারি সম্পদ ইউএনওর গাড়ি পোড়ানোর ঘটনায় রহস্যময় কারণে এখনো মামলা করেননি। আন্দোলনকারী ও বিগত ১৬ বছর যাবত আওয়ামী সন্ত্রাসীদের অত্যাচার-নির্যাতনের শিকার ভুক্তভোগীদের দাবি, এ ইউএনও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের রক্ষায় মামলা করছেন না। কারণ মামলা করলে তাদের আসামি করতে হবে। ইতিমধ্যে তার বদলির আদেশও হয়ে গেছে। তবে কি এ আওয়ামী দোসর ইউএনও ঈদগাঁও উপজেলায় বিগত এক বছর পূর্বে যোগদানের পর থেকে যেভাবে উপজেলার সর্বক্ষেত্রে আওয়ামীকরণ করেছেন, যাওয়ার সময়ও কি এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখবেন? তবে কি তিনি আওয়ামী সন্ত্রাসীদের রক্ষার মিশন হিসেবে গাড়ি পোড়ানোর মামলা না করেই বর্তমান কর্মস্থল ঈদগাঁও ত্যাগ করে নতুন কর্মস্থলে যোগদান করবেন?
গাড়ি পোড়ানোর মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে ইউএনও সুবল চাকমা বলেন, তিনি তখন মামলা করতে থানায় গিয়েছিলেন। কিন্তু থানা মামলা নেয়নি। সচেতন মহলের প্রশ্ন একজন ইউএনওর মামলা ওসি নিবেন না এটাতো হাস্যকর দাবি। তাদের দাবি এ ইউএনও বিগত একবছর উপজেলার কোন কাজ না করে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন কমিটি- সমিতিতে আওয়ামীকরণ ও লুটেপুটে আখের গোছানোর চেষ্টায় ছিলেন। উপজেলাবাসীর জন্য কিছুই করেননি।
উল্লেখ্য, অতি সম্প্রতি সংশ্লিষ্ট দপ্তরের এক আদেশে ঈদগাঁও ইউএনও সুবল চাকমাকে ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলায় এবং জেলা প্রশাসনে ভূমি অধিগ্রহণ শাখা-৩ এ কর্মরত বিমল চাকমাকে ঈদগাঁও উপজেলা ইউএনও হিসেবে পদায়ন করা হয়।