ঢাকা
২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
রাত ৮:৪৯
logo
প্রকাশিত : নভেম্বর ২৫, ২০২৪

যশোরের রাস্তায় রাস্তায় শীতের পিঠা

যশোর প্রতিনিধি: চলছে অগ্রহায়ণ মাস। হেমন্তকালের দ্বিতীয় মাস। ক্যালেন্ডারের পাতায় শীতকাল না এলেও হিম হাওয়া জানান দিচ্ছে শীতের আগমনি বার্তা। এতেই যশোর শহরের অলিগলির রাস্তায় দেখা মিলছে শীতের পিঠার দোকান। যশোরের বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার অলিগলিতে ও বিভিন্ন সড়কে ভ্যানে চুলা বসিয়ে, আবার কোথাও অস্থায়ী দোকান বসিয়েও বিক্রি হচ্ছে শীতের পিঠা। ব্যস্ত এই শহরে চলতি পথে কর্মজীবীরা থেকে নানা ধরেনের মানুষ সেখান থেকে পিঠা কিনে খাচ্ছেন, আবার কেউ কিনে বাসায় নিয়ে যাচ্ছেন।

এদিকে পিঠা বিক্রি করতে মৌসুমি বিক্রেতাদেরও আগমন ঘটেছে এই শহরে। রাস্তার পাশে খোলা আকাশের নীচে চুলা নিয়ে বসছেন পিঠা তৈরি ও বিক্রি করতে। অনেকে অস্থায়ীভাবে তৈরি করে নিয়েছেন খুপড়ি ঘরও। এসব দোকানে চিতই এবং ভাপা পিঠা বিক্রি চলছে। অন্যান্যবারের তুলনায় এবার শীতকালীন পিঠার দাম একটু বেশি বলে অভিযোগ ক্রেতাদের। তারা জানিয়েছেন, ৫ টাকায় কোনো পিঠা এখন আর নেই, গত বছরের মতো একই সাইজের পিঠার দাম এখন ১০ টাকা। এটিই সর্বনিম্ন দামের পিঠা।

বিক্রেতারা বলছেন, সাইজে কমলেও বর্তমান বাজারমূল্যে ১০ টাকার নিচে পিঠা বিক্রি করার সুযোগই নেই। আমরা কয়েক বছর আগে এই পিঠা ৫ টাকায় বিক্রি করেছি।
বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত যশোর শহরের বিভিন্ন সড়ক এবং জনবহুল এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে ভাপা ধুপি পিঠার পাশাপাশি গরম গরম ধোঁয়া ওঠা চিতই পিঠার জন্য রীতিমতো অপেক্ষা করতে হচ্ছে ক্রেতাদের। সিরিয়ালি ক্রেতাদের পছন্দ অনুসারে খেজুরের গুড়, নারকেল ও বিভিন্ন ভর্তা এবং মশলা দিয়ে ক্রেতাদের পিঠা সরবরাহ করছেন বিক্রেতারা।

যশোরের ব্যস্ততম সড়ক ঈদগাহ মোড়ের পিঠা ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান জানান, গত চার বছর ধরে তিনি শীতের সন্ধ্যায় বিক্রি পিঠা করছেন। শীত বাড়লে সকালেও বিক্রি শুরু করবেন। কিসমত নওয়াপাড়ার বাসিন্দা টুম্পা ধুপি পিঠা বিক্রি করছেন প্যারিস রোডে। তিনি জানান, গত মৌসুমেও তিনি প্রতিদিন প্রায় দেড় থেকে দুই হাজার টাকার মতো পিঠা বিক্রি করেন। এতে ভালো লাভ হলেও এবার দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে লাভের ব্যাপারে সন্দিহান তিনি। চুয়াডাঙ্গা বাসষ্ঠান্ডে কাজীপাড়ার মমতাজ বেগম চিতই পিঠা বিক্রি করেন। প্রতিটি পিঠা ১০ টাকা বিক্রি করে নামে মাত্র মুনাফা থাকছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এবার চালের দামসহ অন্যান্য সামগ্রীর দাম বেশি। দাম বেশি হওয়ায় পিঠা কেনার ক্রেতা কম।

প্যারিস রোড পিঠা কিনতে আসা আব্দুর রাজ্জাক কলেজের শিক্ষার্থী তৌফিকুর রহমান জানান, মেসে থাকার কারণে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও বিভিন্ন খাবার খেতে পারেন না তারা। এসব দোকান থেকে সাধ্যের মধ্যে যে যার ইচ্ছেমতো পিঠা খেতে পারেন। প্রায়ই তারা বন্ধুরা মিলে আড্ডা দেওয়ার পাশাপাশি এখানে এসে পিঠা খান বলে জানান তিনি।
রূপন্তি নামের একজন গৃহবধু জানান, প্রায়ই স্বামী সন্তান নিয়ে ঘুরতে বের হন তিনি। বাড়িতে গ্যাস কিংবা ইলেকট্রিক চুলাতে পিঠা বানানো ভালো হয় না। এজন্য শীতের পিঠার স্বাদ নিতে প্রায়ই এরকম দোকানে আসেন। একটু ভিন্ন শীতের আমেজ নিতে।

চুয়াডাঙ্গা বাসষ্ট্যান্ডে পিঠা খেতে খেতে কথা হয় জাহিদুল ইসলাম নামের এক ক্রেতার সঙ্গে। তিনি বলেন, বছর ৪/৫ আগেও ভাপা পিঠা পাওয়া যেতে ৫ টাকায়। দুইটা খেলেই পেট ভরে যেত। তারও আগে ২ টাকায় যে সাইজের পিঠা পাওয়া যেতে এখন সেই পিঠার দাম ১০ টাকা। মানে এখন পিঠা খেয়ে মন ভরতে অন্তত ৩০ টাকা খরচ করতে হবে। শুধু পিঠা না, যেটাই খেতে যান ১০ টাকার নিচে কিছুই পাওয়া যায় না। তবে ব্যস্ত শহরে যে এমনভাবে পিঠা পওয়া যাচ্ছে তাই অনেক। ছোট বেলার কথা মনে করিয়ে দেয়।

বাহাউদ্দিন আহমেদ নামের আরেক ক্রেতা বলেন, পিঠা তো একটা আবেগের বিষয়। যখন বাড়িতে থাকতাম, তখন দাদি-নানি পিঠা বানিয়ে খাওয়াতো। তারপর মা বানিয়ে খাইয়েছেন। এখন শহরে চাকুরি জীবনে পিঠা বানিয়ে খাওয়ানোর মতো সুযোগ সবার হয় না। ফলে মৌসুমি এই পিঠাগুলো দেখলেই পুরোনো কথা মনে পড়ে যায়। খুব ভালো হোক বা না হোক, একটু খাওয়ার চেষ্টা করি।

শুধু যশোর শহরের মধ্যেই না আশেপাশের বিভিন্ন মফস্বল এরিয়াতেও মৌসুমি পিঠার দোকানগুলো বসেছে। সেখানে শুধু ভাপা, চিতই ও তেলে পিঠা নয়, আরও বাহারি পিঠার আয়োজন রয়েছে। সাইজ ও উপকরণ ভেদে এক একটি পিঠার দাম ১০ টাকা থেকে ৮০ টাকার মধ্যে রয়েছে। শীত মৌসুমে যশোরজুড়ে এসব পিঠার দোকান ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে।

logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ তাপস রায় সরকার
মোবাইল: +৮৮০ ১৭৩৬ ৭৮৬৯১৫
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1736 786915, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2024 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram