পিন্টু দেবনাথ, কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় ন্যাশনাল টি কোম্পানী লিমিটেড এর ৮টি চা বাগানে প্রায় ১০ সপ্তাহের বকেয়া মজুরির দাবীতে কাজে যোগ না দিয়ে সকল কার্যক্রম থেকে বিরত রয়েছে চা শ্রমিকরা। কাজ ও মজুরি বন্ধ থাকায় চা শ্রমিকরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। তাদের মানবেতর জীবন যাপনের কারণে মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসকের বিশেষ বরাদ্দকৃত জিআর এর ৬৬.৩২ মেট্রিক টন চাল বন্টন করার উদ্যোগ নেয় জেলা প্রশাসন কার্যালয়। ৩টি ফাঁড়ি বাগানসহ ন্যাশনাল টি কোম্পানির ৮টি চা বাগানের ৬ হাজার ৬ শত ৩২ জন চা শ্রমিকদের মধ্যে ১০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়।
রোববার (১৭ নভেম্বর) সকাল ১১টায় উপজেলার মাধবপুর, মদনমোহনপুর ও পাত্রখোলা চা বাগানে উপস্থিত থেকে চাল বিতরণের কার্যক্রম উদ্বোধন করেন কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন। এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা প্লাবন পাল, মাধবপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান পুষ্প কুমার কানু, পাত্রখোলা চা বাগানের ব্যবস্থাপক স্বপন কুমার সিংহ, মদনমোহনপুর চা বাগানের ব্যবস্থাপক হুমায়ুন আহমদ, মাধবপুর চা বগানের ব্যবস্থাপক জাহাঙ্গির আলম, মাধবপুর ইউপি সদস্য মোতাহের আলী, শিব নারায়ন শীল, মকবুল আলী, নারায়ন রাজভর, বীনা রানী ও মনু দলইৈ ভ্যালি সভাপতি ধনা বাউরী প্রমুখ।
পাত্রখোলা চা বাগান এর স্থায়ী ১৮৬৮ ও অস্থায়ী ২শত জন, মাধবপুর চা বাগান ও এর ফাঁড়ি পদ্মছড়া চা বাগানের স্থায়ী ১১৭৪ ও অস্থায়ী ১শত জন, মদনমোহনপুর চা বাগানের স্থায়ী ৪৭০ ও অস্থায়ী ১শত জন, কুরমা ও এর ফাঁড়ি বাঘাছড়া চা বাগানের স্থায়ী ১৪১১ ও অস্থায়ী ১শত জন, এবং চাম্পারায় চা বাগানের স্থায়ী ১১০৯ ও অস্থায়ী ১শত জন নারী-পুরুষ চা শ্রমিকদের মধ্যে এই চাল বিতরণ করা হয়।
এদিকে ভরা মৌসুমে এসে চা শ্রমিকরা চা পাতা চয়ন না করায় চা উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। এতে করে ন্যাশনাল টি কোম্পানির ফাঁড়িসহ ১৬টি চা বাগান মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। ভরা মৌসুমে চা বাগান গুলো বন্ধের কারণে কোটি কোটি টাকা লোকসান মুখে পড়ছে ন্যশনাল টি কোম্পানি। এটা এখন কোম্পানির জন্য মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা এর মত হয়ে দাড়িয়েছে। সরকার যদি দ্রুত কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করে তাহলে চা শিল্প ধ্বংসের দিকে ধাবিত হতে পারে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চা বাগানের কর্তৃপক্ষের অনেকেই জানিয়েছেন। বাগান বন্ধ থাকার পরও শ্রমিকদের সপ্তাহিক রেশন দিচ্ছে কোম্পানি।