রাজিবপ্রধান, শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি: গাজীপুরের শ্রীপুরে মাদরাসা থেকে ৬ষ্ঠ শ্রেণির (১৩) এক ছাত্রীকে অপহরণের পর ধর্ষণ ও নির্যাতন করার অভিযোগ ওঠেছে স্থানীয় নাজিম উদ্দীনের বিরুদ্ধে।
এ ঘটনায় শ্রীপুর থানায় একটি মামলা হলে অভিযুক্ত নাজিম উদ্দীনকে গ্রেফতার করে জেলহাজতে পাঠায় পুলিশ। জেলে থাকাকালীন স্থানীয় মনু মিয়ার ছেলে আমির হোসেন, মৃত আবুল হাশেম মোল্লার ছেলে নাসির মোল্লা, নাজিমুদ্দিন মোল্লার ছেলে এজাজুল মোল্লা, একরামুল মোল্লা সহ আরো অনেকেই মামলার বাদিকে মামলা তুলে নিতে মারধর সহ বিভিন্ন ধরনের হুমকি প্রদান করে। আসামি নাজিম উদ্দীন ৪ মাস জেলে থেকে জামিনে বের হয়ে আবার ওই শিক্ষার্থীকে ৫ আগষ্ট অপহরণ করে।
এ ঘটনায় আবার শ্রীপুর মডেল থানায় অভিযোগ দিলেও পুলিশ মামলা না নিয়ে সাধারণ ডায়েরি নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী ছাত্রীর পিতা। পরে আদালতের মাধ্যমে অপহরণ মামলাটি করা হয়। যার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় সিআইডিতে। বর্তমানে মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে। অভিযুক্ত নাজিম উদ্দীন উপজেলার বহেরারচালা গ্রামের মৃত আবুল হাশিম মোল্লার সন্তান।
জানা যায়, গত বছরের ৩ ডিসেম্বর ওই শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে ধর্ষণ করে। অপহরণের চারদিন পর ওই শিক্ষার্থী কৌশলে ওইখান থেকে পালিয়ে আসে। পরে বিষয়টি পরিবারের কাছে জানালে চারজনের নাম উল্লেখ করে শ্রীপুর থানা একটি মামলা দায়ের করা হয়। এই ঘটনায় মামলার মূল আসামি নাজিমউদ্দিন চারমাস জেল খেটে জামিনে আসেন। বাকি আসামিরা প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করলেও পুলিশ কাউকেই গ্রেফতার করেনি। পরবর্তীরে ২৮ জুলাই চুড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় পুলিশ। এখানে মুল আসামিকে রেখে বাকি সকল আসামিকে মামলা থেকে বাদ দেয়া হয়।
এদিকে শ্রীপুর থানা পুলিশ জিডি মূলে গত (৭ নভেম্বর) সকালে ভিকটিম কে উদ্ধার করে সেভ কাস্টরিতে পাঠিয়ে দেয়।
এদিকে মামলার বাদি জানান, প্রায় এক বছর আগে আমার মেয়েকে অপহরণ করে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করে। পরে আমার মেয়ে কৌশলে ওইখান থেকে চলে এসে বিষয়টি আমাদেরকে অবগত করে। পরবর্তীতে আমরা চারজনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের করি। এই মামলার প্রধান আসামি চার মাস জেল খেটে জামিনে এসে পুনরায় আবার আমার মেয়েকে অপহরণ করে। এ বিষয়ে শ্রীপুর থানা পুলিশের কাছে মামলা দিতে গেলে পুলিশ মামলা না নিয়ে একটি জিডি নেয়। পরে আমি আদালতের মাধ্যমে একটি মামলা করি, মামলাটির তদন্তের দায়িত্বে দেয়া হয়েছে সিআইডিকে। বর্তমানে মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে। গত ৭ নভেম্বর জিডি মুলে শ্রীপুর থানা পুলিশ আমার মেয়েকে উদ্ধার করে সেফ কাস্টরিতে পাঠিয়েছে। আমার মেয়েকে কোথা থেকে উদ্ধার করেছে কিভাবে উদ্ধার করেছে এ বিষয়ে আমি কোন কিছুই জানতে পারিনি। তাছাড়া মামলা থেকে বাদ দেওয়া আসামিরা অপরাধের সাথে সরাসরি জড়িত ছিল। পুলিশ অন্যায় ভাবে তাদেরকে মামলা থেকে বাদ দিয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে। আমি পুনরায় সঠিক তদন্তের জন্য আদালতে না রাজি দিয়ে আবেদন করেছি। আমার ধারণা পুলিশ অন্যায় ভাবে এই প্রতিবেদন দিয়েছে আমি সুস্থ তদন্তের মাধ্যমে সঠিক বিচারের দাবি করছি।
এ বিষয়ে শ্রীপুর থানা উপপরিদর্শক এসআই মনিরুজ্জামান বলেন, ভিক্টিমকে উদ্ধার করে তার পিতা-মাতার নিকট দিতে চাইলে সে তার পিতা মাতার নিকট যেতে অপারগতা প্রকাশ করে। পরে ভিকটিমকে নিরাপদ হেফাজতে রাখার জন্য সেভ কাস্টরিতে পাঠানো হয়।