ঢাকা
৫ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
রাত ১:০২
logo
প্রকাশিত : ডিসেম্বর ১, ২০২৪

কুমিল্লায় ওএমএস লাইনে মধ্যবিত্তরাও, কার্যক্রমের পরিধি বাড়ানোর দাবি

শাহাজাদা এমরান, কুমিল্লা: সরকারের খোলা বাজারে বিক্রির কার্যক্রম সমাজের দরিদ্র মানুষের জন্য হলেও কুমিল্লায় সেই লাইনে মধ্যবিত্তরাও এসে দাঁড়াচ্ছেন। কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের বাসিন্দারা বলছেন, খোলা বাজারে বিক্রির (ওএমএস) জন্য যে পরিমাণ চাল-আটা সরবরাহ করা হচ্ছে, তা চাহিদার তুলনায় খুবই অপ্রতুল। কুমিল্লা নগরীতে ভোটার সংখ্যা দুই লাখ ৪২ হাজারের বেশি হলেও বাস্তবে প্রায় ১০ লাখ মানুষের বসবাস। বিশাল এই জনসংখ্যার বড় অংশই নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির। নগরীর ২৭ ওয়ার্ডের মাত্র ২২টি স্থানে চলছে ওএমএস কার্যক্রম। প্রতি ডিলার শুক্র ও শনিবারসহ সরকারি ছুটির দিন ছাড়া প্রতিদিন এক টন চাল ও দেড় টন আটা বিক্রি করতে পারেন। একজন মানুষ সর্বোচ্চ ৩০ টাকা কেজি দরে পাঁচ কেজি চাল ও ২৪ টাকা কেজিতে পাঁচ কেজি আটা কিনতে পারেন। সে হিসাবে, নগরীতে প্রতিদিন সর্বোচ্চ সাড়ে পাঁচ হাজার মানুষ ওএমএস সুবিধা পাচ্ছেন।

রবিবার সকাল ৯টার দিকে নগরীর দুই নম্বর ওয়ার্ডের ছোটরা এলাকায় লাইনে দাঁড়ানো একজন বলছিলেন, “এতে চাহিদার সিকিভাগও পূরণ হচ্ছে না। অনেক সময় কিছু অসাধু ডিলার বরাদ্দের একটি অংশ কালোবাজারে বিক্রি করে দিলে মানুষের প্রাপ্তির সংখ্যা আরও কমে যায়।” একই দিন মগবাজার চৌমুহনী এলাকার ভাড়াটিয়া শিরিন আক্তার নামে এক নারী বলেন, “আমার স্বামী একটি কোম্পানিতে চাকরি করে। বাজারে জিনিসপত্রের প্রচুর দাম। বাধ্য হয়ে এখানে লাইনে দাঁড়িয়ে চাল ও আটা কিনছি। তবে এই কার্যক্রমের যোগান না বাড়ালে মানুষের হাহাকার কমবে না।”

এ প্রসঙ্গে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক নিত্যানন্দ কুন্ডু বলেন, “শুধু কুমিল্লা সিটি করপোরেশন এলাকায় বর্তমানে ২২ জন ডিলারের মাধ্যমে সঠিকভাবে চাল-আটা বিক্রি কার্যক্রম চলছে। আমরা প্রতিদিনই বিষয়টি তদারকি করছি। “আর কার্যক্রমের পরিধি বাড়াতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। নতুন নীতিমালা অনুযায়ী, আগের ডিলারদের বাদ দিয়ে নতুন ডিলার নিয়োগের প্রক্রিয়া চলছে।”

সম্প্রতি দুই নম্বর ওয়ার্ডের ছোটরা এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, নিয়োগপ্রাপ্ত ডিলার আরিফ খান নির্দিষ্ট পয়েন্টে ওএমএস এর চাল ও আটা বিক্রি করছেন। সেখানে অর্ধশতাধিক লোকের জটলা। যাদের বেশিরভাগই মধ্যবিত্ত শ্রেণির। ১২০ টাকায় পাঁচ কেজি আটা ও ১৫০ টাকায় পাঁচ কেজি চাল বিক্রি হচ্ছে। ডিলার আরিফ খান বলেন, “দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা এখন দিশেহারা। যার কারণে মধ্যবিত্তরাও এখন নিয়মিত আসছেন। চালের চেয়েও আটার চাহিদা বেশি। সকাল ৯টায় বিক্রি শুরুর পর এভাবে ভিড় লেগেই থাকে। দুপুরের মধ্যে শেষ হয়ে যায়। “মানুষের চাহিদা অনেক, কিন্তু আমরা যতক্ষণ আছে, ততক্ষণই দিতে পারি। এই কার্যক্রমের পরিধি বাড়ানো জরুরি।”

সেখানেই কথা হয়, নগরীর বিষ্ণুপুর এলাকার বাসিন্দা আবিদ হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলছিলেন, “আজকে চাল আর আটা কিনছি। আবার কালকে আইলে দিব না। তিন-চারদিন পর আওন লাগব। অনেক মাইনসে আইয়া পায় না। আমরা গরিব মানুষ, তাও কম দামে চাউল-আটা দেওনে খাইয়া বাঁচতাছি।”

নগরীর ১ নম্বর ওয়ার্ডের মগবাড়ি এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, ডিলার আবুল কালামের নির্ধারিত বিক্রির স্থানে মানুষের জটলা। এখানে মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের সংখ্যা চোখে পড়ার মত। আবুল কালামও মনে করেন, নগরীর জনসংখ্যার হারে ওএমএস কার্যক্রমের পরিধি দ্রুত বাড়ানো দরকার।

সম্প্রতি সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত নগরীর অন্তত ১০টি পয়েন্ট ঘুরে দেখা গেছে, ওএমএস এর চাল ও আটার জন্য মানুষ ভিড় করছেন। বিশেষ করে নগরীর ১০ নম্বর ওয়ার্ডের তালপুকুর পাড়, ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের ডুলিপাড়া, ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের ছোট ধর্মপুর এলাকায় মানুষের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মত।

নগরীর ৭ নম্বর ওয়ার্ডের অশোকতলা এলাকার বাসিন্দা গৃহিণী কামরুন নাহার বলেন, “আমাদের এলাকায় ২০২২ সাল পর্যন্ত ওএমএস কার্যক্রম ছিল। পরবর্তীতে কাউন্সিলরের রাজনৈতিক দ্বন্দ্বে এটি বন্ধ হয়ে যায়। আমরা এই ওয়ার্ডে পুনরায় ওএমএস কার্যক্রম চালুর দাবি জানাচ্ছি। এলাকার মানুষ অনেক কষ্টে আছে।”

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক নিত্যানন্দ কুন্ডু বলেন, জেলার ১৭টি উপজেলার মধ্যে দাউদকান্দি ও চান্দিনা বাদে ১৫টি উপজেলায় বন্যা পরবর্তীতে বিশেষ ওএমএস কার্যক্রম ৪১ জন ডিলারের মাধ্যমে চলছে। এসব ডিলাররা ছুটির দিন ব্যতীত প্রতিদিন এক টন চাল এবং এক টন আটা একইভাবে তিন মাস বিক্রি করবেন। এরই মধ্যে বিশেষ কর্মসূচির দুই মাসের বরাদ্দ পাওয়া গেছে বলে জানান জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক।

সর্বশেষ
logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ তাপস রায় সরকার
মোবাইল: +৮৮০ ১৭৩৬ ৭৮৬৯১৫
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1736 786915, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2024 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram