আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি: আমতলী উপজেলার খুড়িয়ার খেয়াঘাট বাজারে সদর ইউনিয়ন বিএনপি কার্যালয়ে হামলা ও ভাংচুর করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। একই সঙ্গে সাবেক রাষ্টপতি স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমান, দেশনেত্রী খালেদা জিয়া ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি ছিড়ে ফেলেছে। এতে বাঁধা দেয়ায় হেলমেট পরিহিত মুখোশধারী সস্ত্রাসীরা ইউনিয়ন যুবদল সদস্য মোঃ খোকন হাওলাদারকে কুপিয়ে এবং শ্রমিকদল সদস্য রাসেলকে পিটিয়ে জখম করেছে। পরে তাদের বহনকারী মোটরসাইকেল পুড়িয়ে ফেলেছে সন্ত্রাসীরা। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার রাতে খুড়িয়ার খেয়াঘাট বাজারে।
আমতলী উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি জালাল উদ্দিন ফকির অভিযোগ করে বলেন, উপজেলা আওয়ামীলীগ সহ-সভাপতি মোঃ মোতাহার উদ্দিন মৃধা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক চাওড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আখতারুজ্জামান বাদল খাঁন, উপজেলা আওয়ামীলীগ সদস্য জহিরুল ইসলাম খোকন মৃধা ও সাবেক কাষ্টমস কর্মকর্তা নুরুল ইসলামের নির্দেশে হেলমেট পরিহিত ৪০/৫০ জনের সন্ত্রাসী বাহিনী বিএনপি কার্যালয়ে হামলা ও ভাংচুর করেছে। তিনি আরো বলেন, ভাংচুরে বাধা দেয়ায় যুবদল নেতা খোকন হাওলাদারকে কুপিয়ে এবং শ্রমিকদল নেতা রাসেলকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করেছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
জানা গেছে, গত ৫ আগষ্ট ফ্যাসিষ্ট শেখ হাসিনার পতনের পরে আমতলী সদর ইউনিয়ন বিএনপির নেতাকর্মীরা খুড়িয়ার খেয়াঘাট বাজারে বিএনপির কার্যালয় উদ্বোধন করেন। অভিযোগ রয়েছে ওই কার্যালয় উদ্বোধনের পর থেকেই উপজেলা আওয়ামীলীগ সহ-সভাপতি, সদর ইউপি সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ মোতাহার উদ্দিন মৃধা ও তার ভাই উপজেলা আওয়ামীলীগ সদস্য জহিরুল ইসলাম খোকন মৃধা বিএনপি কার্যালয় হামলার পরিকল্পনা করেছে এমন অভিযোগ উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক আমিনুল ইসলাম মৃধার।
মঙ্গলবার গভীর রাতে উপজেলা আওয়ামীলীগ সহ-সভাপতি মোঃ মোতাহার উদ্দিন মৃধা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক চাওড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আখতারুজ্জামান বাদল খাঁন, উপজেলা আওয়ামীলীগ সদস্য জহিরুল ইসলাম খোকন মৃধা ও সাবেক কাষ্টমস কর্মকর্তা নুরুল ইসলামের নির্দেশে হেলমেট পরিহিত ৪০/৫০ জনের সন্ত্রাসী বাহিনী বিএনপি কার্যালয়ে হামলা ও ভাংচুর চালায়। ওই সময়ে ফকিরবাড়ী স্ট্যান্ড থেকে আসা সদর ইউনিয়ন যুবদল সদস্য খোকন হাওলাদার ও শ্রমিক দল সদস্য রাসেল হামলা ও ভাংচুরে বাঁধা দেয়। এতে সন্ত্রাসীরা ক্ষুব্দ হয়ে খোকন হাওলাদারকে কুপিয়ে এবং রাসেলকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। পরে তাদের বহনকারী মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়। খবর পেয়ে স্থানীয়রা তাদের রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। ওই হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ তানভীর শাহারিয়ার গুরুতর আহত খোকন হাওলাদারকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরণ করেছেন। এ ঘটনার মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি জালাল উদ্দিন ফকির।
আমতলী উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক মোঃ জহিরুল ইসলাম মামুন বলেন, আওয়ামীলীগ সন্ত্রাসীরা বিএনপি কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্টপতি স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমান, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছবি ছিড়ে ফেলেছে। আওয়ামী সন্ত্রাসীদের এমন ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। পুলিশ প্রশাসনকে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানান তিনি।
আমতলী উপজেলা আওয়ামীলীগ সহ—সভাপতি, সদর ইউপি সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ মোতাহার উদ্দিন মৃধা বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা ঘটনা ঘটিয়ে আওয়ামীলীগ নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করতে এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
এ বিষয়ে সাবেক কাষ্টমস কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ মিথ্যা। আমি গতকাল ঢাকায় কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ—সভাপতি, সাবেক সাংসদ নুরুল ইসলাম মনিরের চেম্বারে উপস্থিত ছিলাম।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাঃ তানভীর শাহারিয়ার বলেন, আহত খোকন হাওলাদারকে যথাযথ চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অপর আহত রাসেলকে আমতলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আমতলী থানার ওসি মোঃ আরিফুর রহমান আরিফ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।