ঢাকা
২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
বিকাল ৫:০০
logo
প্রকাশিত : নভেম্বর ১৭, ২০২৪

ঢাকা-নড়াইল-যশোর রেল চালু ডিসেম্বরে: উৎসব নয়, হবে বিক্ষোভ

আগামী মাসের শুরুতেই ঢাকা-যশোর পথে পদ্মা সেতু ও নড়াইল হয়ে বাণিজ্যিকভিত্তিতে ট্রেন চলাচল করবে। কিন্তু এখনো বৃহত্তর যশোর এলাকার মানুষের দাবি মেনে নেওয়ার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। ফলে নতুন রুটটিতে ট্রেন চলাচল শুরুর দিনই উৎসব নয়, প্রতিবাদ বিক্ষোভ দেখাতে প্রস্তুতি নিয়েছে আন্দোলনকারীদের প্ল্যাটফরম।

বাংলাদেশ রেলওয়ের ইতিহাসে অন্যতম বৃহৎ প্রকল্প ‘পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প’।

নতুন তৈরি করা পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে এই রেলপথ ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা, গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী, নড়াইল হয়ে যশোরকে সংযুক্ত করেছে। ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি ৮০ লাখ টাকার এই মেগাপ্রকল্প থেকে ব্যয় সাশ্রয়ের লক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সরকার সম্প্রতি এক হাজার ৮৪৫ কোটি টাকা খরচ কাটছাঁট করেছে।

পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের অধীন ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত ট্রেন চলাচল আগেই শুরু হয়েছে। ভাঙ্গা জংশনের মাধ্যমে সংযুক্ত হয়েছে ফরিদপুর, রাজবাড়ী, কুষ্টিয়াসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের একাংশ।

এখন ভাঙ্গা থেকে যশোর পর্যন্ত ট্রেন চলাচল শুরু হলে প্রকল্পটি সম্পন্ন হয়। চলতি নভেম্বরের ১৫ তারিখের পর প্রকল্পের এই অংশে ট্রেন চলাচল শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ভাঙ্গা জংশনে সিগন্যালিংয়ের কাজ শেষ না হওয়ায় নির্ধারিত সময়ে ট্রেন চলাচল শুরু করা যায়নি।
পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক (পিডি) আফজাল হোসেন জানান, আগামী মাসের ১ বা ২ তারিখে ভাঙ্গা-নড়াইল হয়ে ঢাকা-যশোর বাণিজ্যিকভিত্তিতে ট্রেন চলাচল শুরু হতে পারে।

তবে সুনির্দিষ্ট তারিখ এখনো নির্ধারিত হয়নি।
নতুন এই রেলপথ চালু হলে যশোর থেকে ট্রেনযোগে রাজধানী ঢাকার দূরত্ব ও ভ্রমণের সময় কমে অর্ধেকে নামবে। মাত্র তিন ঘণ্টায় ঢাকা থেকে যশোর অথবা যশোর থেকে ঢাকা যাওয়া যাবে। তবে খুলনা রুটের ট্রেন ধরতে যশোরের যাত্রীদের ব্যবহার করতে হবে পদ্মবিলা নামে নতুন জংশন; যা শহর থেকে প্রায় ১৯ কিলোমিটার দূরে। এটা ট্রেনযাত্রীদের জন্য নতুন বিড়ম্বনা সৃষ্টি করবে।

ফলে নতুন রেলপথ চালু হলেও ট্রেনগুলো যশোর অঞ্চলের যাত্রী কতটা পাবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
এদিকে, বেনাপোল-ঢাকা রুটে দিনে দুটি, দর্শনা-যশোর-ঢাকা রুটে দুটি এবং যশোর থেকে যমুনা সেতু হয়ে ট্রেন চলাচল অব্যাহত রাখা, ট্রেনের ভাড়া সাশ্রয়ী রাখা, যাত্রীবাহী ট্রেনের সঙ্গে সবজি ও ফুলবাহী বগি সংযুক্ত করা প্রভৃতি দাবিতে যশোরে বেশ কিছুদিন ধরে নাগরিক আন্দোলন চলছে। তবে নাগরিকদের দাবি মেনে নেওয়ার কোনো লক্ষণ এখনো দেখা যায়নি।

আন্দোলনকারীদের প্ল্যাটফরম ‘বৃহত্তর যশোর রেল যোগাযোগ উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটির’ সংগঠক জিল্লুর রহমান ভিটু বলেন, আগামী ২০ নভেম্বর তাঁরা রেলসচিবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। কর্তৃপক্ষ দাবি না মানলে ট্রেন উদ্বোধনের দিনই যশোর জংশন অবরোধ করা হবে। এর মাধ্যমে যশোরের সঙ্গে সারা দেশের ট্রেন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হবে। এক প্রশ্নের জবাবে ভিটু বলেন, এখনো দাবি মানার কোনো লক্ষণ নেই।

রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ জানায়, বর্তমানে যশোর হয়ে ঢাকায় যাতায়াতের জন্য দিনে তিনটি ট্রেন রয়েছে। এর মধ্যে বেনাপোল এক্সপ্রেস ও আন্ত নগর সুন্দরবন পদ্মা সেতু হয়ে যাতায়াত করে। আর আন্ত নগর চিত্রা এখনো যমুনা সেতু হয়ে চলছে। প্রতিটি ট্রেন সপ্তাহে এক দিন বিরতি আছে। নতুন রেললাইন উদ্বোধনের পর রেলওয়ের পরিকল্পনা অনুযায়ী ঢাকা-খুলনা রুটের ট্রেনগুলো যশোরের নবনির্মিত পদ্মবিলা জংশন ব্যবহার করবে। তার মানে এই রুটের ট্রেনগুলো ১৮৮৩ সালে নির্মিত দেশের অন্যতম প্রাচীন জংশন যশোরে আসবে না। রেলওয়ের এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে যশোরের বড় অংশের মানুষের জন্য ঢাকা যাতায়াতে বেনাপোল এক্সপ্রেসই প্রধান ভরসা থাকছে।

নবনির্মিত পদ্মবিলা জংশনটি যশোর শহরের কেন্দ্রস্থল দড়াটানা ও যশোর রেলজংশন থেকে ১৯ কিলোমিটার দূরে। এটির অবস্থান যশোর-খুলনা মহাসড়ক থেকে প্রায় চার কিলোমিটার দূরে গ্রামের মধ্যে। রাস্তার ওই অংশ সংকীর্ণ। দুটি গাড়ি ক্রসিংয়ের সুযোগও নেই। জংশনটি চালু হলে এই গ্রামীণ রাস্তার ওপর চাপ বাড়বে। দুর্ভোগে পড়বে যাত্রীরা।

এমন অবস্থায় ঢাকা-খুলনা রুটের ট্রেন যশোরের যাত্রী আকর্ষণে ব্যর্থ হতে পারে বলে মনে করছেন ‘বৃহত্তর যশোর রেল যোগাযোগ উন্নয়ন সংগ্রাম কমিটির’ আহ্বায়ক কাওসার আলী। তিনি বলেছেন, দর্শনা-যশোর-ঢাকা রুটে নতুন ট্রেন সার্ভিস না দিলে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর ও মোবারকগঞ্জ স্টেশন ব্যবহারকারী যাত্রীদের ট্রেনে ঢাকা যাতায়াতের সুবিধা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে।

logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ তাপস রায় সরকার
মোবাইল: +৮৮০ ১৭৩৬ ৭৮৬৯১৫
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1736 786915, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2024 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram