সোহেল তালুকদার, শান্তিগঞ্জ (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি: গণিনগর ষোলোগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের বিতর্কিত ঘটনাকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় উভয়পক্ষের অন্তত ৪৩ জন লোক আহত হয়েছেন। যাদের মধ্য থেকে ২জনকে গুরুতর আহত অবস্থায় উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
রবিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার গণিগঞ্জ বাজারে গণিগঞ্জ গ্রামের বাসিন্দা আবদুর রউফ ও ইউপি সদস্য আবদুল আউয়াল পক্ষের লোকদের মধ্যে সংঘর্ষের এ ঘটনাটি ঘটেছে।
গুরুতর আহতরা হলেন- ইউপি সদস্য আবদুল আউয়াল পক্ষের জাকারিয়া আহমদ ও আবদুর রউফ পক্ষের ফারুক মিয়া। তাদেরকে সিলেটে পাঠানো হয়েছে। উভয় পক্ষের অন্যান্য আহতরা হলেন- চান মিয়া, রাফি মিয়া, আনফর আলী, বিল্লাল আহমদ, ইয়াসিন মিয়া, জাহাঙ্গীর আলম, মো. কামাল হোসেন, শামীম আহমদ, আবদুল ওয়াহিদ, জহির মিয়া, মো. মোসাহিদ আলী, আবুল হোসেন, মিজানূর রহমান, একরাম হোসেন ও জোনাব আলী। অন্যান্য আহতদের নাম তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, শিক্ষার্থীদের অশোভন আচরণ, সাবেক খণ্ডকালীন শিক্ষক শামীম আহমদ কর্তৃক শিক্ষার্থীদের উষ্কে দেওয়াসহ অন্যান্য অভিযোগে জেলা প্রশাসক ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবরে আবেদনপত্র দিয়ে গত ১১ নভেম্বর কর্মবিরতিতে গিয়েছিলেন গণিনগর ষোলোগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের ১৮ জন শিক্ষক-কর্মচারী। পরে একদিন পর অর্থাৎ ১৩ নভেম্বর বুধবার অভিভাবকদেন সাথে মতবিনিময় করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) বিরোদা রানী রায় ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুকান্ত সাহা। তাদের উপস্থিতিতে কিছুটা হট্টগোলও করেছিলেন উপস্থিত জনতা। বিকাল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত চলে এই মতবিনিময়। মতবিনিময় সভায় স্কুলের ছাত্রীরাও উপস্থিত ছিলেন। তখন ইয়াছিন মিয়া নামের বহিরাগত একটি ছেলে মেয়ে শিক্ষার্থীদের ভিডিও ধারণ ও ছবি তুলতে চাইলে আবদুর রউফের ছেলে শামীম আহমদ মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে ইয়াছিন মিয়াকে শাসিয়ে দেন। এ ঘটনায় তখনই কথা কাটাকাটি হয়েছে। এর জের রয়ে গিয়েছিলো। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিলো।
রবিবার আবদুল আউয়াল পক্ষের সিএনজি চালক আবদুর রব ও আবদুর রউফ পক্ষের সিএনজি চালক জহিরুল ইসলামের পক্ষে কথা কাটাকাটি হয়। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে দু’জন মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন। পরক্ষণেই উভয়পক্ষের শতাধিক লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। সংঘর্ষ চলে প্রায় দেড় ঘন্টা ব্যাপী। ইট, পাটকেল ও লাঠিসোটা নিয়ে তাদের সংঘর্ষ। তখন দিরাই-মদনপুর যানচলাচল বন্ধ ছিলো। এ ঘটনায় উভয়পক্ষের অন্তত ৪৩ জন আহত হয়েছেন।
শান্তিগঞ্জ থানার ওসি আকরাম আলী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ করলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।