মো: জুয়েল রানা, তিতাস প্রতিনিধি: কুমিল্লার তিতাস উপজেলার সদর কড়িকান্দি ইউনিয়নের একলারামপুর বাইতুর রাসুল(সাঃ) মাদ্রাসা এন্ড স্কুলের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. তৌহিদের(১১) টেষ্টারের আঘাতে আহত হেফজখানার শিক্ষার্থী মো. আকিব (১০) চিকিৎসাধিন অবস্থায় শনিবার (২৩ নভেম্বর) ঢাকা একটি প্রাইভেট হাসপাতালে মারা গেছেন। নিহত আকিব উপজেলার তেতুইয়ারামপুর গ্রামের নুরুজ্জামানের ছেলে।
নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার বিকালে মাদ্রাসার প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী তৌহিদ ও দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী নাহিদ দুষ্টমি করে এক পর্যায়ে তৌহিদ টেষ্টার দিয়ে নাহিদকে ডিল মারলে ঐ ডিল আকিবের মাথার পিছনে লেগে গুরুতর আহত হলে মাদ্রাসার শিক্ষক আবু সাঈদ তাৎক্ষণিক তিতাস উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা পাঠান। কিন্তু আহত আকিবকে মাদ্রাসা কতৃপক্ষের ঢাকা না নিয়ে তিতাসের লাইফ কেয়ার হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে আবার মাদ্রাসায় নিয়ে আসে। রাত নয়টায় আহত আকিবের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে দাউদকান্দির গৌরীপুর গ্রীনলাইফ হাসপাতালে নিয়ে গেলে ঐখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক ঢাকা নিয়ে যেতে বললে ঢাকা নিয়ে একটি প্রাইভেট হাসপাতালে দুই দিন চিকিৎসারত অবস্থায় শনিবার (২৩ নভেম্বর) সকালে আকিব মৃত্যু বরণ করেন।
নিহতের মা শাহিদা বলেন, আমার দুই ছেলে, স্বামী নেই, আমার বড় ছেলেকে এক সপ্তাহ হয় এই মাদ্রাসায় ভর্তি করিয়েছি। আমি মানুষের কাজ করে ছেলেদের লেখা পড়া করাই। বৃহস্পতিবার বিকালে আমি বাসায় আসার পথে ছোট ছেলেকে আনতে গিয়ে জানতে পাই আমার বড় ছেলেকে কে বা কারা মেরেছে, তখন আমি ছেলে বাড়িতে নিয়ে আসতে চাইলে হুজুর আমার ছেলেকে দেয়নাই। রাত নয়টায় আমাকে ফোন দিয়ে বলেন তারাতাড়ি মাদ্রাসায় আসেন আমি গিয়ে দেখি আমার আকিবকে গৌরীপুর নিয়ে গেছে। সেখানে গিয়ে জানতে পাই ঢাকা নিয়ে যেতে হবে। তখন হুজুরের সাথে আমিও ছেলেকে নিয়ে ঢাকা যাই এবং আইসিইউতে দুই রাখার পর শনিবার সকালে আমার ছেলে মারা যায়। আমি আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই।
মাদ্রাসার শিক্ষক মো. আবু সাঈদ বলেন, তৌহিদ ও নাহিদ দুষ্টমি করছিল, এসময় তৌহিদ নাহিদকে টেষ্টার দিয়ে ডিল মারলে ঐ ডিল আকিবের মাথায় লাগে। আমি তাৎক্ষণিক আকিবকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করিয়ে মাদ্রাসায় রাখি, পরে আবার রাত নয়টায় আকিবের অবস্থা অবনতি হলে গৌরীপুর গ্রীনলাইফ হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ঢাকা পাঠায়। চিকিৎসাধিন অবস্থায় আকিব শনিবার মৃত্যুবরণ করেন।
এদিকে উভয় পক্ষ গ্রাম্য শালিসি বৈঠকের মাধ্যমে অভিযুক্ত তৌহিদের দুই লাখ ও মাদ্রাসা কতৃপক্ষের এক লাখ টাকা জরিমানা করে মিমাংসা করা হয়।